সিস্টার অভয়া হত্যাকাণ্ড আদতে প্রবলপ্রতাপ ক্যাথলিক চার্চের কুকীর্তির দলিল

0
1131

প্রজ্ঞা পারমিতা

 

১৯৯২ সাল থেকে ২০২০। মাঝখানে কেটে গিয়েছে ২৮টা বছর। অবশেষে শাস্তি পেল সিস্টার অভয়ার (Sister Abhaya) হত্যাকারীরা। গত বুধবার তিরুবনন্তপুরমের বিশেষ সিবিআই (CBI) আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে অপরাধীদের। সেই সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। পাশাপাশি তথ্যপ্রমাণাদি লোপাটের অপরাধে আরও সাত বছর কারাবাসের রায় শোনানো হয়েছে।অভিযুক্ত ফাদার টমাস কোট্টুর ও সিস্টার সেফিকে আগেই দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। বুধবার তাদের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।

 

ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল তিন দশক আগে?

১৯৯২ সালে চার্চের ফাদার ও সিস্টারকে ঘনিষ্ট অবস্থায় দেখে ফেলার অপরাধে খুন হতে হয় ১৯ বছর বয়সী সিস্টার অভয়াকে। অভিযুক্ত ফাদার টমাস কোট্টায়ামের (Kottayam) বিসিএম কলেজে (BCM College) সাইকোলজি পড়াতেন, তাঁর ছাত্রী ছিলেন সিস্টার অভয়াও। সেই সময় তিনি বিশপের সচিবও ছিলেন, পরে কোট্টায়ামের ক্যাথলিক ডিওসেসের আচার্য (Chancellor of the Catholic Diocese ) পদে বসেন। খুনের ঘটনায় জড়িত সিস্টার সেফির সঙ্গেই একই হস্টেলে থাকতেন সিস্টার অভয়া। সেফি হস্টেলের কার্যনির্বাহী ইন-চার্জও ছিলেন।

১৯৯২ সালের ২৭ মার্চ ভোর ৪টে ১৫ নাগাদ হস্টেল থেকে রান্নাঘরে যাওয়ার সময় অভয়া সিস্টার সেফির সঙ্গে ফাদার টমাস ও অন্য এক ফাদার জোসে পুত্রিক্যাইলকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পরই সিস্টার সেফি ভারী কোনও বস্তু দিয়ে অভয়ার মাথায় আঘাত করে। তারপর তাঁর মৃতদেহ কুয়োয় ফেলে দেওয়া হয়।

সেই সময় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কেরলে। তবে কেরল পুলিশ প্রথমে এই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেই দাবি করেছিল। এমনকী, সিবিআইও প্রথমে আত্মহত্যার দিকেই ইঙ্গিত করেছিল। কিন্তু পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চিত করে, খুনই করা হয়েছিল সিস্টার অভয়াকে। যদিও অভিযুক্তরা ২০০৯ সালে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালে আবার শুরু হয় হয় বিচার প্রক্রিয়া। অবশেষে রায় ঘোষণা করা হল।

 

আদালতের রায়দান

চাপের মুখে পড়েই এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআই-র হাতে। যদিও প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক ৩টি রিপোর্টে গাফিলতির অভিযোগ তুলে পুর্নতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় আদালতের তরফে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নভেম্বরে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে সিবিআই। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত ফাদার পুত্রিক্যাইলকে রেহাই দেয় সিবিআই আদালত। এই হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত ফাদার টোমাস কোট্টুর ও সিস্টার সোফিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।

প্রধান অভিযুক্ত টমাস কোট্টুর আদালতকে জানিয়েছে, তার ক্যানসার হয়েছে। তাই তাকে যেন কম শাস্তি দেওয়া হয়। সিস্টার সেফিও একই আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, যে অপরাধ অপরাধীরা করেছে তাতে কোনও সহানুভূতি তারা প্রাপ্য নয়।বিগত বছরগুলিতে সিবিআই তিনবার তদন্তের চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিলেও আদালত তা বাতিল করে দেয় এবং আরও গভীরে তদন্তের নির্দেশ দেয়। আজ মামলার শুনানিতে আদালত ফাদার টমাস ও সিস্টার সেফিকে হত্যা ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। একইসঙ্গে ফাদার টমাসের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশের অভিযোগও রয়েছে।ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে খুন ও তথ্য প্রমাণ লোপাটের একাধিক ধারায় অভিযোগ প্রমামিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। সাজার পরিমাণ ঘোষণা করা হবে আগামী বুধবার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই মামলায় অপর এক অভিযুক্ত ফাদার জোসে পুথরিক্কায়ালকে ২০১৮ সালে মুক্তি দেয় সিবিআই কোর্ট। কিন্তু সেই সময়েই কোট্টুর ও সেফির ডিসার্জ পিটিশন নাকচ করে দেওয়া হয় আদালতের তরফে।

