ইরফান হাবিবের সাথে একমত না হলেই সেই ব্যক্তিকে  ‘হিন্দুত্ববাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করা হতো

0
1470

কয়েকদিন আগে কেরালার মাননীয় রাজ্যপাল আরিফ মুহম্মদ খান কান্নুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ভাষণ দিতে উঠেছিলেন। আরিফ মুহম্মদ জানান যে পূর্ববর্তী বক্তারা যেভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে (সি এএ) সাম্প্রদায়িক বলছেন, তা যথার্থ নয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উপস্থিত কমরেডরা। তাঁরা বলেন যে তাঁরা মাননীয় আরিফকে বলতে দেবেন না। মাননীয় আরিফ বলেন যে তিনি পূর্ববর্তী বক্তাদের কথা চুপচাপ শুনেছেন। এখন তাঁর বলার পালা।

এবার এগিয়ে এলেন গুণ্ডাসর্দার ইরফান হাবিব। তিনি আরিফকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করলেন মঞ্চ থেকে। রাজ্য়পালের নিরাপত্তারক্ষী সে চেষ্টা ব্য়র্থ করে দিলেন।  কে কে মুহম্মদের আত্মজীবনীতে ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের সাথে প্রত্নতাত্ত্বিকের মুখোমুখি তর্কাতর্কির কয়েকটি বিবরণ দেওয়া হয়েছে এবং যা ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে উত্তরসূরিদের বীভৎস এক  ধারণার জন্ম দেয়।

কয়েক দশক আগে, আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে (এএমইউ বা Aligarh Muslim University (AMU), অধ্যাপক ইরফান হাবিব তার প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে অনুষদ সদস্য কে কে মুহাম্মদকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান।মুহাম্মদ ফতেপুর সিক্রিতে ইবাদত খানাকে আবিষ্কার করেছিলেন।  যা আনুমানিক ১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবরের দ্বারা নির্মিত, ইবাদাত খানা সেই স্থান যেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় পণ্ডিতগণ আলাপ আলোচনা যুক্তি পরামর্শ করতেন।  এটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার,  বিভিন্ন পত্রিকায় এ বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু এটি  এমন‌ই একটি বিষয় ছিল যা  অধ্যাপক হাবিব খুব একটা খুশি মনে মেনে নিতে পারেননি। এবিষয়ে দুজনের  কথোপকথনটি নীচে কিছুটা এরকম ছিল:-

ইরফান হাবিব: “এটি ইবাদাত খানা নয়।”

মুহাম্মাদ: “না?  এটা কি ইবাদাত খানা নয়? ”

ইরফান হাবিব: “আপনি টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে যেটা  দিয়েছেন সেটা ইবাদাত খানা নয়।”

মুহাম্মদ: “আপনি কিভাবে নিশ্চিতভাবে এটা বলতে পারেন? আপনি কি একজন প্রত্নতত্ত্ব বিদ?”

ইরফান হাবিব :”আমি আপনার মত ভালো প্রত্নতত্ত্ববিদ নই।”

মুহম্মদ: “দুঃখিত, আপনি  প্রত্নতত্ত্ববিদই নন।”

অধ্যাপক হাবিব চুপ করে গেছিলেন।

তিনি একটি কাগজ মুহম্মদের দিকে দিলেন এবং বললেন আমি যা বলছি লিখুন, “আপনি যা আবিষ্কার করেছেন তা ইবাদাত খানা নয়” ।  মুহম্মদ  তা লিখতে অস্বীকার করে সেই স্থান ত্যাগ করলেন।

আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (AMU) এবং ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ( the Archaeological Survey of India or ASI), উভয় জায়গার বিভিন্ন পদে  কাজ করার পরে, মুহম্মদ  মালায়ালাম ভাষায় নিয়ান ভারতীয়ন  (আমার ভারতীয়ত্ব) শিরোনামে একটি আত্মজীবনী লিখেছেন, যেখানে অধ্যাপক হাবিবের সাথে তাঁর সাক্ষাৎকারের বিবরণ রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে হ‌ওয়া চক্রান্তের বর্ণনা রয়েছে।  তাঁর শিক্ষার অংশ হিসাবে মুহম্মদ শিখেছিলেন কীভাবে একজন ঐতিহাসিক ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে যায়।

