খালিস্তান আন্দোলন (৫): ইন্দিরার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস ও ভিন্দ্রান‌ওয়ালের পাঞ্জাবে বোঝাপড়া

চিন্ময়ানন্দ অবধূত

 

(৪র্থ পর্বের পর)

কংগ্রেসের আনুকূল্যে আকালি দলের বিরুদ্ধে ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে প্রমোট করার জন‍্য “দল খালসা” তো তৈরী হল, কিন্তু এরা সত‍্যিই খালসাদের মধ্যে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে তার একটা পরীক্ষা হ‌ওয়া দরকার। নেট প্র‍্যাকটিসের সুযোগ এসে গেল ১৯৭৯ -এর শিরোমণি গুরুদোয়ারা প্রাবন্ধক কমিটির (SGPC)ননির্বাচনে। (পঞ্জাব, হরিয়ানা আর হিমাচল প্রদেশের গুরুদোয়ারার পরিচালনার দায়িত্ব এসজিপিসির। সেই হিসেবে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিখ দলগুলোর কাছে। কিন্তু এখানে ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে চূড়ান্ত হতাশ হতে হল। ১৪০টি আসনের মধ্যে মাত্র চারটিতে দল খালসা জিত হাসিল করল। ওদিকে ক্লিন সুইপ করল আকালি দল। এসজিপিসির প্রেসিডেন্ট হলেন গুরচরণ সিং তোহরা। অবশ্য ভিন্দ্রান‌ওয়ালের থেকেও দুখী হয়েছিলেন জৈল সিং আর সঞ্জয় গান্ধী।

কিন্তু আকালি দলের সুখের সময় বেশিদিন স্থায়ী হয় নি, কারণ কেন্দ্রে জনতা দলে ভাঙন ধরল, আর তার প্রভাব পড়ল আকালি দলের ভিতরে। মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল জনতা দলের প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের বিরোধিতা করলেও এসজিপিসি চেয়ারম্যান গুরচরণ সিং তোহরা মোরারজি দেশাইয়ের সমর্থনে ছিলেন।

১৯৭৯ সালে জনতা দল সরকারের পতন হলে আর একটি নির্বাচন অনিবার্য হয়ে। ভিন্দ্রান‌ওয়ালে ১৯৮০র নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের হয়ে খোলাখুলিভাবে ভোটের প্রচার করতে থাকে। যাদের হয়ে ভিন্দ্রান‌ওয়ালে প্রচার করেছিল, তারা হলেন অমৃতসরে কেন্দ্রের প্রার্থী পঞ্জাব রাজ‍্য কংগ্রেসের সভাপতি আর এল ভাটিয়া, গুরদাসপুর কেন্দ্রের সুখবনস কৌর ভিন্দার আর তরণতারণের প্রার্থী গুরদয়াল সিং ধীলোঁ। পোস্টারে বড় বড় করে লেখা হতে থাকে ” Bhindranwale Supports Me”।

যদিও গুরদাসপুরের জনতা দলের প্রার্থী প্রাণনাথ লেখি নালিশ করেন এক সভায় ইন্দিরা গান্ধী আর ভিন্দ্রান‌ওয়ালে এক‌ই মঞ্চে হাজির ছিলেন। কিন্তু বিবিসির টিভি প্রোগ্রাম “প‍্যানোরামা”য় ম‍্যাডামকে এই নিয়ে চেপে ধরা হলে ম‍্যাডাম তো অস্বীকার করে যান। উলটে তিনি বলেন, একজন প্রার্থীর হয়ে ভিন্দ্রান‌ওয়ালে একটু আবেদন করেছিল মাত্র।