চোর যখন সাধুর ভূমিকায়

কিন্তু এত বছর পরে এই খুনের কিনারা করার পেছনে যে মানুষটি রয়ে গেছেন, তিনি হলেন রাজু। পেশায় একজন চোর। অভয়াকে খুনের দিন চার্চে ঢুকেছিলেন চুরি করতে আর সেটাই ঘুরিয়ে দিল মামলাকে। ২৮ বছর পর হলেও বিচার পেলেন সিস্টার অভয়া। ১৯৯২ সালের ২৭ মার্চ। গভীর রাতে কেরলের কোট্টাযয়ামের সেন্ট পায়াস কনভেন্টের পাঁচিল টপকে নিঃশব্দে ভিতরে ঢুকেছিলেন রাজু ওরফে আদাক্কা। তিনি দেখেন, অত রাতে দুই সন্দেহভাজন ব্যক্তি ঘুরছেন কনভেন্ট চত্বরে।

 

মানবাধিকার কর্মী ও পরিবারের প্রতিক্রিয়া

সিস্টার অভয়া হত্যাকাণ্ডের সুবিচারের দাবিতে দীর্ঘদিন থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন কেরলের একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। তাই আদালতের এই রায়কে তারা তাদের দীর্ঘ আন্দোলনের জয় হিসাবেই দেখছেন।

সিস্টার অভয়া হত্যা মামলার সুবিচারের জন্য তৈরি প্যানেলের একমাত্র জীবিত সদস্য জোমেন পুটেনপুরাকল আদালতের রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,”সিস্টার অভয়া অবশেষে সুবিচার পেলেন। এবার তিনি শান্তি পাবেন। অর্থ ও ক্ষমতা থাকলেই যে বিচার ব্যবস্থাকে ভুল পথে চালিত করা যায় না, এটি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।”

বেশ কয়েক বছর আগে অভয়ার মা-বাবা দুজনেই মারা গিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে মেয়ের খুনের ন্যায্য বিচারের দাবিতে লড়াই করেছিলেন তাঁরা। অবশেষে মিলেছে সুবিচার। কিন্তু সেই সুবিচার তাঁরা চোখে দেখতে পেলেন না।প্রমাণের অভাবে ২০১৮ সালে বেকসুর খালাস পান আর এক যাজক জস।

অভয়ার ভাই টমাস জানিয়েছেন, ‘দিদির খুনিদের সাজাপ্রাপ্তিতে তিনি ভীষণ খুশি। দিদির আত্মা আজ শান্তি পেয়েছে।’

মামলার বিচারকার্য চলার প্রায় ৩০ বছরে, ১৭৭ জন সাক্ষীর মধ্যে বেশিরভাগই মারা গেছেন বা নিজেদের মত পরিবর্তন করেছেন।

 

মামলার টাইমলাইন

সিস্টার অভয়া হত্যাকাণ্ড মামলার মূল মুহুর্তগুলির টাইমলাইন এক ঝলকে :

২৭ শে মার্চ, ১৯৯২: সিস্টার অভয়ার মৃতদেহ কোট্টায়ামের সেন্ট পিয়াস কনভেন্টের একটি কুয়োতে পাওয়া যায়।

১৯৯৩ সালের জানুয়ারী: রাষ্ট্রীয় অপরাধ শাখা একটি প্রতিবেদন দায়ের করে বলেছিল এটি আত্মহত্যার ঘটনা ছিল। তবে তার পরে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল।

২৩ শে মার্চ, ১৯৯৩: মানবাধিকার কর্মী জোমন পুথেনপুরাকাল বিষয়টি আদালতে তোলার পরে মামলাটি সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সেপ্টেম্বর ১৯৯৬: সিবিআই তার প্রথম রিপোর্টে উল্লেখ করে মামলাটি আত্মহত্যা ছিল। আদালত এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে এবং তদন্তের আদেশ দেন।

