মাতৃভাষা বাঙ্গলার সঙ্গে বৈষম্য! প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল ঝাড়খন্ডের জনগণের

0
1496

বঙ্গদেশ ডেস্ক:বাঙ্গলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রবিবার সন্ধ্যায় একটি মিছিলের আয়োজন করে সাঁওতাল পরগনা বিভাগের ছয়টি জেলায় এন আই সির প্রোফাইলে মাতৃভাষা বাঙ্গলাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করা হয়েছে।সমিতির স্টেট সেক্রেটারি গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও যুগ্ম সচিব শ্যাম রায়ের নেতৃত্বে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। এই মিছিলে জেলার এন আই সির প্রোফাইলে বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে ।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এডমিনিষ্ট্রেটিভ ও রাজ্য ভাষা বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারের প্রধান সচিব বন্দনা দাদেল রাজ্যে জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক ও উপ জাতি ভাষার একটি বিবৃতি জারি করেছেন ।ওই বিবৃতিতে রাজ্যের এগারটি জেলায় বাঙ্গলা ভাষাকে আঞ্চলিক ভাষার আওতায় আনা হয়েছে। সেই জেলাগুলি হল রাঁচি, পূর্ব সিংভূম ,সরায়কেলা , দুমকা ,জামতাড়া ,দেওঘর, পাকুড় ,সাহেবগঞ্জ, গোড্ডা ,বোকার, ধানবাদ জেলায় বাঙ্গলাকে আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দান করা হয়েছে ।

বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতি ঝাড়খণ্ডের যুগ্ম সচিব শ্যাম রায় জানিয়েছেন, উর্দূ ভাষাকে রাজ্যের ২৪ টি জেলায় আঞ্চলিক ভাষার পরিধিতে আনা হলেও সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগণের ভাষাকে মাত্র ১৩ টি জেলায় আঞ্চলিক ভাষার পরিধিতে না এনে বৈষম্য করা হয়েছে ।প্রোফাইলে জেলার ভাষা হিসেবে হিন্দি ও সাঁওতালিকে দেখান হয়েছে ।সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলা ও বিভাগের সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগণের মাতৃভাষা বাঙ্গলা ।এই অঞ্চলের জমির নকশা পর্চাও বাঙ্গলা ভাষায় ।সম্প্রতি ঝাড়খন্ড রাজ্য সরকার বিভাগের ছয়টি জেলায় বাঙ্গলা ভাষাকে আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ।

বাঙ্গলা হল রাজ্যের দ্বিতীয় রাজ ভাষা ।রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশন বাঙ্গলা ভাষাকে পূর্ব ভাষা ভিত্তিক সংখ্যালঘুর স্বীকৃতি জানিয়েছে ।সেই সঙ্গে বিহারের ভাগলপুর কামিশনারীর আঞ্চলিক ভাষা অঙ্গিকা কে সাঁওতাল পরগনা বিভাগের ছয় টি জেলা লাতেহারে মগহী , পালামৌ ও গড়বা জেলায় এবং ভোজপুরীকে আঞ্চলিক ভাষার আওতায় এনে ভাষার নামে ভোটের রাজনীতি শুরু হয়েছে ।সমিতি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোর্টের দ্বারস্থ হবে বলে জমিয়েছেন শ্যাম বাবু ।

রাষ্ট্র সংঘ এবছর মাতৃভাষা দিবসের থিম নির্ধারিত করে তথ্য প্রযুক্তির বহুভাষী শিক্ষার ব্যবহার- চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাকে নির্ধারিত করেছে ।সমিতি ওই থিমের বাস্তবায়নের দাবি তুলেছে ।মিছিলে জয়দেব গড়াই, কুন্দন অধিকারী, অনিমেষ মণ্ডল ,রুদ্রনাথ গড়াই ,ধুর্যটি মাহান্ত ,অজয় কুমার সিংহ ,কানাই পাল ও প্রণবানন্দ বিদ্যা মন্দিরের শিক্ষক ও ছাত্ররা হাজির ছিলেন ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ঝাড়খণ্ড বঙ্গভাষী সমিতির দাখিল করা একটি রিট পিটিশনে ঝাড়খণ্ডের জনসংখ্যার ৪২% বাঙ্গলাভাষী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি পরবর্তীতে, ২০১৯ সালে জামশেদপুরের বিজেপি সাংসদ বিদ্যুৎবরণ মাহাতো সংসদে বাঙ্গলায় শপথ নেন।