মেঘালয়ে উদ্বাস্ত হবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে কুড়ি হাজার বাঙ্গালী

0
1270

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- সাত পুরুষের বাস, কিন্তু সিএএ-আইনের দোহাই দিয়ে বাঙলাদেশী তকমা দেওয়া হচ্ছে তাদের। এই আইনকে হাতিয়ার করে উত্তর-পূর্বে কয়েক প্রজন্ম ধরে থাকা বিশেষত বাঙ্গালী হিন্দু সম্প্রদায়কে সেখানের উপজাতি গোষ্ঠীর মানুষ আলাদা করছেন এবং ভয় দেখাচ্ছেন বিশেষত ইছামতী বা ভোলাগঞ্জ অঞ্চলের মানুষকে। মেঘালয়ে বাংলাদেশ লাগোয়া এই ছোট্ট দুটো জনপদের আট হাজারেরও বেশি পরিবারের কুড়ি-বাইশ হাজার বাঙালি হিন্দু গত সাত মাস ধরে যেন জিম্মী বা পণবন্দি। মেঘালয়ের কয়েকটি এনজিও ও ছাত্র সংগঠনের জুলুমে তাঁদের রুটি-রোজি বন্ধই শুধু নয়, রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় অন্নসংস্থান পর্যন্ত হচ্ছে না। সারা দেশে আনলক শুরু হয়ে গেলেও মেঘালয়ের বিভিন্ন অংশে এখনো আন্তঃজেলা পরিবহন শুরু হয়নি। এরফলে ইছামতী, ভোলাগঞ্জ, কালীবাড়ি, কালাটেকের প্রায় আট হাজার বাঙালি হিন্দু পরিবারর কান্না খবরে পৌঁছয়নি।

চলতি বছরের শুরুর দিকে খাসি শিক্ষার্থীদের ইউনিয়নের সদস্য এবং অনুপজাতির সদস্যদের মধ্যে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন সংঘর্ষের পরে প্রায় ৪০০ অনাদিবাসীরা মেঘালয়ের ইছামতি ছেড়ে গেছে।

ইছামতীতে অনুপজাতি দ্বারা আক্রান্ত হওয়া খাসির এক যুবক নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধিতা এবং খাসির উপজাতি ও অনুপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। রাজ্যে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার জন্য অভ্যন্তরীণ-লাইন পারমিট কার্যকর করা হয়েছে।

বিষয়টি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তের নিকটবর্তী মেঘালয়ের ইছামতী অঞ্চলে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এখানে সংগঠিত প্রতিবাদ যা পরে সংঘর্ষে রূপান্তরিত হয়েছিল তা গত কয়েকমাসে একাধিক প্রাণহানির কারণ হয়েছে। এই সংঘর্ষের ফলে শিলং সহ মেঘালয়ের অন্যান্য অংশেও সহিংসতার কারণ হয়েছে।

হিননিউইট্রিপ জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি চরমপন্থী দল দ্বারা জারি করা একটি আলটিমেটামের ফলে এই জাতিদাঙ্গা শুরু হয়েছিল, যা বাঙ্গালী হিন্দুদের এক মাসের মধ্যে ইছামতী ও মাজাই অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছিল। এক বিবৃতিতে এইচএনএলসির সাধারণ সম্পাদক সাইনকুমার নংট্রাও বাঙ্গালী হিন্দুরা এই গোষ্ঠীর বক্তব্যকে মানতে ব্যর্থ হলে “গণহত্যার” হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।

বাঙ্গালীদের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদে সাত তারিখ পথে নামে বরাক ফোরাম। বরাক ফোরামের তরফ থেকে দেবরাজ দাশগুপ্ত, আমরা বাঙ্গালীর তরফ থেকে সাধন পুরকায়েস্থ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র সেবা সংস্থার পক্ষ থেকে জয়দীপ ভট্টাচার্য্য, সারা আসাম বাঙ্গালী যুব ছাত্র সংস্থার পক্ষ থেকে রথীন্দ্র দাস সহ বহু সাধারণ মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেন।