গুজরাট থেকে পশ্চিমবঙ্গের অপহৃত হিন্দু নাবালিকাকে উদ্ধার,আটক শহীদুল রেহমান

0
1555

বঙ্গদেশ ডেস্ক: চলতি সপ্তাহে গুজরাট থেকে এক হিন্দু নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়েটিকে এক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে অপহরণ করেছিল শহীদুল রেহমান নামের এক মুসলিম যুবক। উদ্ধারের পর মেয়েটি জানিয়েছে যে অপহরণ করে আটকে রাখা অবস্থায় শহীদুল ইসলাম তাকে প্রতিদিন জোরপূর্বক কোরান ও নামাজ পড়তে বাধ্য করতো।

একটি বেসরকারি সংস্থার একজন কাউন্সিলরের সাথে মেয়েটির কথোপকথনের একটি রেকর্ড অনুযায়ী, শহীদুল রেহমান তাকে প্রতিদিন নামাজ পড়ার নিয়মাবলি শেখানোর জন্য জোরপূর্বক চেষ্টা করতো এবং তাকে কোরানের আরবী আয়াত পড়ে শোনাতো যাতে সে কোরান পড়া শিখতে পারে। উল্লেখ্য, এই বেসরকারী সংস্থাটি মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্যে সাহায্য করেছে। ১৪ বছরের এই হিন্দু বালিকাটি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার হামিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। মেয়েটি জানিয়েছে যে তাকে অপহরণ করে আটকে রাখার পর শহীদুল রেহমান একজন লোককে নিয়ে আসে এবং মেয়েটিকে তার সামনে একটি কাগজ দিয়ে তা পড়তে বলে। উল্লেখ্য এই কাগজটি ছিল একটি নিকাহনামা। এরপরেই শহীদুল তাকে জানায় যে সে এখন থেকে মেয়েটির স্বামী এবং বারংবার তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

৬ অক্টোবর তারিখে মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়। সেদিনই জীবনতলা থানায় একটি FIR দায়ের করা হয়। দিল্লি কেন্দ্রীক একটি বেসরকারী সংস্থা মিশন মুক্তি ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি এই অপহরণের ঘটনা সম্পর্কে অবগত হওয়ার মেয়েটিকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে এবং পশ্চিমবঙ্গের সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে। পুলিশের সহায়তায় সংস্থাটি গুজরাটে রেহমানের লোকেশন তা জানতে সক্ষম হয় কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। কারণ টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যাচ্ছিল না। দিন পেরিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু মেয়েটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না সেই সাথে বাড়ছিল মেয়েটির অন্য রাজ্যে পাচার হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও। এরপর সংস্থাটি নয়া দিল্লি কেন্দ্রীক ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন (NCPCR) অফ চাইল্ড রাইটস এর সাহায্য চায়।

NCPCR এর মধ্যস্থতায় কেসটি পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি – র অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিট (AHTU) এর কাছে হস্তান্তরিত হয়। এগারো নভেম্বরে রেহমানের কারেন্ট লোকশন জানতে সমর্থ হয় AHTU। সাথে সাথেই AHTU হিন্দু মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য গুজরাটের রাজকোটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মেয়েটিকে উদ্ধারের পর সে জানায় রেহমান তার ওপর অনেকবার যৌন নির্যাতন চালিয়েছে এবং মেডিকেল রিপোর্টেও কনফার্ম করা হয়েছে যে তার ওপর যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। শহীদুল রেহমানের পশ্চিমবঙ্গে এক স্ত্রী রয়েছে। মেয়েটিকে উদ্ধার করার পর সে তার পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। বর্তমানে সে সিআইডি কাস্টোডিতে রয়েছে এবং কিছু আইনী প্রক্রিয়া শেষ করার পর তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। শহীদুল রেহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ ছাড়াও POCSO (Protection of Children from Sexual Offences) আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।