মার্চ ১৯৯৭: সিবিআই তার দ্বিতীয় প্রতিবেদনে বলে যে মামলাটি আত্মহত্যা নয়, একটি নরহত্যা ছিল। আদালত আবার সেই তথ্য প্রত্যাখ্যান করে। পুনরায় তদন্ত শুরু করে সিবিআই।

২০০৭: এসপি নন্দকুমার নায়ার তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলা দ্রুতগতিতে এগোতে থাকে।

ডিসেম্বর ২০০৮: সিবিআই তার তৃতীয় রিপোর্টে প্রথমবারের জন্য এরনাকুলামের একটি আদালতে বলেছিল যে এটি হত্যাকাণ্ড এবং তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল – দুই ক্যাথলিক-চার্চের যাজক, ফাদার টমাস কোটুর এবং ফাদার জোসে পুথ্রুকায়েল এবং একজন সন্ন্যাসিনী, সিস্টার সেফি। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, প্রমাণ লোপাট, ফৌজদারি ষড়যন্ত্র এবং অন্যান্য অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কুয়োতে ফেলে দেওয়ার আগে তাকে কুড়ুল দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় সংস্থা দাবি করেছে।

জানুয়ারী ২০০৯: ছয় মাস কারাগারে কাটিয়ে তিনজনকেই জামিন দেওয়া হয়েছিল।

১৭ জুলাই, ২০০৯: তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে সিবিআই। তিনটি ফাইলের ডিসচার্জের আবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিতে নয় বছর সময় লাগে।

মার্চ ২০১৮: আদালত যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে ফাদার পুথ্রুকায়েলকে বেকসুর খালাস দেয়।

২৬ আগস্ট , ২০১৯: এই মামলার বিচার ২৭ বছর পর পুনরায় শুরু হয়। অনেক সাক্ষী এরমধ্যে বিভিন্নভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯: সিবিআই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক থ্রেসিয়ামা জর্জকে সাক্ষী হিসাবে তুলে ধরেন, যিনি কোট্টায়মের বিসিএম কলেজে অভয়াকে পড়াতেন। তিনি প্রধান অভিযুক্ত ফাদার কোটুরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন।

২২ ডিসেম্বর, ২০২০: রায় ঘোষণার দিন।

ক্যাথলিক চার্চের অন্ধকারাচ্ছন্ন ভয়ঙ্কর দিক

সিস্টার অভয়া হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে যে ভারতে ক্যাথলিক চার্চ কতটা শক্তিশালী। ময়না তদন্তে শরীরে আঘাতের বিষয়টি স্পষ্ট থাকা সত্ত্বেও শক্তিশালী ক্যাথলিক চার্চ স্থানীয় পুলিশ থেকে শুরু করে প্রশাসন ও ডাক্তারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বিষয়টিকে আত্মহত্যা হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করেছিল।

টমাস কোট্টুর এবং জোসে পুত্রিক্যাইল দু’জন ক্যাথলিক যাজক সিস্টার সেফির সাথে একসাথে বিকৃত যৌনাচরণ করছিল করছিল। অভয়া তাদের দেখে ফেললে তারা ভয় পেয়েছিল যে সে তাদের কথা প্রকাশ করে দেবে এবং সেফি মেয়েটিকে একটি কুড়াল দিয়ে আঘাত করেছিল – যা কাঠ কাটার জন্য ছিল এবং কোট্টুর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল।

পরে সেফির এমনকি হাইমনোপ্লাস্টি সার্জারিও হয়েছিল। (হায়মেন পুনরায় পুনর্নির্মাণের জন্য তিনি এখনও কুমারী রয়েছেন) এবং তার স্তনকে শক্ত রাখার জন্য অপারেশন করা হয়েছিল।

হত্যার প্রমাণ লোপাট করতে পুরো কনভেন্টকে পুনর্গঠন‌ও করা হয়েছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে চার্চের প্রভাব কতটা এবং চার্চের সঙ্গে যুক্ত লোকজন কতটা ঘৃণ্য হতে পারেঅথচ এরাই নাকি “ঈশ্বরের সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে”।