মুহম্মদ যখন ছাত্র হিসাবে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছিলেন, তখন তিনি প্রফেসর হাবিবের মতো একজন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে তাঁর শিক্ষক হিসাবে  পেয়ে প্রাথমিকভাবে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন।  তবে মুহাম্মদ পরবর্তী সময়ে তাঁর  স্মৃতিচারণা করে বলেন, “একজন শিক্ষক হিসাবে তিনি আমার উপরে কোনও প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি।” এ বিষয়ে তাঁর অন্যান্য সহপাঠীরাও সহমত পোষণ করেছিলেন।  এই খবরটি হাবিবের কান পর্যন্ত  পৌঁছে যায়। মুহম্মদ কংগ্রেসের ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিয়েছিলেন।  এই ঘটনা মার্কসবাদীরা  ভালোভাবে নেয়নি, এবং তারা তাঁকে দমন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।  এর ফলে ইরফান হাবিব গোষ্ঠী ও মুহাম্মদের মধ্যে বিভিন্ন মুখোমুখি তর্ক বিতর্ক ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  এই দ্বন্দ্বগুলির বিবরণ বইটির প্রথম কয়েকটি অধ্যায়ে রয়েছে।

মার্কসবাদীদের ক্রূর কারসাজির কারণে মুহাম্মদ একজন গবেষক হিসাবে ভর্তি হতে পারেননি এবং তাই শেষমেষ প্রত্নতত্ত্বের পথ  বেছে নিয়েছিলেন। প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা শেষ করে তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন।  তিনি অধ্যাপক হাবিবকে তাঁর পথে বাধা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান, কারণ এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রত্নতত্ত্বের দিকে  এগিয়ে গিয়েছিলেন এবং  চারিদিকে তাঁর যথেষ্ট নামডাক হয়, তিনি পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন কেবল ইবাদাত খানা আবিস্কারের জন্য নয়, তিনি একটি খ্রিস্টান চার্চ আবিষ্কার করেছিলেন যা মুঘল সম্রাট আকবর খ্রিস্টান মিশনারিদের জন্য তৈরি করেছিলেন।

মার্কসবাদীরা  একাধিক উপায়ে  শানিত আক্রমণ হেনেছিল।  প্রথমত, তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল যে আবিষ্কারটি মুহাম্মদের নয়।  তা ব্যর্থ হয়।  দ্বিতীয়ত, দাবি করেছিল যে মুহাম্মদ যদি এটি আবিষ্কার করে থাকেন তবে এটি ইবাদাত খান হতে পারে না।  এর পরে  খুব শীঘ্রই, হাবিব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় প্রধান হয়ে ওঠেন এবং পূর্বে ঘটে যাওয়া সরাসরি সংঘর্ষের বিষয় উল্লেখ করেন।

হাবিব গোষ্ঠী ক্যারিয়ারের ক্ষতি করতে পারতো।  তারা সমস্ত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের নিয়ন্ত্রক ছিল।  কারা বৃত্তি পেয়েছে বা কে গবেষক হিসাবে ভর্তি হবে সে বিষয়ে তারা হস্তক্ষেপ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারতো।  আপনি যদি তাঁর দলের অংশ না হন তবে আপনাকে “সাম্প্রদায়িক” হিসাবে চিহ্নিত হবেন।।  স্বতন্ত্র চিন্তাভাবনা ছিল অনেকটা অভিসম্পাতের মতো।  তবে আপনি যদি তাঁর দলে যোগদান করেন তবে আপনি “ধর্মনিরপেক্ষ” হিসাবে চিহ্নিত হয়ে গেছেন।

এর জন্য মুহম্মদ প্রফেসর রামচন্দ্র গৌড়ের উদাহরণ দিয়েছেন, যার সাথে তিনি একদা কাজ করেছিলেন। তিনি ছিলেন হাবিবের শত্রু,অধ্যাপক গৌড়কে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে যুক্ত (আরএসএস) একজন ব্যক্তি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।একবার তিনি বিভাগীয় প্রধান হয়েছিলেন তখন তিনি তাঁর আনুগত্য পরিবর্তন করেছিলেন এবং হাবিবের দলে যোগ দেন। প্রফেসর গৌড় মুহম্মদকে পরামর্শ হিসাবে বলেছিলেন, কর্মজীবনের অগ্রগতির জন্য হাবিবের গ্রুপে যোগদান করা ভাল ছিল। যখন প্রফেসর গৌড় হাবিব গ্রুপে যোগদান করেন, তিনি “ধর্মনিরপেক্ষ “বলে পরিচিত হয়েছিলেন। মুহম্মদ বলেছেন তিনি গৌড়কে উদাহরণ হিসাবে  অনুসরণ করতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

