বঙ্গদেশ ডেস্ক:- জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখে এতদিন শখ ও সাধ্যের মধ্যে থাকলেও জমি কেনার অধিকার ছিল না আম ভারতীয় নাগরিকের। ৩৭০ ধারা অনুযায়ী এই অঞ্চলে কেবল মাত্র ‘স্থায়ী বাসিন্দা’রাই জমি কেনার একছত্র অধিকার ভোগ করত। কিন্তু এবার সেই মৌরসিপাট্টা খতম করার পথে মোদি সরকার।
কেন্দ্র এক বিবৃতির মারফত জানিয়েছেন, ইউনিয়ন টেরিটরি অফ জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর রিঅর্গানাইজেশন (অ্যাডপশন অফ সেন্ট্রাল ল) থার্ড অর্ডার,২০২০ অনুযায়ী যে কোনো ভারতীয় জমি কিনতে পারবেন। অর্থাৎ উপত্যকায় জমি কেনার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা বিপত্তি রইল না।
জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুনর্গঠন ২০২০ নির্দেশিকা এখন থেকেই বলবৎ হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। যার ফলে যে কোনো ভারতীয় নাগরিক তার ধর্ম, ভাষা, মাতৃভূমি যাই হোক না কেন জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখে জমি কিনতে পারবেন। এর ফলে ভারতের সর্ব উত্তরের এই দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে উন্নয়ন দ্রুততর হবে বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
স্বাধীনতার পরবর্তী কাল থেকেই দেশের উত্তরের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যটি ৩৭০ ধারার আওতায় বেশ কিছু অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করত। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে মোদি সরকার এই ধারার বিলোপ ঘটায়৷ এরই ফলে এবার দেশের যে কোনো নাগরিক চাইলেই এখন থেকে এই দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে জমি কিনতে পারবে।
২০১৯ সালে অগাষ্ট মাসে জম্মু কাশ্মীর রাজ্যকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করে মোদী সরকার। একটি জম্মু কাশ্মীর ও অপরটি লাদাখ অঞ্চল। ৬ই অগাষ্ট দিনের আলো ফুটতেই, রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেন, কাশ্মীর থেকে তুলে দেওয়া হচ্ছে ৩৭০ ধারা। জানানো হয়, জম্মু, কাশ্মীর, লাদাখের বাইরে যেকোনও জায়গার বাসিন্দাকেই বিয়ে করতে পারবেন এখানকার মহিলারা। একই সঙ্গে জানানো হয় কাশ্মীরী ছাড়াও যে কোনও ভারতীয় জমি কিনতে পারবেন ভূস্বর্গে।
জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর দুই রাজ্য অর্থাৎ জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ জুড়ে কার্ফু জারি করে কেন্দ্র সরকার। অবশ্য সময় মত তা প্রত্যাহারও করে নেওয়া হয়। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের আগের দিন অর্থাৎ ৫ই অগাষ্ট কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা নিয়ে কথা উঠতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, “আমি জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষকে বলতে চাই, এই রাজ্যে ৩৭০ ধারা ও ৩৫ ধারা অনেক ক্ষতিসাধন করেছে। এই ধারাগুলির কারণে গণতন্ত্র কখনই পুরো দেশে কার্যকর হয়নি। রাজ্যে দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে সঙ্গে উন্নয়নও থমকে দাঁড়িয়েছে।” এমনকী ওই রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের কাঠামোও নিদারুণভাবে ভেঙে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সভাপতি মেহবুবা মুফতির মুক্তির সাথে সাথে উপত্যকায় রাজনৈতিক মহল আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। ১৪ মাসের বন্দীদশার পর আজ প্রথমবার মেহবুবা মুফতি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে, ওনার দল জম্মু কাশ্মীরে পাঁচ আগস্টের আগের পরিস্থিতি বহাল করার জন্য স্বর্গ মর্ত্য পাতাল এক করে দেবে।