জনতা দল সরকারের অপদার্থতার ফলে ১৯৮০-এর জানুয়ারির ইলেকশনে কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে। ইন্দিরা গান্ধী দিল্লির সিংহাসনে বসেই সবার আগে পঞ্জাবে আকালি – জনতা সরকারকে ডিসমিস করলেন। এবং কি আশ্চর্য, ম‍্যাডাম জৈল সিংকে গৃহমন্ত্রী করলেও পঞ্জাবের মুখ‍্যমন্ত্রীর আসনে বসান জৈল সিংয়ের “দুষমণ” দরবারা সিংকে, যিনি জৈল মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নিয়মিত ম‍্যাডামের কাছে জৈল সিংয়ের নামে নালিশ করতেন। এর সরল কারণ হল ইন্দিরা গান্ধী কখন‌ও চাইতেন না গান্ধী পরিবার ছাড়া অন‍্য কোন কংগ্রেসী নেতার তাঁর নিজের রাজ‍্যে একটি দৃঢ় ভিত্তি তৈরী হোক। সেক্ষেত্রে সেই নেতা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবেন যা গান্ধী পরিবারের পক্ষে ক্ষতিকর। দরবারা সিং প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। সুতরাং ভিন্দ্রান‌ওয়ালের কট্টরপন্থী মনোভাব দরবারা সিংয়ের পছন্দ না হ‌ওয়ার কথা। এদিকে জৈল সিংয়ের তুরুপের তাস ছিল ভিন্দ্রান‌ওয়ালে। দরবারা সিং বেছে বেছে সেইসব মন্ত্রী, আধিকারিক এবং পুলিশ অফিসারদের নিয়োগ করতে থাকেন যারা প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ এবং উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে তৎপর।

কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরেই নিরঙ্করীদের সঙ্গে ভিন্দ্রান‌ওয়ালের অনুগামীদের গ‍্যাংওয়ার শুরু হয় । ২৪ শে এপ্রিল নিরঙ্করীদের নেতা গুরবচন সিংকে হত্যা করা হয়। বস্তুত এই সময় থেকেই পঞ্জাবে শুরু হয় কুখ্যাত জঙ্গল রাজ যা বজায় থাকে নব্বই দশকের শুরু পর্যন্ত।

দরবারা সিংয়ের সরকার অবশ্য চুপচাপ বসে ছিল না। কিন্তু ভিন্দ্রান‌ওয়ালে সরকারের সঙ্গে কুমিরডাঙা খেলা শুরু করে, কেননা তার মাথায় আছে জৈল সিং আর ম‍্যাডামের পবিত্র আশির্বাদ।

পুলিশ গুরবচন সিংয়ের খুনের জন্য ভিন্দ্রান‌ওয়ালের পিছনে পড়তেই ভিন্দ্রান‌ওয়ালে সোজা গিয়ে ঢোকে স্বর্ণমন্দির সংলগ্ন গুরু নানক নিবাসে। গুরু নানক নিবাস এসজিপিসি পরিচালিত গেস্ট হাউস। সেখানে পুলিশ পাঠানো হলে এসজিপিসির থেকে প্রতিবাদ আসতে পারত। গৃহমন্ত্রী জৈল সিং যখন সংসদে বিবৃতি দিলেন ভিন্দ্রান‌ওয়ালে এই খুনের জন্য দায়ী নয়, তারপরেই ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে আবার প্রকাশ‍্যে ঘুরে বেড়াতে আর নিরঙ্করীদের বিরুদ্ধে বিষ ছড়াতে দেখা গেল। একটি বক্তৃতায় খোলাখুলিভাবে বলেও দিল, গুরবচন সিংয়ের খুনিরা তার সামনে এলে সে তাদের সোনা দিয়ে ওজন করবে। জৈল সিংয়ের মুখ পুড়লেও তাঁর তখন ধৃতরাষ্ট্রের মত অবস্থা। আসলে জৈল সিং তখনও দরবারা সিংয়ের বিরুদ্ধে ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে লেলিয়ে দেওয়ার প্ল‍্যান করছেন।

হিন্দু আর শিখদেরর মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘাত শুরু হতে যাচ্ছে দেখে পঞ্জাব সরকার ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে লাইসেন্সড অস্ত্র সমেত আত্মসমর্পণ করতে বলে। বলা বাহুল্য ভিন্দ্রান‌ওয়ালে এতে কর্ণপাত করার প্রয়োজন মনে করে না।

