তাইওয়ান সরকারের দীপাবলি আয়োজন, ভারতের ও হিন্দুদের সাথে ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত

0
638

বঙ্গদেশ ডেস্ক – তাইওয়ান, ক্ষুদ্র একটি দেশ কিন্তু তাও চীনের চোখের কাঁটা। তার উপরে এখন ভারতের উদ্যমী সমর্থন এবং আমেরিকার অস্ত্রশক্তিতে বলীয়ান হয়ে, এখন আরও নাছোড়বান্দা হয়ে উঠেছে চীন বিরোধিতায়। বিভিন্ন সময়ে এই ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রটি দাঁড়িয়েছে ভারতের পাশে, চীনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে। তাইওয়ানের বিদেশমন্ত্রী শ্রী জোসেফ জোশুয়া ঊ এবং ভারতের তাইওয়ানে নিযুক্ত ডাইরেক্টর জেনারেল ভারত-তাইপেই এস্যোশিয়েশান (ভারতের ডি-ফ্যাক্টো এনভয়) -এ উপস্থিত ছিলেন গৌরাঙ্গলাল দাস। এই বিশাল অনুষ্ঠানটি গত শুক্রবার তাইওয়ান সরকার স্পন্সর করেন এবং ভারতীয় তথা হিন্দু সংস্কৃতি ও হিন্দুত্ববাদের প্রতি তাঁদের আস্থা, বিশ্বাস ও ভবিষ্যত সমর্থনের কথাই ঘোষণা করেন।

কোভিড সংক্রান্ত সকল নিয়ম মেনেই প্রায় দুইশত মানুষ এই উৎসবে যোগদান করেন, সাথে ছিলেন বহু সেলিব্রিটি ভারতীয়, ডিপ্লোম্যাটিক বিভাগের উচ্চপদস্থ অফিসার, এমনকি তাইওয়ানীয় কিছু মানুষ এবং তাইপেইয়ের মন্ত্রীসভা ‘য়ুয়ান’-এর বেশ কিছু এম.পি-ও উপস্থিত ছিলেন।

তাইওয়ানীয় বিদেশ মন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, “দীপাবলি হল এমন অনুষ্ঠান যা একইসাথে বহু কিছু প্রকাশ করে, অজ্ঞানতার উপরে জ্ঞানের, অন্ধকারের উপরে আলোর। এই কঠিন সময়ে আমরা অনুপ্রেরিত হই দীপাবলির আলোক থেকে যখন আমরা লড়াই করছি একটি বৈশ্বিক অতিমারির বিরুদ্ধে, চেষ্টা করছি সাধারণ জীবনে ফিরতে” – এরকম অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁকে কোট করেছে উইওন নিউজ।

দিওয়ালি উদযাপন ঐতিহাসিক তাইপেই গেস্ট হাউসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল যা সেই রাষ্ট্রের অতিথিদের রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। ১০০ বছরেরও অধিক পুরনো এই বিল্ডিংয়ের মালিক তাইওয়ান সরকার এবং তাদের বিদেশমন্ত্রক দ্বারা এটি পরিচালিত হয়। এরকম একটি জায়গায় হওয়া অনুষ্ঠান বুঝিয়ে দেয় দুই দেশের উত্তোরোত্তর কাছে আসা।

গৌরাঙ্গলাল দাস জানান, “দীপাবলি একটি বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে, এবং এটি বিদেশে থাকা কয়েক মিলিয়ন ভারতীয়ই নয়, তা্দের ঘরে ও আশেপাশে উপস্থিত কয়েক লক্ষ বন্ধু দ্বারাও উদযাপিত হয়। তাইওয়ানের এমন প্রাণবন্ত এবং গতিশীল ভারতীয় সম্প্রদায়কে দেখে আমি আনন্দিত। আজ আনন্দের সাথে আমরা প্রদর্শন করছি আমাদের এই গৌরবময় উত্তরাধিকার।”

ডাইরেক্টর জেনারেল এই অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে বলেন, “এই অনুষ্ঠানটি তাঁরা তাঁদের গৃহে আয়োজন করে শুধু ঘরের দ্বারোদঘাটনই করেননি, কোটি কোটি ভারতীয়ের জন্যে নিজেদের হৃদয়ের দরজাও উন্মুক্ত করেছেন।”

এই উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিয়েন চুং কুয়াং যিনি যিনি আগে অ্যাম্বাসেডারও ছিলেন “তাইপেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ভারতের” এবং এই দায়িত্ব নিতে গিয়ে সাত বছর ধরে ভারতে অবস্থান করেন। অনুষ্ঠানের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন আইনজীবি ইউ-চিন উ, ইনি সেই আইনজীবী যিনি ইউয়ানের তাইওয়ান-ভারত সংসদীয় বন্ধুত্ব সংঘের সভাপতিত্ব করেছেন। সব মিলিয়ে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে ভারত-তাইপেই এক বৈশ্বিক ও রাজনৈতিক বার্তা রাখতে সক্ষম হয়েছে যা আগামীতে কমিউনিস্ট চীন সরকারের রাতের ঘুম ওড়াবে।