পশ্চিমবঙ্গে ধারাবাহিক জেহাদি আক্রমণের প্রতিবাদে সরব ব্যাঙ্গালোরের বাঙ্গালীরা

রুখতে হবে হিন্দুর সর্বনাশ –

১৮ই  মে, শনিবার: আজ ব্যাঙ্গালোরে ঐতিহাসিক টাউন হলের সামনে “সেভ বেঙ্গল”-এর পক্ষ থেকে শহরে বসবাসকারী বহু বাঙ্গালী তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, অধ্যাপক, বিজ্ঞানী, ডাক্তার ও এই শহরে পড়তে আসা বাঙ্গালী ছাত্র, ছাত্রীরা সমবেত হয়েছিলেন এক বিশাল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে। পশ্চিমবঙ্গে ক্রমবর্ধমান জেহাদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গালোরের প্রবাসী বাঙ্গালীরা গর্জে উঠেছেন বারবার। ২০১৭র বসিরহাট দাঙ্গার বিরুদ্ধেও এই শহরে সংগঠিত হয়েছিল প্রতিবাদ। আর আজকের বিক্ষোভ সমাবেশটি ছিলো সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের ডায়মন্ড হারবার, সাতগাছিয়া অঞ্চলে ঘটে যাওয়া হিন্দু গ্রামগুলির উপর পরিকল্পিত জেহাদি অত্যাচারের প্রতিবাদে।

বিক্ষোভে সম্মিলিত বাঙ্গালী সমাজের সামনে বিভিন্ন বক্তারা বলেন যে গত শুক্রবার ১০ই মে রাত থেকে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতগাছিয়া বিধানসভার নহাজারী গ্রামে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের উপর ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক নির্যাতন শুরু হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার আলিপুর সদর সাব-ডিভিশনের বিষ্ণুপুর-২ নম্বর ব্লক ও বিষ্ণুপুর থানার অন্তর্গত এই নহাজারি গ্রাম। শনিবার ১১ মে রাত থেকে পুনরায় সেখানে হিংসাশ্রয়ী কার্যক্রম আরম্ভ হয় এবং ভোররাত পর্যন্ত হিংসার তান্ডব চলতে থাকে। বেছে বেছে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, গাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, স্থানীয় মসজিদের লাউডস্পিকার থেকে লাগাতার সাম্প্রদায়িক প্ররোচনামূলক ঘোষণা করে জেহাদী দাঙ্গাবাজদের উত্তেজিত করা হয়। তারপরেই বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র জেহাদী দাঙ্গাবাজরা বোমা, পিস্তল, তরোয়াল নিয়ে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নির্বিচারে তাঁদের বাড়িঘর, দোকানপাট লুঠপাট ও ভাঙচুর করে। বহু হিন্দু মারাত্মক ভাবে আহত হন। রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে আপামর হিন্দু এই ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং আক্রান্ত হিন্দুদের মধ্যে তৃণমূল ও বিজেপি – উভয় রাজনৈতিক দলের সমর্থকরাই রয়েছেন।

দুদিন ধরে চলা এই তান্ডবে এলাকায় ৫০টিরও বেশি সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। বগাখালী বাজারে হিন্দুদের দোকানপাট যথেচ্ছভাবে ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে জখম হয়েছেন এলাকার বহু মানুষ। পুলিশকে পর্যন্ত এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে জেলার বিভিন্ন থানাগুলি – নোদাখালি, বজবজ, উস্তি, রামনগর ও বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ও RAF একসঙ্গে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশ দেখেই জেহাদী দাঙ্গাবাজরা ব্যাপক ইটবৃষ্টি শুরু করে। চলে লাগামছাড়া বোমাবাজিও। জখম হন মহেশতলা থানার আইসি। জখম হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও। ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি।

বাংলার সমস্ত মিডিয়া যথারীতি এই নৃশংস হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা চেপে গেছে। কিন্তু সর্বভারতীয় ইংরেজি চ্যানেল Times Now এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। এছাড়াও ইংরেজি ও বাংলা ভাষার বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালেও ঘটনাটি বিস্তারিত ভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

এক প্রথম সারির বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে রাজ্যসভার বরিষ্ঠ সাংসদ শ্রী স্বপন দাশগুপ্ত এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করেছেন।

পরিস্থিতি বর্তমানে এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে সন্ত্রস্ত হিন্দুরা তাঁদের জীবন ও মহিলাদের সম্ভ্রম বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে পলায়ন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সনাতনী বাঙ্গালীর এই দুর্দিনে, সভামঞ্চ থেকে একই স্বরে গর্জে উঠলেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বক্তারা। বাংলার মাটি বাঁচানোর লড়াইয়ে অত্যাচারিত হিন্দুর পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানো ও সবধরণের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার শপথ নিলেন সমবেত ব্যাঙ্গালোর-প্রবাসী সুশিক্ষিত বাঙ্গালী সমাজ।