তিনি আরেকটি তর্কবিতর্ক উল্লেখ করেছিলেন। ব্যাপারটি সাক্ষাৎকার প্যানেলে সকলের সামনে ঘটেছিল যেখানে  অন্যান্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, উপাচার্য স্বয়ং এবং অধ্যাপক হাবিব।  সাক্ষাৎকারের সময় উপাচার্য বলেছিলেন যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অধ্যাপক হাবিবকে সম্মান করেন না এমন কাউকে তিনি বিবেচনা করতে পারবেন না।  মুহাম্মদ জবাবে বলেছিলেন যে সম্মান  অর্জন করতে নিতে হয়, জোর করে সম্মান আদায় করা যায় না।  তিনি এও উল্লেখ করেছিলেন, যে ব্যক্তি তাঁর চেয়ে কম নম্বর পেয়েছে তাকে কীভাবে গবেষক হিসাবে ভর্তি করা সম্ভবপর হয়।

আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল যখন কম নম্বর প্রাপ্ত এবং  তার পরিবর্তে অন্যকোনো স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা প্রাপ্তকে সহকারী প্রত্নতাত্ত্বিকের পদ দেওয়া হয়নি। অধ্যাপক হাবিব যে মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন তার বিরুদ্ধেও মুহাম্মদের  কাছে যথেষ্ট প্রমাণ ছিল।  মুহম্মদ এই সব বলার সময় অধ্যাপক হাবিব মাথা নিচু করে চোখ নামিয়ে বসেছিলেন।  মুহম্মদ লিখেছেন, “আমার প্রতি তার আচরণ বদল ঘটেছিল, তবে আমি নিশ্চিত ছিলাম যে সে প্রথম সুযোগেই আমাকে ছুরিকাঘাত করবে।”

মুহম্মদ লিখেছেন যে অধ্যাপক হাবিব এমন লোকদের পছন্দ করতেন যারা তাকে মক্কান লালের মতো স্তাবকতায় ভরিয়ে রাখতো।  তিনি অধ্যাপক লালকে মুহম্মদের পরিবর্তে ডেপুটি ডিরেক্টরের পদ পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।  মুহম্মদ যখন এটিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তখন অধ্যাপক লাল অধ্যাপক হাবিবের সহযোগী হয়েছিলেন।

মুহম্মদ লিখেছেন, “অসৎ আঁতাত সবসময় স্বল্পস্থায়ী হয়।” দিল্লিতে বিশ্ব প্রত্নতত্ত্ব সম্মেলনের সময়, হাবিব গোষ্ঠী এবং লাল গোষ্ঠী প্রকাশ্যে লড়াই করেছিল এবং বাবরি মসজিদ বিতর্কে অধ্যাপক হাবিব ও অধ্যাপক লাল একে অপরের বিপরীত পক্ষ ছিলেন।

মুহাম্মদ শেষ পর্যন্ত এএসআই-এর ডেপুটি-সুপারিন্টেন্ডিং প্রত্নতত্ববিদ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মুহম্মদের মতে, অধ্যাপক হাবিব এএসআই-এর কার্যনির্বাহী পরিচালকের সাথে দেখা করে তাকে বাদ দিতে বলেছিলেন। ডিজি জবাব দিয়েছিলেন যে, এটি ইউপিসির নির্বাচন এবং এটি প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা তাঁর নেই। তারপরে অধ্যাপক হাবিবের একটি চূড়ান্ত অনুরোধ ছিল। তাকে যেন কোনোভাবেই আগ্রায় পোস্ট করবেন না। (যদি সে অন্য কিছু আবিষ্কার করে বসে তখন কী হবে?)

