অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুতে খুনের মামলা হাসপাতালের সুপার ও ডেপুটি সুপারের বিরুদ্ধে

0
463

সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার, ডেপুটি সুপার এবং মেমারির এক চিকিৎসক ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তের নির্দেশ দিল সিজেএম আদালত। মৃতার স্বামী দেওয়ানদিঘি থানার ঘোষপাড়ার বাসিন্দা কল্লোল ঘোষ সিজেএম আদালতে স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের সুপার, ডেপুটি সুপার ও মেমারির নার্সিংহোমের চিকিৎসককে দায়ী করে আদালতে মামলা করেন। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তের জন্য দেওয়ানদিঘি থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম রতনকুমার গুপ্তা। এই ঘটনায় চিকিৎসক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

অভিযোগকারীর আইনজীবী রমেশ সিং বলেন, ‘‘মৃতদেহের ময়নাতদন্ত না করিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডায়াবেটিসের কারণে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী করে একথা বলল তা বুঝতে পারছি না। বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, স্বাস্থ্য কমিশন ও জেলার পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। তারপরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত খুনের মামলা রুজু করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।’’

দেওয়ানদিঘি থানার এক অফিসার বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের বিষয়ে কিছু জানা নেই। এ ধরণের কোনও নির্দেশ এখনও থানায় পৌঁছায়নি। আদালতের নির্দেশ খতিয়ে দেখে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ কুণালকান্তি দে বলেন, ‘‘অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি সবপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট জমা দেবে। তার আগে আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের মামলা করা হল। এর আগে মেমারি থানায় মামলা রুজু হয়েছে বলে শুনেছি।’’

কল্লোলবাবু এনডিআরএফের জওয়ান। বর্তমানে তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে কর্মরত। তিনি জানান, তাঁর স্ত্রী সৌমী ঘোষ সাত মাসের অন্ত্বঃস্বত্ত্বা ছিলেন। ১০ সেপ্টেম্বর রাতে তাঁর স্ত্রী সৌমি ঘোষ অসুস্থ বোধ করেন। তাঁকে মেমারির একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। ইঞ্জেকশন নেওয়ার পর তাঁর স্ত্রীর অসুস্থতা বাড়ে। এরপর তাঁকে বর্ধমানের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সেখানে তাঁর স্ত্রীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। তারপর বাড়িতেই ছিলেন। দু’সপ্তাহ আগে আবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ফের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তখনও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। শেষমেশ এনডিআরএফের কমান্ড্যান্ট বিষয়টি জেলাশাসককে জানান। জেলাশাসকের সুপারিশে তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়। ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর স্ত্রী ও গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ডায়াবেটিসে সৌমির মৃত্যু হয়েছে। কীভাবে ময়নাতদন্ত না করিয়ে মৃত্যুর কারণ বলা হল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।