হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে সোচ্চার হলেও নিজের দলের তানভীর খানের বিরুদ্ধে চুপ অখিলেশ যাদব

0
499

বঙ্গদেশ ডেস্ক: অপ‌ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার সমাজবাদী পার্টির জেলা প্রধান তানভীর খান সহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, শাহজাহানপুর কোতয়ালীতে একটি দলিত মহিলাকে ডাকাতি ও যৌন নির্যাতনে জড়িত ছিল এই তিনজন। হিন্দু যুব বাহিনীর সদস্যরা এসএসপি অফিস ও থানায় ব্যাপক বিক্ষোভের পরে এই রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নির্যাতিতার ভাইয়ের অভিযোগ, তানভীর খান তার বোনকে জোর করে ৩৮ বছর বয়সী তার এক নিকট আত্মীয়কে বিয়ে করতে বাধ্য করেছিল। এরপর ক্রমাগত তাকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দিতে থাকে তানভির খান।টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আইপিসির ৩৫৪,৩৭৯,৩৯৩,৫০৪এবং ৫০৬ ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও তফসিলি জাতি ও উপজাতির আইন মোতাবেক দুর্গেশ সাক্সেনা, কাফিল আহমেদ, বৈশালী সাক্সেনা এবং তানভীর খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মিডিয়ায় পাতায় চোখ রাখলে দেখা যাবে, হাথরাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আগুন জ্বলছে। সেই সময় শাহজাহানপুরের এই ঘটনা ওই জ্বলন্ত আগুনে ঘৃতাহুতি ঘটিয়েছে।

ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশে হেভিওয়েট রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হাথরাসের ঘটনা নিয়ে ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে সেই সময় সমাজবাদী পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতার দ্বারা যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি শোরগোল ফেলে দিয়েছে। হাথরাসের ঘটনায় কিছু জন সাংবাদিক দাবি করছেন পুলিশ জোরপূর্বক ভিকটিম মেয়েটির দেহ পুড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু প্রশাসনের দিক থেকে বলা হয়েছে ভিকটিমের দেহ যখন দাহ করা হয় তখন সেখানে তার বাবা উপস্থিত ছিল।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভিকটিম মেয়েটি মারা যাওয়ার পর থেকে হারথাস মামলা নিয়ে চারদিকে প্রচুর তর্কবিতর্ক বিতর্ক এবং রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছিল মেয়েটির জিভ কেটে নেওয়া হয়েছে এবং মেরুদণ্ডে জোর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। কিন্তু মেয়েটি পরে পুলিশকে জানিয়েছে তাকে গ্যাং রেপ করা হয়েছিল। তবে ইউপি পুলিশ যে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পেশ করেছে সেখানে ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের চিহ্ন বা এমন কোনো আঘাতের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এডিজি প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন যে ভিক্টিমের শরীর থেকে সংগ্রহ করা নমুনাগুলির ফরেনসিক ল্যাব রিপোর্টে ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের চিহ্ন মেলেনি।

তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশের দাবি ও ফরেনসিক রিপোর্টকে অগ্রাহ্য করে অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়তে শুরু করেছে, তাদের একটাই উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ফায়দা লাভ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য মাথায় রেখেই ক্রমাগত যোগী সরকার এবং সরকার আশ্রিত পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা হচ্ছে। হাথরাসে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে তা সত্ত্বেও অখিলেশ যাদব ও তাঁর দলের ছেলেরা গ্রামের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করে।কয়েক দিন আগে অখিলেশ যাদব একটি টুইটও পোস্ট করেছিলেন যেখানে অভিযোগ করেছিলেন যে হাতরাসের দলিত মেয়েটির উপর যে বর্বরতা দেখানো হয়েছে তার প্রতি রাজ্য সরকার বিন্দুমাত্র সংবেদনশীল নয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অখিলেশ যাদব হাথরাসের ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হলেও তাঁর দলের কর্মী তানভীর খানের বিরুদ্ধে নিন্দা দূরে থাক একটি টুঁ শব্দও করেননি। এমনকি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করেননি। দু’টি ঘটনায় অখিলেশ যাদবের দুরকম আচরণে এক তাৎপর্যপূর্ণ বিস্ময় তৈরি হয়েছে সকলের মধ্যে। রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষা আলোচনা শুরু করেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যেই অখিলেশ যাদব সহ বাকি রাজনৈতিক দলগুলো হাথরাস কাণ্ড নিয়ে সোচ্চার প্রতিবাদ করেছিলেন।