১৯৮১ -এর ৯ সেপ্টেম্বর জলন্ধরের মিডিয়া ব‍্যারন লালা জগৎ নারাইনকে ভিন্দ্রান‌ওয়ালের অনুগামীরা হত্যা করে। জগৎ নারাইন ভিন্দ্রান‌ওয়ালের তীব্র সমালোচক এবং নিরঙ্করীদের কট্টর সমর্থক ছিলেন। সেই সময় ভিন্দ্রান‌ওয়ালে ছিল হরিয়ানার হিসার জেলার চান্দো কালান গ্রামে। পাঞ্জাবের মুখ‍্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাঞ্জাব পুলিশের একটি স্পেশাল টিম ডিআইজি ডিএস মাঙ্গারের নেতৃত্বে চান্দো কালানে র‌ওনা দেয়।

এদিকে গৃহমন্ত্রী জৈল সিংয়ের ফোন আসে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভজনলালের কাছে। ভজনলাল এর আগে জনতা দলে ছিলেন। ১৯৮০ তে নিজের গদি বাঁচাতে বিধায়ক সমেত কংগ্রেসে যোগ দেন। গদি বাঁচলেও ভজনলালকে কংগ্রেসের নেতারা সন্দেহের চোখে দেখতেন। এই কারণে আনুগত্য দেখানোর জন্য ভজনলালের ইন্দিরা এবং কংগ্রেস ভজনা মাঝে মাঝে মাত্রা ছাড়িয়ে যেত। ভজনলালের আদেশে হরিয়ানা সরকারের গাড়ি ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে পাঞ্জাবে তার হেডকোয়ার্টার্স চক মেহতা গুরদোয়ারায় ছেড়ে দিয়ে আসে। প্রতিটি পুলিশ চেকপোস্টে গৃহমন্ত্রকের কঠোর নির্দেশ ছিল, ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে কিছু করা যাবে না। পাঞ্জাব পুলিশ এবং পাঞ্জাব সরকারের হতাশা এবং ক্রোধ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়‌।

ম‍্যাডাম অবশ্য এতটা বাড়াবাড়ির পক্ষে ছিলেন না। একেই একবার ইমার্জেন্সির সময় বেশি বাড়াবাড়ি করার ফল ভালো হয় নি।

যাই হোক দুইদিন পর ম‍্যাডামের অফিস থেকে সবুজ সংকেত আসে। পাঞ্জাব পুলিশের তিনজন সিনিয়র অফিসার চক মেহতায় গিয়ে ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতার হ‌ওয়ার আগে ভিন্দ্রান‌ওয়ালে পাঞ্জাব সরকারের বিরুদ্ধে একটা গরম গরম বক্তৃতা দেয়। শুধু তাই নয়, সেইসময় ভিন্দ্রান‌ওয়ালের সঙ্গে দেখা যায় ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সন্তোখ সিংকে। সন্তোখ সিং নিজেও একটি উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেয়।

ভিন্দ্রান‌ওয়ালের গ্রেফতারের পরেই পাঞ্জাবে ভিন্দ্রান‌ওয়ালের অনুগামীদের গুণ্ডামি শুরু হয়ে যায়। সাত জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়। অমৃতসরের কাছে একটি মালগাড়িকে বেলাইন করা হয়। ২৯শে সেপ্টেম্বর কয়েকজন শিখ উগ্রপন্থী ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানকে হাইজ্যাক করে লাহোরে নিয়ে যায়, তাদের দাবি নিঃশর্তভাবে ভিন্দ্রান‌ওয়ালের মুক্তি। ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে যে পুলিশ অফিসারেরা গ্রেফতার করতে গিয়েছিলেন, তাদের শিক্ষা দিতে পাটিয়ালার ডিআইজির অফিসে একটি বিস্ফোরণ হয়। একটুর জন্য ডিআইজি বেঁচে যান।

ভিন্দ্রান‌ওয়ালে কিন্তু লুধিয়ানার একটা রেস্ট হাউজে বেশ জামাই আদরে ছিল। একমাসের মধ‍্যেই জৈল সিং আবার পার্লামেন্টে বিবৃতি দেন জগৎ নারাইনের খুনের ঘটনায় ভিন্দ্রান‌ওয়ালের বিরুদ্ধে কোনো উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায় নি। ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে সসম্মানে মুক্তি দেওয়া হয়। যদিও এই সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের নিজের, কোনও আদালতের নয়। পঞ্জাবের একজন বরিষ্ঠ কংগ্রেসের নেতা পরে বিবিসির সাংবাদিক সতীশ জেকবকে বলেছিলেন, ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং ইন্দিরা গান্ধী, ভিন্দ্রান‌ওয়ালের বন্ধু সন্তোখ সিংয়ের অনুরোধে।

