বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের প্ররোচনায় অশাান্ত মিজোরাম-আসাম সীমান্ত?

0
735

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- সীমান্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে অসম মিজোরাম সীমান্তে।গত শনিবার দুই রাজ্যের সীমান্তে বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক সংঘর্ষ। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় শান্তি ফেরাতে দ্রুত কেন্দ্রের কাছে দ্বারস্থ হয়েছে দুই রাজ্য‌ই। শনিবার সন্ধ্যায় আসামের কাছাড় জেলার লায়লাপুর এলাকায় দ্রুত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে বেশকিছু বাড়িতে আগুন ধরে যায়। বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

এই মুহূর্তে উত্তপ্ত এলাকায় প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা রয়েছে। মিজোরামের কলাসিব জেলার ভাইরাংটে গ্রাম ও অসমের কাছাড় জেলার লাইলাপুর এলাকায় এই নিরাপত্তারক্ষীদের মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে মিজোরামের দিকে যাওয়ার রাস্তায় কয়েকশো ট্রাক এই মুহূর্তে সীমান্ত এলাকায় আটকে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, লায়লাপুরের গ্রামবাসীরা পণ্যবাহী ট্রাক ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠলে খাবার-দাবার ওষুধ রান্নার গ্যাস ও পেট্রোল ডিজেলের অভাব দেখা যাবে মিজোরামে।

সূত্রের খবর, গণ্ডগোলের সূত্রপাত ঘটে গত শনিবার। অসমের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন তাদের দিকে মিজোরাম সরকার একটি Covid-19 নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি করেছে। মিজোরামের দিকে যেসব ট্রাকচালকরা যাচ্ছে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে সেখানে। অসম সরকারকে না জানিয়েই পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি হয়েছে এবং যাত্রীদের টেস্ট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

এর জেরেই লায়লাপুরের বেশকিছু বাসিন্দা লাঠিসোটা হাতে নিয়ে সেখানে হামলা চালায়। উল্টোদিক থেকে মিজোরামের কিছু যুবক এসে লায়লাপুরের ১৫টি দোকানসহ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি এমন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সংঘাত পাশের করিমগঞ্জ জেলাতেও ছড়িয়ে যায়। বাধ্য হয়ে নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করতে হয় দুই রাজ্যে।

মিজো বিধায়ক দাবি করেছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই সীমান্তে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। স্থানীয় প্রশাসন সে বিষয়ে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা‌ও করেছিলেন। তিনি আরও দাবি করেছেন সীমান্ত অঞ্চলে অবৈধ বাংলাদেশীর পরিমমাণ ৮০ শতাংশেরও বেশি। তাই এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের পিছনে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশের মদত রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন।

রবিবার পরিস্থিতি সচল করতে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর জোরামথাঙ্গা অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোন‌ওয়ালের সঙ্গে কথা বলেন। এই বিষয়ে জোরামথাঙ্গা আশ্বাস দিয়েছেন আলোচনার মাধ্যমেই সীমান্তে শান্তি ফেরানো হবে দুই রাজ্যে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী দপ্তর ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকেও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছেন অসীম সরকার। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে সোমবারই তড়িঘড়ি দুই রাজ্যের মুখ্যসচিবদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় কুমার ভল্লা।

মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ চলে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। আলোচনায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী সীমান্ত এলাকায় শান্তি ফেরাতে যৌথ উদ্যোগের কথা বলেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যে এলাকাগুলিতে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে সেখানে বিশাল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।