বঙ্গদেশ ডেস্ক: ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের কাশ্মীর ঝামেলা নতুন কিছু নয়। এটা নিয়ে এর আগে দুটো দেশের মধ্যে একাধিক যুদ্ধ ও হয়ে গেছে। আর সেটার সমাধান করা সম্ভব নাকি আলোচনার মাধ্যমে! শ্রীলঙ্কায় গিয়ে এমনই বার্তা দিতে দেখা গেল পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। তাঁর দাবি, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেও তা কার্যকর হয়নি। এভাবেই কার্যত কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান না হওয়ার দায় ভারতের উপরেই চাপাতে চাইলেন ইমরান। যদিও এর আগে পাক প্রশাসন প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারত কে দোষারোপ করে এসেছে। তাই এটা নতুন কোনো বিষয় নয়।
ইমরান খান এই আগে যখনই বিদেশের কোনো দেশে গেছেন, তখনই হয় দেশের জন্য ভিক্ষা চেয়েছেন, নইতো কাশ্মীর নিয়ে তোতাপাখির বুলি আওরেছেন। এবারের শ্রী লঙ্কা সফরেও দেখা পরলো সেই একই চিত্র।
শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় এই বিষয়ে কথা বলেন তিনি। পরিষ্কার জানান, ”আমাদের একমাত্র মতভেদ কাশ্মীর নিয়ে। আর সেটা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব। আমি ক্ষমতায় এসেই আমাদের প্রতিবেশী ভারতকে এবিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেছিলাম উপমহাদেশের অগ্রগতির জন্যই আমাদের মতভেদকে দূর করা দরকার।” ইমরানের আশা, সেই সময় তাঁর প্রস্তাব কার্যকর না হলেও অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই আলোচনার টেবিলে বসবে দুই দেশ। যদিও ঋণের বোঝায় জর্জরিত পাকিস্তানের অধিপতির মুখে কাশ্মীর ছাড়া অর্থনীতি সংস্কার নিয়ে কোনো কথাই শোনা যায় নি।
এদিন ভারতের পক্ষে আলোচনার নেতৃত্বে ছিলেন অজিত দোভাল। তাই আলোচনার সিদ্ধান্ত যে ভারতের মর্জি মত হয়েছে এটাই স্বাভাবিক। এদিন তাই এত যুগ পর অবশেষে পাকিস্তান কে দেখা গেল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে।পাকিস্তান জঙ্গিদের সমর্থন করার রাস্তা থেকে সরে না এলে ভারতের পক্ষে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা যে সম্ভব নয়, সেকথা বারবার জানিয়েছে নয়াদিল্লি। গতকালও ইসলামাবাদকে ‘জঙ্গিদের আঁতুড় ঘর’ বলে তোপ দেগেছে ভারত। স্বাভাবিক ভাবেই তেমন কোনও প্রসঙ্গ ইমরানের বক্তৃতায় ছিল না। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে পাঠানকোটে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পরই ভারত শান্তি আলোচনা স্থগিত রাখে। ফলে ইমরানের ক্ষমতায় আসার পরে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়। সেই সব প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে শান্তির বার্তা দিয়ে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখার চেষ্টা করলেন ইমরান। দায় চাপাতে চাইলেন ভারতের উপরে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত বছরের যে দিনে বালাকোট এ ভারত বোমা ফেলে এসেছিল, এবছরে সেই দিনই এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হল। এবারেও নেতৃত্বে ভারত।