ফ্রান্সের সমর্থনে মন্তব্যের জেরে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিলো মুসলিমরা।

0
1891

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- ফেসবুকে ফ্রান্সের সমর্থনে কমেন্টের জের ধরে কুমিল্লায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর ভাঙচুর,অগ্নিসংযোগ ও লুট করেছে স্থানীয় মুসলিমরা। রবিবার (১ নভেম্বর) বিকালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা থানার ৪নং পূর্ব ধইর ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। এর প্রভাবে স্থানীয় হিন্দু পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আজিমুল আহসান।

এছাড়াও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বনকুমার শিব হিন্দু হওয়ায় তার অফিসও জ্বালিয়ে দিয়েছে স্থানীয় মুসলিমরা। প্রায় ১০-১২ টি হিন্দু পরিবারের বসতবাড়ীতে হামলা, ভাঙচুর ও লুট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সবকটি বাড়িই আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। মুহূর্তের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়িঘর ভাঙচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের ছবি ও ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বাঙ্গারা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে যায় বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে সম্পূর্ণ ধ্বংসযজ্ঞ সম্পন্ন হয়ে যায়। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন যান।

ঢাকা ট্রিবিউন সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৩১ অক্টোবর) কোরবানপুরের শংকর দেবনাথ ও কৃষাণ দেবনাথের ফ্রান্সকে সমর্থন করে ফেসবুকে মন্তব্য করা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনায় জড়িত ঐ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। রবিবার পুলিশ অভিযুক্তসহ দুজনকে গ্রেফতার করে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে । মামলার আসামি মুরাদনগর উপজেলার ছেলে।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আজিমুল আহসান জানান, ওই ঘটনার রেশ ধরে রবিবার বিকালে কোরবানপুরের স্থানীয় একদল বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বনকুমার শিবের অফিস, গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুট করে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অভিযোগ,সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণ মনেপ্রাণে পাকিস্তানকে সমর্থন করলেও সেটা নিয়ে সেখানকার সরকার বা প্রগতিশীল সমাজে কারও কোন মাথাব্যথা হয় না। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ এভাবে সামান্য কোন দেশের প্রতি সমর্থন জানালে গোটা সম্প্রদায়কে এভাবেই নির্যাতনের মাধ্যমে শিক্ষা দেয় বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলিম সম্প্রদায়, যেন এই হিন্দুরা গণিমতের মাল এবং তাদের সাথে যা ইচ্ছা করা যায়! সূত্রের খবর, শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই নবী ও ইসলামকে নিয়ে কটূক্তির মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোট ছয়জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে যদিও বাস্তবে দেখা গিয়েছে অভিযোগের সত্যতা বলতে কিছুই নেই! এই অভিযোগগুলো সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায় কর্তৃক হিন্দু নির্যাতনের আধুনিকায়িত অস্ত্র মাত্র! এমন ঘটনা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে আগামী চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পূর্ণ হিন্দুশূন্য হয়ে যাবে এবং খাতা কলমের বাইরেও বাস্তবিকভাবেই বাংলাদেশ একটি সম্পূর্ণ ইসলামিক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে যা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি!