১৪৯ বছরে পা দিলো উত্তরবঙ্গের মেটালি কালীবাড়ির পুজো

0
677

বঙ্গদেশ ডেস্ক : ডুয়ার্স তথা উত্তরবঙ্গের প্রাচীন কালী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল মেটেলি কালিবাড়ির পুজো। শতাব্দী প্রাচীন এই পুজো এবার ১৪৯তম বর্ষে পা দিল। মেটেলি কালিবাড়ির পিছনে অনেক ইতিহাস থাকলেও এখনও তার উদঘাটন পুরোপুরি হয়নি।

জানা গিয়েছে, মেটেলি এলাকাটি একসময় ভুটানের অন্তর্গত ছিল। ওই সময় ভুটানিরা এখানে পুজো করত। ১৯৬৮ সালে কালিবাড়ির পুরানো মন্দিরের ওপর একটি বড় গাছ পরে মন্দিরটি ভেঙে যায়। ওই সময় নতুন মন্দির নির্মাণের জন্য কাজ করার সময় মাটির ভিতর থেকে একটি মাটির প্রদীপ, সিমেন্টের বেদি সহ আরও নানান ঐতিহাসিক জিনিস পাওয়া যায়।

সিমেন্টের ওই বেদির মধ্যে খোদাই করে লেখা ছিল বাংলা ১২৭৮ সাল। সেই হিসেবেই এবারের পুজো ১৪৯ তম। মন্দিরে ১৩৩০ সাল খোদাই করে লেখা একটি খাড়াও পাওয়া গিয়েছে। ওটা দিয়ে বলি দেওয়া হত। ১৯৮৩ সালে মন্দির চত্বর খুঁড়ে একটি সিমেন্টের পিলার পাওয়া যায়। ভয়ে আর সেই পিলার তোলেনি মন্দির কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সেটিকে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কষ্টি পাথরের এখানকার কালি মূর্তিও অদ্ভুত দর্শনের। কালি মূর্তির চোখ দুটো বড় বড় টানা টানা।

প্রাচীন এই মন্দিরে পুজো দিতে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসে। মেটেলি কালীবাড়ি সম্পাদক বিশ্বজিৎ মন্ডল বলেন, ‘প্রতিমার গঠন দেখে মনে হয় ওই প্রতিমার মধ্যে হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মের সংমিশ্রণ রয়েছে। এবারে পুজোয় কোনও প্রকার বলি দেওয়া হবে না। তার জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে মন্দিরের গেটে নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে পুজোয় অনেক বলি হত। ৬৪ ডেসিমেল জমির ওপরে থাকা কালিবাড়ির অজানা ইতিহাস উদঘাটনের জন্য আমরা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব কে জানিয়েছি।

তিনি বিস্তারিত তথ্য দিয়ে জানাতে বলেছেন। সরকারি ভাবে মেটেলি কালিবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষনার দাবি জানান তিনি। পুজোর সময় ছাড়াও সারা বছর মেটেলি কালিবাড়িতে দেশ বিদেশের বহু পর্যটকও আসে পুজো দিতে। তবে এবছর কোভিড পরিস্থিতির জন্য বড় করে পুজো করা হবে না। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হবে পুজো। মন্দির চত্বরে মানুষের ভিড় করতে দেওয়া হবে না, জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।