বঙ্গদেশ ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কারাক জেলায় হিন্দু মন্দির ধ্বংসের ভিডিও ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। এর ফলে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপ আসতেই পাক পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ভারতের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে ইসলামাবাদে বার্তা পাঠানো হয়েছে। এই টানাপোড়েনের মাঝেই পাকিস্তানে হিন্দু মন্দির ধ্বংসের ঘটনাকে সর্বাত্মকভাবে সমর্থন জানিয়ে একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেছে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে উস্কানি দেওয়ায় অভিযুক্ত ইসলামিক ধর্মপ্রচারক, ইউটিউব চ্যানেল “পিস টিভির” মালিক জাকির নায়েক।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সূত্র মারফত খবর পাওয়া গিয়েছে, গত ৩০ ডিসেম্বর পাকিস্তানের কারাক জেলার একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরে হামলা চালায় সুন্নি দেওবান্দি রাজনৈতিক দল উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল (JUI-F)-এর একদল ধর্মান্ধ সদস্য। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, একজন ইমামের নেতৃত্বে ওই মৌলবাদী উগ্র সমর্থকরা এসে মন্দিরটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা করা হয় এবং পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। শুক্রবার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তানকে অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত। চাপের কাছে মাথা নত করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওই মন্দিরটি সরকারি অর্থে গড়ে তোলা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এসবের মধ্যেই একটি ভিডিওবার্তায় ইসলামিক মৌলবাদীদের এই কাজে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে জাকির নায়েককে। এ প্রসঙ্গে কুখ্যাত ওই ধর্মপ্রচারক বলেছেন, ‘ইসলামিক দেশে মন্দির থাকা একদমই উচিত নয়। তাই পাকিস্তানে যে ঘটনা ঘটেছে তা বেশ হয়েছে, একদম উচিত কাজ হয়েছে।’ তার এই বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশ হতেই চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। জাকির নায়েককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে ভারতে নিয়ে আসার দাবি জানিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জাকির নায়েকের হিন্দুবিদ্বেষী এই মনোভাব এর কথা আগেও বিভিন্ন ভিডিও বা বক্তব্যের মাধ্যমে সামনে এসেছে। গত জুলাই মাসে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে হিন্দু মন্দির তৈরি করার অনুমতি দিয়ে ইমরান খান ইসলাম বিরোধী কাজ করছেন বলেও মন্তব্য করে জাকির। শুধু তাই-ই নয় এই অনুমতি প্রদান পাপের নামান্তর বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘শরিয়ত আইন অনুযায়ী ইসলামিক দেশে অমুসলিমদের প্রার্থনাকক্ষ তৈরিতে অনুদান দেওয়া হারাম। সমস্ত মুসলিম গবেষক, ইমাম ও উলেমা এই বিষয়ে একমত হবেন। এই বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে ফতোয়াও দেয় তারা।’