বঙ্গদেশ ডেস্ক:২৭শে মার্চ বাঙ্গালী হিন্দু গণহত্যা স্মরণ দিবসে কলকাতায় ‘বাংলাদেশ ফাইলস’-এর প্রদর্শনী বাতিল হলেও নিউ ইয়র্কে প্রবাসী বাঙ্গালীরা দিনটি স্মরণ করেছেন। কুইন্সের এস্টরিয়া পার্কে একটি অনুষ্ঠানে মোমবাতি জ্বালিয়ে তারা স্মরণ করেন দিনটিকে। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন করেন ঋতু রায়। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি, প্রবীণ সাংবাদিক এবং লেখক সীতাংশু গুহ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।
উপস্থিত সকলের বক্তব্য ছিল, ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ মধ্যরাতের পর ঢাকা রেস কোর্সের মাঝখানে অবস্থিত রমনা কালি মন্দির ও তৎসংলগ্ন মা আনন্দময়ী আশ্রমে নির্যাতন-গণহত্যা এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় পাক হানাদার বাহিনী দ্বারা। এতে নিহত হন দুই থেকে তিন শত নিরপরাধ বাঙ্গালী হিন্দু। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সম্পূর্ণ চত্বরটিকে সোহরাবর্দী উদ্যান হিসেবে নামকরণ করা হয়। ১৯৭১-এ নয় মাস ব্যাপী গণহত্যায় নিহত হন আনুমানিক ২৪ লক্ষ বাঙ্গালী হিন্দু।
এছাড়াও, উপস্থিত সকলের সম্মিলিত বক্তব্য ছিল, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর দিনের পর দিন যে অত্যাচার হচ্ছে সে বিষয়ে যেন প্রশাসন নজর দেয়। গতবছর দুর্গাপুজোয় মূর্তি ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর যে জঘন্যতম ও পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছিল সেই ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে দিকেও প্রশাসনকে সজাগ হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
২৭শে মার্চ ১৯৭১-এর রমনা গণহত্যাকাণ্ডকে ১৯৭১-এর সার্বিক বাঙ্গালী হিন্দু গণহত্যার প্রতীকী ঘটনা ধরে বিগত দু’বছর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে ২৭শে মার্চ ‘বাঙ্গালী হিন্দু গণহত্যা স্মরণ দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২০২০-তে অতিমারীর কারণে দিনটির উদযাপন ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় সীমাবদ্ধ। গত বছর, ১৯৭১-এর গণহত্যার ৫০ বছর পূর্তিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলেন করে ১৯৭১-এর গণহত্যাকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ‘বাঙ্গালী হিন্দু গণহত্যা’ বলে ঘোষণা করে ‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য’। কিন্তু এই প্রথম নিউ ইয়র্কে প্রবাসী বাঙ্গালীরা ২৭শে মার্চ ‘বাঙ্গালী হিন্দু গণহত্যা স্মরণ দিবস’ পালন করলেন।