চারদিনে তিনবার বাঘের হানায় নিখোঁজ মৎস্যজীবী

0
437

সুন্দরবন: কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে সুন্দরবনে ফের নিখোঁজ হয়েছেন এক মৎস্যজীবী। রবিবার সকালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার গোসাবা ব্লকের সুন্দরবনের ঝিলা ৬ নম্বর জঙ্গল এলাকায় নিখোঁজ হয়েছেন ৫৪ বছরের গোপাল বৈদ্য। কাঁকড়া এবং মাছ ধরতে গিয়ে সুন্দরবনে গত চারদিনে এই নিয়ে তিনজন মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে বাঘের হানায়।

জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতোই মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন গোসাবা ব্লকের সাতজেলিয়া অঞ্চলের ঠাকুরুণতলা কলোনি পাড়ার বাসিন্দা এই মৎস্যজীবী। এদিন গোপালের সঙ্গে ছিলেন প্রতিবেশী নমিতা বিশ্বাস, সুকদেব বাইন, প্রশান্ত মণ্ডল। নিখোঁজ মৎস্যজীবীর সঙ্গীরা জানিয়েছেন, নৌকা নিয়ে জঙ্গলের গভীরে গিয়েছিলেন তাঁরা। জঙ্গলের মধ্যে নৌকা রেখে মাছ-কাঁকড়া ধরার কাজ করছিলেন তাঁরা। সেই সময় নৌকায় বসে ভাত খাচ্ছিলেন গোপাল বৈদ্য।

আচমকাই গভীর জঙ্গলের ভিতর থেকে বেরিয়ে একটি বাঘ আক্রমণ করে গোপালকে। অতর্কিতে হামলায় হতভম্ব হয়ে জায় সকলে। কেউ কিছু বোঝার আগেই শিকার নিয়ে জঙ্গলের ভিতর চম্পট দেয় বাঘটি। প্রত্যক্ষদর্শী তিন মৎস্যজীবী জানিয়েছেন কাঁধে ধাবা বসিয়ে এক ঝটকায় গোপালকে জঙ্গলের মধ্যে টেনে নিয়ে যায় ওই বাঘটি। এখনও নিখোঁজ মৎস্যজীবীর দেহের হদিশ পাওয়া যায়নি। বনদফতরের কর্মীরা নিখোঁজ গোপাল বৈদ্যর দেহ খুঁজে বের করার চেষ্টায় তল্লাশি চালাচ্ছে।

বনকর্মীরা জানিয়েছেন, অনেক সময়েই নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। সেইসব জায়গা চিহ্নিত করে বহুবার বিভিন্ন সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে বনদফতরের তরফে। কিন্তু এক শ্রেণির মৎস্যজীবীর সবকিছু তোয়াক্কা করে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওইসব এলাকাতেই যান। এক্ষেত্রেও তেমন কিছু হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছেন বনকর্মীরা।

চারদিনে তিনবার বাঘের হানায় মৎস্যজীবীদের নিখোঁজের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রসঙ্গত ,গত ৩ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনের মরিচঝাঁপি জঙ্গল লাগোয়া চিলমারী খালে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় মৃত্যু হয় বাবুরাম রপ্তানের। গত ৪ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনের ঝিলা ৪ নম্বর জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা গিয়েছেন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বাসিন্দা মুন্না ওরফে রেজাউল গাজীর।