একজন সচেতন মুসলমান হিসাবে পূজা উদ্বোধন না করার দাবী করলো সাকিব

0
1276

বঙ্গদেশ ডেস্ক: কিছুদিন আগে কলকাতায় কালী পূজা উদ্বোধন করে বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পরপরই বাংলাদেশের উগ্র মুসলিমদের রোষের মুখে পড়েন সাকিব। এবার সোমবার সন্ধ্যায় একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নিজের পক্ষে সাফাই দিলেন সাকিব। সাকিবের দাবী, তিনি কলকাতায় কোনও পূজার উদ্বোধন করেননি। একজন সচেতন মুসলমান হিসাবে একাজ তিনি কখনও করবেনও না।

সাকিব সেদিনের প্রসঙ্গে সেই ভিডিওবার্তায় বলেন, যে অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন সেটি কোনও ধর্মীয় পূজার মণ্ডপ ছিল না। মূল মণ্ডপে নয়, মণ্ডপের পাশে একটি মঞ্চে আয়োজন হয়েছিল সেই অনুষ্ঠানের। প্রায় ৪০ মিনিটের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান শেষে মণ্ডপ থেকে বের হওয়ার সময় তাকে মণ্ডপে একটি প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের জন্য অনুরোধ করেন পূজার আয়োজক পরেশ পাল। ফলে ২ মিনিটের জন্য মঞ্চে উঠে প্রদীপটি প্রজ্জ্বলন করেন তিনি। সাকিবের দাবী সংবাদমাধ্যমগুলো সেই ছবি দেখিয়ে তিনি কালীপূজা উদ্বোধন করেছেন বলে দাবী করছে। সাকিব সেই সাথে আরও দাবী করেছেন যে পূজার প্রচারণার লিফলেট দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে কালী পূজার উদ্বোধক তিনি নন। লিফলেটে পূজার উদ্বোধক হিসেবে অন্য লোকের নাম রয়েছে এবং মণ্ডপে সাকিব একটি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেছেন মাত্র।

সাকিব আরও বলেন, ” আমার ধর্মকে ছোট করে অন্য ধর্মকে বড় করার কোনও উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আমার মনে হয় ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। ভবিষ্যতে আমি ইসলামের নির্দেশ মেনে চলার চেষ্টা করবো। আমরা মুসলমানরা অবশ্যই এক থাকবো। আমাদের এক থাকা দরকারী। আলাদা হয়ে গেলেই আমরা দুর্বল। এক থাকলেই আমরা শক্তিশালী। ”

সাকিবের বক্তব্য, ” মিনিট ২ সময় আমি পূজামণ্ডপে ছিলাম। সেই ছবি দেখে অনেকে ধারণা করেছেন যে আমি পূজোর উদ্বোধন করেছি, যেটি আমি কখনোই করিনি এবং একজন সচেতন মুসলমান হিসাবে করবোও না। তারপরও যদি ওখানে যাওয়াটাই আমার ঠিক হয়নি এটা যদি আপনারা মনে করে থাকেন তাহলে আমি অবশ্যই আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এই ঘটনার যেন পুরনাবৃত্তি না হয় তার চেষ্টা করব। ওই পুজোর উদ্বোধক ছিলেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। আমি যাওয়ার আগেই তিনি পুজোর উদ্বোধন করে গিয়েছেন। ”

সাকিবের এই বক্তব্যের পর জনমনে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। একদিকে পূজা উদ্বোধন করে অন্যদিকে পূজা উদ্বোধন করিনি বলে সাফাই দেওয়া দ্বিচারিতা এমনটাই মত প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা হিন্দুদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন ও এথনিক ক্লিনজিং চালিয়ে আসছে। হিন্দু ধর্মের অবমাননা, হিন্দু মন্দির-প্রতিমা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান- বাড়িঘর ভাঙচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগ সেখানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সাকিবের এই সাফাই বক্তব্যের পর এটা পরিষ্কার যে তিনিও তার স্বদেশীয় উগ্র মুসলিমদের ন্যায়ই মনোভাব ও মানসিকতা পোষণ করেন। কলকাতা তথা ভারতবর্ষের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ও অনুষ্ঠানের আয়োজকদের এই ধরণের উগ্র মুসলিম মানসিকতার ব্যক্তিদের উদ্বোধনের আমন্ত্রণ জানানোর পূর্বে বারংবার বিবেচনা করা যে উচিত এটা অনেকটাই পরিষ্কার।