‘একুশে’র মিথ, ‘জয় বাংলা’র মিথ্যা – ৭

সাম্প্রদায়িকতার করাল গ্রাসে

0
1501

পর্ব ৭ সাম্প্রদায়িকতার করাল গ্রাসে

(ষষ্ঠ পর্বের পর)

শেখ মুজিবের সরকার বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত করলেও, অন্যভাবে, বিশেষ করে আইনের ধারাবাহিকতা প্রয়োগাদেশ ১৯৭১ (The Laws of Continuance Enforcement Order, 1971) অনুসারে ১৯৬৫ সালে প্রণীত অবিভক্ত পাকিস্তানের শত্রু সম্পত্তি আইনকে বলবৎ রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশের ঊষালগ্ন থেকেই হিন্দুদের প্রতি সরকারি বৈষম্য চলতে থাকে। শত্রু সম্পত্তি আইনের মূল লক্ষ্য ছিল হিন্দুদের ভারতের নাগরিক তথা শত্রু বলে গণ্য করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় তাঁদের সম্পত্তি দখল করা। শেষ পর্যন্ত, হিন্দুদের তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়ে মুজিব সরকার ১৯৭৪র মার্চ মাসে শত্রু সম্পত্তি আইন বাতিল করে; পরিবর্তে প্রণীত হয় অর্পিত সম্পত্তি আইন যার আপাত উদ্দেশ্য চলে যাওয়া বিহারিমুসলিমদের সম্পত্তি সরকারী তত্ত্বাবধানে আনা। কিন্তু আইনের ফাঁক কিছু রেখে দেওয়া হয়েছিল, এবং জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে, এই আইনের সংশোধনের পর অবস্থার আরো বেগতিক ঘটে। শেষ পর্যন্ত অর্পিত সম্পত্তি আইনের ছত্রছায়াতেই চলে হিন্দু সম্পত্তি দখলের মোচ্ছব।

বাঙ্গালী হিন্দুদের ভাতে মারার জন্য প্রণীত এই আইনের ফলে হিন্দুদের কি চরম ক্ষতি হয়েছে তার কিছুটা হিসেব মেলে ডঃ আবুল বারকাত ও তাঁর সহযোগীদের প্রণীত কয়েকটি বই থেকে, বিশেষ করে An Inquiry into Causes and Consequences of Deprivation of Hindu Minorities in Bangladesh through the Vested Property (PRIP Trust, 2000) এবং Deprivation of Hindu Minority in Bangladesh: Living with Vested Property (Pathak Samabesh, 2008)। এই দুটি গবেষণামূলক গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি শুধুমাত্র সরকারি হিসেবেই ১১ লক্ষের উপর হিন্দু পরিবার এই আইনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হারিয়েছে ২০ লক্ষ একর জমি, যা বাংলাদেশের হিন্দুদের জমি মালিকানার ৪৫ শতাংশ।[1] তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, হিন্দুরা তাঁদের অধিকাংশ জমি হারান মুজিবুর সরকারের সময় থেকে জিয়া সরকারের পতন পর্যন্ত, অর্থাৎ, ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে, যখন জয় বাংলার মুহুর্মুহু স্লোগানে বাংলাদেশের আকাশবাতাস হচ্ছিল কম্পিত! ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে শুরু করে অবিভক্ত ভারতের বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী মাস্টারদা সূর্যসেন, রবি নিয়োগী ও দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ও অন্যান্যদের পারিবারিক সম্পত্তি আজ এই আইনের বদান্যতায় বেদখল হয়েছে। হিন্দুদের বিরুদ্ধে এই ভূমিজেহাদের ফলে তাই লাভবান হয়েছে সব পক্ষের সদস্যরাই। ২০০৬ সালের হিসেব অনুযায়ী বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত জমি দখলদারি বা উপভোগকারীদের সংখ্যার হার ও তাদের দ্বারা অধিকৃত জমির আনুপাতিক হার নিচে দেওয়া হল:

আওয়ামী লীগ ৩১.% এবং ১৩.%

বিএনপি ৪৫.% এবং ৬৭.%

জাতীয় পার্টি .% এবং ৭%

জামায়াতে ইসলামী .% এবং ৮.%

অন্যান্য বা অনির্ধারিত .% এবং ৩.%[2]

