বঙ্গদেশ ডেস্ক: ছাত্র জীবন থেকেই শুরু রাজনীতি। পরে শিক্ষকতাকে বেছে নিয়েছিলেন পেশা হিসেবে। পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধেই আঙুল উঠেছিল যৌন হেনস্থার। ছাত্রীকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সেই ব্যক্তিকেই প্রার্থী মনোনীত করেছে সিপিএম।
সেই ব্যক্তি হলেন ডঃ প্রীতি কুমার রায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী ঘোষণার পর দেখা যায় তিনি বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের সিপিএম মনোনীত প্রার্থী। পাঁচ বছর পরে আরও একবার বামেদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে কংগ্রেস। সেই জোটে হাত মিলিয়েছে আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফ। কিন্তু সেই সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী তালিকায় জায়গা দেওয়া হয়েছে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডঃ প্রীতি কুমার রায়ের বিরুদ্ধে এক রিসার্চ স্কলার যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। আর তারপরই একে একে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আসতে থাকে ভুরিভুরি অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ছাত্রীদের ভিডিও কলে তাঁকে খুশি করতে বলতেন। মহিলাদেরকে বিনা কারণে মেসেজ করে উত্যক্ত করতেন। লং ড্রাইভে মেয়েদেরকে জোরজবরদস্তি করে নিয়ে যেতেন এবং অসভ্যতামি করতেন।
২০০৯ সাল থেকে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। সেই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর বেশ ভালো প্রভাব ছিল। সেই সুবাদেই তিনি সকলের মুখ বন্ধ করে রাখতেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল ডঃ প্রীতি কুমার রায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় আন্দোলনের চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে যাদবপুরের পড়ুয়ারা। সেই তালিকায় রয়েছে প্রাক্তনীরাও।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বাম প্রার্থী ডঃ প্রীতি কুমার রায়। তিনি বলেছেন, “সম্পূর্ণটাই মিথ্যা অভিযোগ। রাজনৈতিক কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছিল এবং এখনও তার ধারাবাহিকতা চলছে। রাজনৈতিক ভাবে প্রতিহত করতে পারবে না জেনেই এই অসৎ উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে।” একই সঙ্গে তিনি একথাও বলেছেন, “জোর করে যে মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে, মানুষ এর জবাব দেবে।”
ওই অভিযোগ সিপিএমের ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি করেছেন সিপিএম প্রার্থী প্রীতি কুমার রায়। তিনি একথাও বলেছেন, “আমার সম্পর্কে মানুষ আগে থেকে সবই জানে। আমার ছাত্রছাত্রীরাও সবকিছু জানে। আমার ১২জন পিএইচডি ছাত্রছাত্রী রয়েছে, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। ৭০টির বেশি আন্তর্জাতিক লেকচার রয়েছে আমার হাতে। অপপ্রচার করে কিছুই হবে না।”
এই সমগ্র ঘটনার জন্য মূলত তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন অধ্যাপক প্রীতি কুমার রায়। তাঁর কথায়, “ প্রথমে অভিযোগ ছিল মানসিক হেনস্থার। তারপর সেটাকে যৌন হেনস্থা বলে প্রচার চালানো হয়েছিল। একদিন আসল সত্য প্রকাশিত হবেই। তৃণমূলের লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে এই নোংরা কাজ করেছে।”