মাতৃভাষা দিবসে নীরব বাংলা পক্ষ, ভাষাবীর রাজেশ-তাপসের প্রতি হল না শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

0
1247

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ২০ সেপ্টেম্বর দিনটিকে শহিদ রাজেশ এবং তাপসের স্মৃতির উদ্দেশ্যে গত বছর থেকে পশ্চিমবঙ্গ মাতৃ ভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ মাতৃভাষা দিবসের দিনে কার্যত নীরব হয়ে থাকতে দেখা গেল বাঙালিদের স্বঘোষিত অভিভাবক বাংলা পক্ষকে।

তাদের ফেসবুক পেজে এই নিয়ে একটিও পোস্টও দেখা গেল না। এমনকী, রাজেশ বর্মন এবং তাপস সরকারকে নিয়েও লেখা হল না কিছু।বাংলা পক্ষ বলে, তারা বাঙালিদের জন্য লড়াই করে। তাহলে রাজেশ এবং তাপসের লড়াই কীভাবে ভুলে গেল তারা?

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর উত্তর দিনাজপুর জেলার দাঁড়িভিট হাইস্কুলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে উর্দু শিক্ষক নিয়োগ করা নিয়ে ছাত্র বিক্ষোভ হয়। কারণ, ছাত্রদের অন্য বিষয়ের শিক্ষকের প্রচণ্ড দরকার ছিল।দীর্ঘদিন ধরে বাংলা-সহ তিনটি বিষয়ের শিক্ষক ছিল না এই স্কুলে। সেই শিক্ষক নিয়োগের দাবি তুলেছিল ছাত্র এবং অভিভাবকেরা।

কিন্তু সেই সব বিষয়ের শিক্ষকের বদলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে উর্দুর শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। যেখানে সেই স্কুলের মাত্র একজন ছাত্রীর ঐচ্ছিক বিষয় ছিল উর্দু। আর সেই ছাত্র বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। গুলি চালায় পুলিশ।

পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ এবং তাপসের। এমনকী, তাঁদের বাড়ির লোক অভিযোগ করে ,তাঁরা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁদের বাধা দেয় নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ।

দুই যুবকের মৃত্যুকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে যায় এলাকা। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। এখনও রাজেশ এবং তাপসের দেহ পোড়াননি গ্রামবাসীরা। মাটির নিচে কবর দিয়ে রাখা হয়েছে তাঁদের দেহ। কারণ, পরবর্তীতে যদি তদন্তের জন্য পুনরায় দরকার হয়। এই মৃত্যুকে ঘিরে গর্জে উঠেছিল সারা বাংলা। সকলেই ধিক্কার জানিয়েছিল রাজ্য সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনকে। আর তারপর থেকেই ২০ সেপ্টেম্বর দিনটি প্রত্যেক বছর রাজেশ এবং তাপসের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ ভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

গতকাল তাদের ফেসবুক পেজে উর্দু নিয়ে ভারত সরকারকে অনাবশ্যকভাবে আক্রমণ করেছে বাংলা পক্ষ।কিন্তু রাজেশ বা তাপসকে নিয়ে একটি লেখা বা পোস্টও করেনি তারা। গর্গ চট্টোপাধ্যায় বা কৌশিক মাইতি কারও মুখ থেকেও কিছুই শোনা যায়নি এই দিনটি নিয়ে।

তাহলে প্রশ্ন উঠছে বাঙালির স্বঘোষিত অভিভাবকদের এইরকম দ্বিচারিতা কেন? এমনিতেও বাংলা পক্ষকে নিয়ে বহুবার বহুজন বিভিন্ন অভিযোগ করেছে। নেটিজেনদের অনেকেরই মত উর্দু আগ্রাসন এবং ইসলামিক মৌলবাদের বিরুদ্ধে সেরকম ভাবে মুখ খোলে না বাংলা পক্ষ। কিন্তু সব সময় হিন্দি আগ্রাসন নিয়ে কথা বলে বাঙালিদের সঙ্গে দেশের অন্যান্য রাজ্যের মানুষদের মধ্যে একটা বিরোধ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে তারা।