বাকস্বাধীনতার কন্ঠরোধ! করোনা সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করা সাংবাদিকের জেল কম্যুনিস্ট চীনে

0
560

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ‘কোভিড আক্রান্তদের চূড়ান্ত হেনস্তা করা হচ্ছে উহানে।’ – হিন্দুস্তান টাইমস রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ ধরণের শিরোনাম সম্বলিত খবর প্রকাশ্যে এনেছিলেন প্রাক্তন আইনজীবী তথা চীনা সিটিজেন সাংবাদিক ঝ্যাঙ ঝান (Zhang Zhan)। আর তাতেই ক্ষেপে উঠেছে জিংপিং সরকার। তড়িঘড়ি মুখ বন্ধ করতে, ‘শাস্তি’ স্বরূপ সাংবাদিককে জেলে পুড়েছে জিনপিংয়ের পোষ্য পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই এই খবরে আন্তর্জাতিক মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে।

গত বছরের শেষের দিকে চিনের উহান (Wuhan) শহরে করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর খবর চমকে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। এরপর বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ অভিযোগ তোলে, চীনের এই শহর থেকেই গোটা বিশ্বে করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে যার জেরে বিশ্ব ভীত-সন্ত্রস্ত। চীনের একজন ভাইরোলজিস্ট সহ কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, ইউহানেরই কোনও এক গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে এই ভাইরাস। যদিও সেসব অভিযোগ ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে চীনা কমিউনিস্ট সরকার। উলটে যাঁরা এই খবর সামনে এনেছে, তাদেরই প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে জেলে পুড়েছে সরকার। কোনও কোনও সাংবাদিকের তো আর হদিশই মেলেনি। রাতারাতি তারা গায়েব। এবার সেই তালিকায় নাম উঠেছে সিটিজেন সাংবাদিক ঝ্যাঙ ঝানের।

চীনের মানবাধিকার সংগঠন চাইনি্জ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারের তরফে জানানো হয়েছে, ৩৭ বছরের আইনজীবী ঝ্যাঙ ঝান করোনা সংক্রান্ত একাধিক খবর সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন। কোভিড রোগীদের পরিবারকে কীভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে সেই সংক্রান্ত খবর সামনে আনার পাশাপাশি রোগীদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হচ্ছে, কীভাবে তাঁদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে – এ সবই ইউটিউব অ্যাকাউন্ট, উইচ্যাট কিংবা টুইটারের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন ঝ্যাঙ ঝান। এরপরই ১৪ই মে থেকে বেপাত্তা তিনি, তার আর কোনো হদিসই মিলছে না। পরে ১৯ জুন তাকে আটক করার নির্দেশ দেয় পুডং-এর প্রসিকিউটার। আপাতত সাংহাইয়ের ডিটেনশান সেন্টারে তিনি রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি আমরণ অনশন শুরু করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কার্যত জোরজবস্তি তাঁকে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। সূত্রের খবর, তাঁর পরিবারকেও আটক করেছে পুলিশ। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যথেষ্ট বাজে ব্যবহার করেছে পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে হংকংকে সমর্থন করে জেলে গিয়েছিলেন এই সাংবাদিক।

অবশ্য ঝ্যাঙ ঝান একা নন। দীর্ঘ এই তালিকায় রয়েছে সাংবাদিক লি জেহুয়া, চেন কুইশি ও ফ্যাং বিন; তাদেরও একই দশা হয়েছিল। এপ্রিল মাসে শেষবার জেহুয়াকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছিল বলে খবর মিলেছে। কুইশিকে সরকারি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এদিকে বিনের কোনও খোঁজই আর পাওয়া যায়নি। রাতারাতি তারা যেন হঠাৎ করেই মহাশূন্যে মিলিয়ে গিয়েছে। বিশ্বের দরবারে মানবাধিকার হরণের আরো এক ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল এই কম্যুনিস্ট দেশটি।