ভাতে মারার পাশাপাশি হিন্দুদের মানে ও প্রাণে মারাও থেমে থাকেনি। ছোটবড় দাঙ্গা, মন্দির আক্রমণ, নারী অপহরণের ট্র্যাডিশন সেই একাত্তরের পূর্বের মতোই চলছে। ১৯৬৪ সালে সুদূর কাশ্মীরে হজরত বাল হারিয়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ জুড়ে চলে হিন্দুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ ও হত্যালীলা। তারই পুনরাবৃত্তি আমরা দেখি ১৯৮৯, ১৯৯০ এবং ১৯৯২ সালে বাঙ্গালীর দেশ’ বাংলাদেশে, যখন অযোধ্যার রাম মন্দির আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় সারা দেশ জুড়ে হিন্দুবিরোধী তান্ডব। ১৯৯২র সংগঠিত দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে তসলিমা নাসরিন লেখেন তাঁর লজ্জাউপন্যাসটি, যা তৎকালীন জামায়াত সমর্থিত বিএনপি সরকার দ্বারা নিষিদ্ধ হয়। এই সময়ে ঘটে যাওয়া হিন্দু নির্যাতনের বিভিন্ন চিত্র আমাদের সামনে উপস্থিত করেছেন সব্যসাচী ঘোষদস্তিদার (Empire’s Last Casualty: Indian Subcontinent’s vanishing Hindu and other Minorities, Firma KLM, 2008) ও সালাম আজাদ (হিন্দু সম্প্রদায় কেন বাংলাদেশ ত্যাগ করছে?, পুনশ্চ, ২০০১)

প্রায় এক দশক পর ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও তার সহযোগী জামায়াত ও ইসলামী ঐক্য জোট নির্বাচনে জয়লাভ করলে শুরু হয় আর এক দফা হিন্দু নির্যাতন। জেলায় জেলায় খুন, ধর্ষণ, লুঠপাঠ অগ্নিসংযোগ চলে প্রায় ৫ মাস ধরে। এর মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক ছিল সিরাজগঞ্জের এক হিন্দু নাবালিকা পূর্ণিমা শীল ও বাগেরহাটের ছবি রানীর গণধর্ষিতা হবার ঘটনা।[3] ২০০৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দল তাঁদের ১০৭৮ পাতার রিপোর্টে বলেন যে, শুধু ধর্ষণের ঘটনাই ছিল ১৮ হাজারের অধিক, এবং শাসক গোষ্ঠীর সহায়তায় এরূপ সম্ভব হয়েছিল।[4]

এছাড়া, নির্বাচনের চার বছর পরে বেসরকারি উদ্যোগে তিন খন্ডে প্রকাশিত হয় শাহরিয়ার কবির[5] সম্পাদিত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন যাতে আছে ২৭৮৬টি সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রতিবেদন। শাহরিয়ার কবির যথার্থই বলেছেন, “এসব শ্বেতপত্রে বর্ণিত ঘটনাগুলো থেকে এটাই প্রতীয়মান — বাংলাদেশে নির্বাচন ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য উৎসব নয়; আতঙ্ক।“[6]

এরপর ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হলে, চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, রাজশাহী, ঢাকা ও সিলেট সারা বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হয় হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক হারে আক্রমণ। চলে লুঠপাঠ, অগ্নিসংযোগ মোট ২০টি জেলায় ৫০টি হিন্দু মন্দির ও ১৫০০ হিন্দু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[7]

পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৪ সালে বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে চলে আর একপ্রস্থ হিন্দু নির্যাতন। বিএনপি, জামায়াত ও তাদের সহযোগী দলগুলি এই নির্বাচনকে বর্জন করলেও নির্বাচনের প্রাক্কালে হিংসাত্মক ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা সহ বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের বাড়ি ও দোকানে চলে অগ্নিসংযোগ ও লুঠপাঠ, ঘটে নারী ধর্ষণ, বহু হিন্দু হন বাস্তুহারা। হাইকোর্টে পেশ করা পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের ২১টি জেলায় হিন্দুদের উপর আক্রমণের ১৬০টি ঘটনা ঘটে।[8] অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীরা বিএনপিজামায়াত সমর্থক হলেও, কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগের সদস্যরাও সামিল হন।[9]

