প্রতাপ গ্রামে আছো?

##কচ

 

গোস্তচাপের রান্নাটা ভারী স্বাদু —
রুটি-পানি সব আগেই গিয়েছে চলে
সুবোধ-বিকাশে খবরটা দেওয়া আছে
ধর্মতলায় ধর্ম-বিকোনো দলে।

গ্রামের ঈদগাঁ লাগিয়ে দিয়েছি চেপে
দেবালয়ে যত কাঁচা মাংসের হাড় —
ছড়িয়ে দিয়েছি প্রতি রাতে নিয়মিত,
এইবার জমি বেচে দিয়ে যাবে পার!

দেখো কমরেড আমাদেরই যেন গায়
কলকাতা জুড়ে ইসলাম-পার্বণী —
আলিগড়-জ্যুনু পড়াশোনা করা লোকে
কলমে ছাপলে ঢেলে দিও তারে মানি।

হাওড়া-নবান্ ফিরনীটা দিও পাতে
গুঁজে দিও ধূলা থামাতে গণ্ডগোল
হোক পাক-জামা যতটা পারুক গড়ে
আর পাল্টাক পুলিশের মহা ভোল।

দিদিমণি-সাদা থানখানি পড়ে নেবে
বলে দিতে হবে রামনাম গালাগাল,
মাইকে হিজাব যত খুশি ইনশালা
হিঁদু বেকুবে আগুপিছু রাখো পাল!

তারপর খোলা মাদ্রাসা মাঠে নেমে
লক্ষ্যভ্রষ্ট ভুলে দিও চিরকাল —
আরবি খেজুর এসে গেছে বন্দরে
সব বিলোবার আর্বানি-নকশাল।

একটা রামের ছেলে ধরো আব্বাস
একটা হিঁদুর সিঁদুর যেন না জোটে!
জেহাদের নিকা যতটা যা পারি করি
গণনায় যেন মোসলেম মাথা ফোটে।

এদিকে গাঁয়ের আলপনা নিবে যায়!
উলুধ্বনি সব ফিকে হয় সন্ধ্যাতে,
গাঁয়ের মরাই কত দিন দেখে নি কো!
লক্ষ্মীপেঁচা কোজাগর বসে রাতে।

ভাবা যায় কিনা মোঘলমারীর সেনা!
প্রতাপ রাজার গড়ে ছিল দুর্দমে
বাঙ্গালি-ভূঁইয়া লড়েছিল প্রাণপণ
মুসলিমরাজ ছেঁটেছিল উদ্যমে।

তারই কোনো ভাই জাতিস্মর কি আছো
এই বাঙ্গলায় কোনো কাবাডির মাঠে?
কালারিপাট্টু লাঠি, ঢালি নাচ শিখে
জেহাদের বলি ঠেকানোর কোন ঘাটে?

প্রতাপাদিত্য, তুমি কি গ্রামেতে আছো?
জমিটায় যারা পুঁতেছিল শত লাশ
এক লহমায় স্মৃতিতে জাগুক তোমার
রক্ত-সারেতে জন্মেছে কাঁটাবাঁশ।

খতিয়ান বলে এ জমি তোমার মাপের
শেখার রয়েছে জমি-জিরেতও দাপের!
এই বারবেলা বার কর লাঙ্গা-হাল
লুঠ হওয়া জোত ফের চষা নয় চাপের।

প্রতাপাদিত্য হারিয়ো না এ উত্তাপ!
ঘুমানো বাঙ্গলা দখল হবে তা মেনো
শ্মশানঘাটের লাখো কোটি মড়া পুড়ে
কবরস্থানের সীমা বাড়বেই জেনো।

শাখা-মাঠে খেলা এমনই সুঠাম ছেলে
দাঁড়িভিট স্কুলে বাঙ্গলা শিখতে চায় —
জোর করে যারে চাপানো যায় না ভাষা
শত শত খোকা এমনি বুকেতে আয়।