তবে এই মামলা দুর্দান্ত মোড় নেয় যখন থমাস ভার্গিজ একজন পুলিশ অফিসার পদত্যাগ করেন। যিনি বলেছিলেন যে, সিবিআই মামলাটি বন্ধ করার জন্য চাপ দিচ্ছে এবং ক্যাথলিক চর্চা সরকার এবং পুলিশকে একত্রিতভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে।

যে ব্যক্তি অভয়াকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিয়েছেন তিনি হ’লেন আদক্কা রাজু। একটি ছিঁচকে চোর যিনি খুনের দিন কনভেন্টে কিছু চুরি করতে গিয়েছিলেন। তিনি ২৮ বছর ধরে তার অবস্থানে একভাবে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তিনি বলেন অভয়া আমার মেয়ের মতো ছিল এবং আমি জানি যে মেয়ের সাথে এইরকম কিছু ঘটলে একজন বাবা-মা কেমন অনুভব করবেন।

আদালতে তাঁর সাক্ষ্য প্রমাণ চেপে যাওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছিল এবং কোটি কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল কিন্তু তিনি মত পরিবর্তন করেননি। ভয় এবং লোভের কারণে (এই মামলায় জলের মত অর্থ ব্যয় করা হয়েছিল) ডাক্তার পুলিশ সিবিআই সহ হত্যাকারীদের বাঁচানোর জন্য কার্যত প্রত্যেকেই আদালতে তাদের সাক্ষ্য-প্রমাণ বদলেছিল কিন্তু কেবল রাজু তার অবস্থানে অনড় ছিল এবং সে একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী যে কখনও মত বদলায়নি।

বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখুন এটি ভারতে ক্যাথলিক চর্চের একটি বড় দোষ যে তারা কীভাবে নিজেদের লোককে রক্ষা করেন এবং হত্যাকারীদের বাঁচাতে হিংসাত্মক ঘুষের রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। তারা এতটাই অমানবিক এবং হিংস্র যে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়ার পরিবর্তে অপরাধীদের বাঁচায়। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের প্রতিটি দেশে ক্যাথলিক চার্চ কোটি কোটি ডলার যাজকদের যৌনাচারের সঙ্গীদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদান করে। হাজার হাজার জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয় লম্পট পাদ্রীদের জন্য। যারা তাদের অর্থশক্তি ব্যবহার করে বাচ্চাদের জন্য এবং তাদের জীবন নষ্ট করে।

 

হিন্দুদের ক্ষেত্রে অতিতৎপর মীডিয়া উল্টো দিকে চেয়ে থাকে

চার্চের অপরাধের প্রশ্রয়দাতা হল মীডিয়া। যদি এই ঘটনাটি কোনো হিন্দু সাধুকে ঘিরে হতো তবে এতক্ষণ সমস্ত মিডিয়া ঝাঁপিয়ে পড়তো। অথচ ক্যাথলিক চার্চের এই অপরাধগুলি কেন কেউ জানতেও পারে না? উদাহরণস্বরূপ সিস্টার অভয়াক ঘটনাটি কেরালার বাইরে কয়জন জানে? অথচ হিন্দু কোন ধর্মগুরু খুন নয়, কেবল কুবাক্যের জন্যই সারা ভারতে ভিলেন বলে চর্চিত হন।

এখনও ক্যাথলিক চার্চ ব্রহ্মচর্যে একটি পুরানো নিয়ম অনুসরণ করে যা বর্তমান সময়ে অযৌক্তিক। তারা এটিকে কেন বাতিল করবেন না এবং সাধারণ মানুষকে সেক্সুয়াল অপরাধের হাত থেকে বাঁচাবেন না?

বিশপ ফ্রাঙ্কোর জুলুম এরকম আরেকটি ঘটনা যেটি কেরালায় ঘটছে।এবং এখনও শত শত মামলা রয়েছে। তবুও সিনেমা এবং সাহিত্যে ধার্মিক পুরুষ হিসাবে পাদরিদের দেখানো হয় এবং হিন্দু সাধুদের ভিলেন হিসাবে দেখানো হয়েছে।

এভাবেই ক্যাথলিক চার্চ তার শিকারীদের সুরক্ষা দেয় এবং এখনও বহু বহু অনুদান পায় যা এই অপরাধীদের রক্ষার জন্য ব্যয় করা হয়। চার্চের এই অন্যায় কাজকর্মের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার সময় আগত।