বঙ্গদেশ ডেস্ক – প্রতিবেশি হিসেবে চীন কখনোই নির্ভরযোগ্য নয়। বিদেশনীতিতে বরাবরই আগ্রাসী এবং সাহায্য করা অপেক্ষা চড়া সুদে ঋণ দিতেই তারা বেশি উৎসাহী, এইভাবে ঋণের ফাঁদে ফেলে অন্য দেশের ধনসম্পদ নিজেদের কুক্ষিগত করায় তাদের জুড়ি মেলা ভার। ভারত থেকে ভূটান হয়ে ভিয়েতনাম, জাপান থেকে মালয়েশিয়া সবার সাথেই ঝগড়া বাঁধানো এবং অসহিষ্ণুতার সম্পর্ক এই কমিউনিস্ট দেশটির। এমনকি এই সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার নেশায় চূড় হয়ে তারা রাশিয়ার সাথে ঝামেলা বাঁধিয়েছে আগেই।
এমনই একটি দেশ ফিলিপিন্স, যারা দক্ষিণ চীন সাগরে তেল অনুসন্ধানের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে এবং চীনের সাথে চুক্তির পথ উন্মুক্ত করেছে। ভারত উপকূলীয় নজরদারির উন্নতির জন্য, maritime domain awareness (MDA) রাডার সিস্টেম দেওয়ার বিষয়ে ফিলিপিন্সকে প্রস্তাব করেছে।
শুক্রবার ভারত ও ফিলিপিন্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং তেওডোরো লোকসিন জুনিয়র, একটি যৌথ কমিশন পুনরায় শুরু করেছেন যা পাঁচ বছর আগে শেষবারের মতো কাজ করেছিল।
এম.ই.এ’র থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “উভয়পক্ষ বিশেষত সামরিক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা, সামর্থ্য বৃদ্ধি, নিয়মিত শুভেচ্ছামূলক আলোচনা ও সফর; এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে উভয় দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তি করা ও সামুদ্রিক সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। তারা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির মধ্যে তথ্য বিনিময় এবং বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে সহায়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে সন্ত্রাস-বিরোধের ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে।”
অক্টোবরে, ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রপতি রড্রিগো দুয়ার্তের সরকার দক্ষিণ চীন সাগরে খনিজ অনুসন্ধানের নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহার করেন। এই সিদ্ধান্ত “যৌথ” তেল অনুসন্ধান প্রকল্পগুলির, বিশেষত চীনের ন্যাশনাল অফশোর তেল কর্পোরেশনের মতো চীনা জ্বালানী সংস্থাগুলির পক্ষে খননের পথ প্রশস্ত করতে পারে।
ফিলিপিন্স এবং চীনা সরকার, এই অঞ্চলে যৌথ তেল অনুসন্ধান প্রকল্পের চুক্তিও করতে পারে; পর্যবেক্ষকদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন চীন এবং ফিলিপাইনের মধ্যে হয়তো তেল অনুসন্ধানের কাজ ত্বরান্বিত হবে। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই হয়তো ছয় বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফিলিপিন্স প্রত্যাশা করে যে সমগ্র বিষয়টি বেইজিংয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, পাশাপাশি এই সমুদ্রের উপরে ম্যানিলার সার্বভৌমত্বকেও তারা স্বীকৃতি দেবে। যদিও চীন এই অঞ্চলটিকে বিতর্কিত জলসীমা হিসাবে বিবেচনা করে এবং তারা ফিলিপিন্সের দাবীটিকে গ্রহণ করবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক থাকছে।
ফিলিপিনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী লোকসিন বৈঠকের পর কয়েকটি টুইটের মাধ্যমে অনলাইনে এবং দূর-শিক্ষার ক্ষেত্রে ভারতের অভিজ্ঞতা থেকে কীভাবে উপকৃত হতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা করেলেছিলেন। এম.ই.এ’র বিবৃতিতে শ্রী জয়শঙ্করের তরফ থেকে বলা হয়েছে, “ফিলিপিনো শিক্ষার্থী, স্কলার এবং শিক্ষাবিদদের আইটিইসি এবং ই-আইটিইসি উদ্যোগের সাথে যুক্ত করার এবং আইআইটি-তে আসিয়ান শিক্ষার্থীদের দেওয়া কম্বাইন্ড পিএইচডি ফেলোশিপ নেবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।” ভারত ফিলিপিন্সকে আন্তর্জাতিক সোলার অ্যালায়েন্স এবং দুর্যোগ প্রতিরোধক অবকাঠামোর জন্যে তৈরি কোয়ালিশনে যোগদানের জন্যও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।