মুহম্মদকে মাদ্রাজ সার্কেলে পোস্ট করা হয়েছিল। তবে তিনি বক্তৃতার জন্য আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেন এবং তারপরে সেগুলি বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তারা তাঁকে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র সফল হয়েছিল জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (নাহ্! বিস্মিত হ‌ওয়ার কোনোও অবকাশ নেই), তবে অন্য যে কোনও জায়গায় মুহম্মদ নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারতেন।

তাঁর বইয়ের অগ্রভাগে, অধ্যাপক এম জি এস নারায়ণন প্রফেসর হাবিব সম্পর্কেও লিখেছেন।প্রফেসর এমজিএসের মতে, অধ্যাপক হাবিব তাঁর সংকীর্ণ গোষ্ঠীবাদ, স্বজনপোষণ মনোভাব এবং বিশ্বাসঘাতকতার দ্বারা কেবল ইতিহাসকেই নয় সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনকে বিষিয়ে তুলেছেন।   একই সাথে তিনি লিখেছেন যে অধ্যাপক হাবিব একজন কঠোর পরিশ্রমী ব্যক্তি কিন্তু ধূর্ত। তার দল হুমকি দেবে, প্রতারণা করবে এবং বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের অংশ হবে। কোনো ব্যক্তি এই গোষ্ঠীর সমালোচনা করলে তাকে হিন্দুত্ববাদী এবং সাম্প্রদায়িক বলে চিহ্নিত করা হবে। প্রফেসর এমজিএস বাবরি মসজিদকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করার জন্য এই গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন।

মুহাম্মদের মতে বাবরি মসজিদ বিরোধের সময় হাবিবের ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশটি খসে পড়েছিল। সরকারী সংস্থার (ভারতীয় ইতিহাস  গবেষণা পরিষদI বা ndian Council of Historical Research) প্রধান হিসাবে তাঁর এই বিরোধে কোনও পক্ষ নেওয়া উচিত হয়নি। জনগণ এই বিরোধের সময়  তাঁর ব্যবহার দেখে মনে করেছিলেন তিনি  মুসলিম পক্ষের পক্ষ নিয়ে তাঁর নিজ প্রভাব বাড়াতে সচেষ্ট। একজন ঐতিহাসিক যে সাহসের সাথে বলতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, আইসিএইচআর-এর প্রধান হিসাবে এই বিরোধে তার পক্ষ নেওয়া উচিত হয়নি। সেই ব্যক্তি  ছিলেন প্রফেসর এমজিএস, যার প্রাথমিকভাবে স্বচ্ছ এবং উচ্চ মতামত ছিল।

এমনকি তিনি অধ্যাপক হাবিবের  সম্পর্কে মুহম্মদের মতামতের  সাথে একমত ছিলেন না। তবে একবার প্রফেসর এমজিএস আইসিএইচআর-তে অধ্যাপক হাবিবের সাথে কাজ করার সময় তিনি মুহম্মদের বক্তব্যের সত্যতা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।  অধ্যাপক হাবিবের সাথে কাজ করতে না পেরে তিনি আইসিএইচআর ছাড়েন।  খুব শীঘ্রই প্রফেসর এমজিএসকে হিন্দুত্বের তকমায় ভূষিত করেন।

উপরের ঘটনাগুলো বইয়ের প্রথম কয়েকটি অধ্যায় থেকে  নির্বাচিত ঘটনার সমাহার।  এই মানুষগুলোই রাম মন্দিরের অস্তিত্ব আদৌ ছিল কিনা বা সরস্বতী নদী ভারতে বা আফগানিস্তানে প্রবাহিত হয়েছে কিনা তা নিয়ে ভারতীয় ইতিহাসকে সংজ্ঞায়িত করতে পারেন (দ্য লস্ট রিভার দেখুন)। এটি একটি “অফিসিয়াল” ইতিহাস ধরে রাখার চেষ্টা যা  ব্রিটিশরা শুরু করেছিল, সেই অনুশীলন বজায় রাখার মূল্য। আমাদের ইতিহাস যখন প্রফেসর ইরফান হাবিবের মতো মার্কসবাদীরা হাইজ্যাক করে ফেলেছে তখন আমরা চুপচাপ বসে বসে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছি।

স্বরাজ্য়ে প্রকাশিত জয়কৃষ্ণণ নায়ারের মূল প্রবন্ধ থেকে অনুবাদ করেছেন দীপান্বিতা।