জেল থেকে বেরোনোর পর ভিন্দ্রান‌ওয়ালে নিজেকে সুপারহিরো ভাবতে থাকে। পঞ্জাব ভিন্দ্রান‌ওয়ালের সঙ্গে পরিচিত, তাই ভিন্দ্রান‌ওয়ালে তার শক্তি প্রদর্শনের জন্য বেছে নেয় রাজধানী দিল্লিকে। পঞ্জাব থেকে কতগুলো বাসের কনভয় দিল্লিতে নিয়ে আসে ভিন্দ্রান‌ওয়ালে। বাসের ছাদে লাইসেন্স বিহীন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বসে থাকে ভিন্দ্রান‌ওয়ালের চ‍্যালারা। এমনকি সেই মিছিল চলে আসে পার্লামেন্টের উপকন্ঠে গুরদোয়ারা বাংলা সাহিবে। গৃহমন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এই মিছিলে যোগদান করে দিল্লি গুরদোয়ারা ম‍্যানেজমেন্টে কমিটির সদস্যরা‌, এই কমিটি তখন নিয়ন্ত্রিত হত কংগ্রেসের দ্বারা। কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিল ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সন্তোখ সিং।

সন্তোখ সিংয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগদানকারী রাজীব গান্ধী। Picture Courtesy: Amritsar, Mrs Gandhi’s Last Battle. By Mark Tully and Satish Jacob.

মাস দুই পরে ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে আবার দিল্লিতে আসতে হয়, এবার সন্তোখ সিংয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে। ২১ শে ডিসেম্বর একটা ট্রাফিক সিগন‍্যালে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর বুলেটে সন্তোখ সিংয়ের মৃত্যু হয়। হাসপাতাল থেকে সন্তোখ সিংয়ের মৃতদেহ নিয়ে আসতে যান জৈল সিং আর রাজীব গান্ধী। ইতিমধ্যে বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যু হয়েছে। ইন্দিরা উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছেন রাজীবকে।

সন্তোখ সিংয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে তোলা একটি ফটোতে জৈল সিং আর ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে একসঙ্গে বসে থাকতে দেখা যায়। তবে জৈল সিংয়ের উপস্থিতি ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে খুশি করতে পারেনি। জৈল সিং নিজের দাড়িতে কলপ করতেন, যা শিখ ধর্মে নিষিদ্ধ। ভিন্দ্রান‌ওয়ালে পরে মন্তব্য করেছিল, “পঞ্জাবের গ্রামে একটা প্রথা চালু আছে। কেউ যদি তার বন্ধুর বোনের সঙ্গে কুকর্ম করে তবে তার মুখে কালি লাগিয়ে আর জুতোর মালা পরিয়ে উল্টো করে গাধার পিঠে চাপিয়ে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। আমার অবাক লাগে এই দেখে কেউ কেউ নিজের থেকে মুখে কালো রং লাগায়। কে জানে কার বোনের সঙ্গে এরা কুকীর্তি করে এসেছে !”

আসলে ভিন্দ্রান‌ওয়ালের কাছে কংগ্রেসের প্রয়োজন তখন ফুরিয়ে গিয়েছিল। তার হাত ধরতে এগিয়ে এসেছিল এক নতুন বন্ধু, যাদের চেপে রাখার জন্য কংগ্রেস ভিন্দ্রান‌ওয়ালেকে হিরো বানিয়েছিল, সেই আকালি দল।

(ক্রমশঃ)

তথ‍্যসূত্র:

1.The Khalistan Conspiracy .GBS Sidhu ( former RAW officer)

2. Amritsar, Mrs. Gandhi’s Last Battle. Mark Tully and Satish Jacob.

3 India, The Siege Within. M J Akbar.

ছবি: সন্তোখ সিংয়ের অন্ত‍্যোষ্টিতে ভিন্দ্রান‌ওয়ালে আল জৈল সিং একসঙ্গে। Courtesy : The Khalistan Conspiracy. GBS Sidhu.