এইসব বড় দাঙ্গা ছাড়া বিক্ষিপ্ত ভাবে হিন্দু নির্যাতন, অপহরণধর্ষণ, মন্দিরদোকানগৃহে আক্রমণ, অগ্নি সংযোগ, লুঠপাঠ বাংলাদেশের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা যার প্রভূত নিদর্শন রয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের একাধিক প্রতিবেদনে।

ক্রমাগত হিন্দু নির্যাতনের প্রতিফলন পড়েছে বাংলাদেশের জনচরিত্রে। ১৯৭৪ সালে যেখানে হিন্দু জনসংখ্যার অনুপাত ছিল ১৩.৫০ শতাংশ, ২০১১ সালে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৮.৯৬ শতাংশে। ডঃ বারকাত তাঁর অপর একটি  গ্রন্থ, Political Economy of Khas Land in Bangladesh (Muktobuddhi Prokasona, 2016)-এ দেখিয়েছেন যে, ১৯৬৪ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ১৩ লক্ষ হিন্দু বাংলাদেশ ত্যাগ করে, অর্থাৎ গড়ে দৈনিক ৬৩২ জন, যার অধিকাংশই ঘটেছে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর।[10]

১৯৪৬ সালে যে নোয়াখালী গণহত্যা সংগঠিত হয়েছিল জেলাকে হিন্দুশূন্য করার উদ্দেশ্যে, তার এক শতক পরে সমগ্র পূর্ববঙ্গই হয়ত হিন্দু শূন্য হতে চলেছে।

১৯৭১র পর জামায়াতের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ হয়, আর এক ধাপ এগিয়ে ১৯৭৩ সালে সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে সংবিধানে যুদ্ধাপরাধী ও অন্যান্য গণবিরোধীদের বিচারের আওতায় আনার বিধান যুক্ত করা হয়। কিন্তু মুজিবুর রহমানের মৃত্যু ও জিয়ার উত্থানের পর ১৯৭৭ সাল থেকে জামায়াতের নেতারা দেশে ফিরতে থাকেন। ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানি পাসপোর্ট হাতে ফিরে আসেন জামায়াতের আমির গোলাম আযম। জামায়াত দল হিসেবে বৈধতা না পেলেও, ১৯৭৯এর নির্বাচনে ৬ জন জামায়াত নেতা ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগের ব্যানারে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইতিপূর্বে গ্রেফতার হওয়া অপর এক রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রীও বানান। জিয়ার উত্তরসূরি এরশাদের রাজত্বকালে জামায়াতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। জামায়াতের উত্থান আর থেমে থাকেনি।

রাজনৈতিক কর্মকান্ড ছাড়াও জামায়েত উগ্র ইসলামী গোষ্ঠীগুলির টার্গেট হন বিশিষ্ট ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিত্বরা। ১৯৯৩ সালে তাসলিমার বিরুদ্ধে মৃত্যুর ফতোয়া জারী করা হয়। তার এক দশক পর, ২০০৪এ আক্রান্ত হন পাক সার জমিন সাদ বাদউপন্যাসের লেখক, বিশিষ্ট সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও কয়েক মাস পর জার্মানিতে তাঁর মৃত্যু ঘিরে ওঠে প্রশ্নচিহ্ন।

এরপর ২০১৩ সাল ইসলামীবাদীরা নিয়মিত ভাবে  শুরু করে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার সাহিত্যিকদের উপর প্রাণঘাতী আক্রমণ। নিহত হন আহমেদ রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাস, নীলয় চ্যাটার্জী সহ অনেকে। আহত হন আসিফ মহিউদ্দীন, সানিউর রহমান ও অন্যান্যরা। বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিচিত নাস্তিক বা ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগাররা আজ স্বদেশ হতে নির্বাসিত।

বর্তমান এই পরিস্থিতির প্রতিকারের সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ জামায়াত, হেফাজতে ইসলাম ও অন্যান্য উগ্র ইসলামী সংগঠনের শক্তিবৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশে এই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ক্রমশ আরো ঘনীভূত হতে বাধ্য।  আজ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বও বোঝে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে কোন না কোন কট্টর ইসলামী সংগঠনের সমর্থন লাগবেই। তাই বিএনপি যদি জামায়েতের সহযোগী হয়, তাহলে লীগ চায় হেফাজতে ইসলামের ঘনিষ্ঠ হতে —  ২০১৭ সালে যেমন তাদের দাবি মেনে পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেয় বহু হিন্দু সাহিত্যিকদের রচনা। অবশ্য বাংলাদেশের ইসলামীকরণ যত তার পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাবে, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলিকে এইসব ইসলামী সংগঠনের থেকে পৃথক করা কঠিন হয়ে উঠবে।

(ক্রমশঃ) 

পাদটীকা

[1] Abul Barkat, ‘Political Economy of Deprivation of Hindu Minority in Bangladesh’, in Abhijit Dasgupta, Mashiko Togawa and Abul Barkat edited Minorities and the State: Changing Social and Political Landscape of Bengal, Sage Publications, 2011, p. 99

[2] , pp. 109-110

[3] শেখ হাসিনা অবশ্য দুজনের দিকেই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

[4] ‘2001 violence on Hindus Caretakers, BNP, Jamaat blamed’, bdnews24.com, সংস্করণ ২৪ এপ্রিল, ২০১১, https://bdnews24.com/bangladesh/2011/04/24/2001-violence-on-hinduscaretakers-bnp-jamaat-blamed:

The report admitted that most of the post-election violence in 2001 could not be investigated due to some practical reasons. The integrated number of rape incidents, found from different sources, exceeded 18,000. The commission went for inquiring 3,625 incidents from 5,571 complaints submitted to it.

[…] The oppression started immediately after the caretaker government had assumed state power. The government did not take any initiative to stop atrocities on minority or the opposition leaders-activists because of its partisanship.

[5] মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনী ও রাজাকারদের মাত্রাছাড়া হিংসা এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি ভালবাসা, এই দুইয়ের সমন্বয়ে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমান সমাজের এক ক্ষুদ্র অংশের মধ্যে যথার্থ প্রগতিশীল মানসিকতার জন্ম দেয়।  নাস্তিক্যের পরিমাণও কারুর মধ্যে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ক্রমবর্ধমান ইসলামী মৌলবাদের নাগপাশে আতাতুর্কের তুরস্কের মতন বাংলাদেশেও এই প্রগতিশীল চেতনার পরিসর ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। অনেকে নিহত হয়েছেন, অনেকে প্রাণ বাঁচাতে হয়েছেন দেশত্যাগী। মুষ্ঠিমেয় যাঁরা বাংলাদেশে এখনো আছেন তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য শাহরিয়ার কবির ও তাঁর সহযোগীদের ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র গোষ্ঠী, এবং ডঃ আবুল বারকাতের মতো মানবতার পূজারীরা। নিজেদের প্রাণকে বাজি রেখে বাংলাদেশের নির্যাতিত সংখ্যালঘু হিন্দুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাঙ্গালী তথা সমগ্র হিন্দু সমাজের কাছে তাঁরা ধন্যবাদার্হ।

[6] শাহরিয়ার কবির, ‘নির্বাচনে সাম্প্রদায়িকতা ও গণমাধ্যম’, সমকাল, সংস্করণ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, https://samakal.com/todays-print-edition/tp-special-feature/article/18092018/নির্বাচনেসাম্প্রদায়িকতাগণমাধ্যম

[7] ‘Bangladesh minorities ‘terrorised’ after mob violence’, BBC News, ePublication 9 March 2013, https://www.bbc.com/news/world-asia-21712655

[8] ‘Police cite 160 attacks on Hindus, The Daily Star, ePublication 23 February 2014, https://www.thedailystar.net/police-cite-160-attacks-on-hindus-12578

[9] ‘সংখ্যালঘু পরিবারকে মারধর করে ভিটেমাটিছাড়া’, প্রথম আলো, সংস্করণ ১১ জানুয়ারি ২০১৪, https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/120564/সংখ্যালঘুপরিবারকেমারধরকরেভিটেমাটিছাড়া

[10]No Hindus will be left after 30 years, Dhaka Tribune, ePublication 20 Nov, 2016, https://www.dhakatribune.com/bangladesh/2016/11/20/abul-barkat-632-hindus-left-country-day/

এছাড়াও দেখুন, আবুল বারকাতের পূর্বোক্ত প্রবন্ধ, ‘Political Economy of Deprivation of Hindu Minority in Bangladesh: Living with the Vested Property Act’