ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কলকাতার রাস্তায় মুসলিম সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ প্রদর্শন

0
1068

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়াল ম্যাক্রনের বিরুদ্ধে কলকাতার রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে মুসলিম সম্প্রদায়। এক সময় বিক্ষোভ মিছিল ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও করার কর্মসূচী ঘোষণা করে। তবে জোর করে ফ্রান্স দূতাবাসে ঢোকার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় পুলিশ। পুলিশ দূতাবাসের কিছুটা আগেই তাদের মিছিল থামিয়ে দেয়। এদিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের এই বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের জনমনে প্রশ্ন উঠছে পশ্চিমবঙ্গ কি সত্যিই ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল? নাকি এই শিরোপা শুধুমাত্র সাধারণ বাঙালি হিন্দুর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য?

এশিয়ানেট নিউজ সূত্রে জানা যায়, আলিপুর সন্তোষ রায় রোডে অবস্থিত ফ্রান্স দূতাবাসের সামনে বিপুল সংখ্যক মুসলিম জড়ো হয় বিক্ষোভ দেখানোর উদ্দেশ্যে। এসময় তারা মিছিল নিয়ে দূতাবাস অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রায় ২০০ মিটার আগেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ। মূলত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তারা এই বিক্ষোভ মিছিল করেছিল বলে খবর। কিন্তু পুলিশি বাধার মুখে তাদের ডেপুটেশন জমা দেওয়া শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। দূতাবাসে ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে তারা দূতাবাসের বাইরে অবস্থান নেয় এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

সম্প্রতি ফ্রান্সে নবী মুহাম্মদের কার্টুন শ্রেণীকক্ষে প্রদর্শন করায় ইতিহাস শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে নৃশংসভাবে শিরচ্ছেদ করে হত্যা করে এক চেচেন গোষ্ঠীভুক্ত মুসলিম যুবক। ফলে কট্টর ইসলামিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করার জন্য ইম্যানুয়াল ম্যাক্রনের সরকার কট্টর ইসলামিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে এবং কট্টর ইসলামিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করে। বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ, মসজিদে ও বাড়িতে তল্লাশী, সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া নজর সহ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স সরকার। মূলত এই কারণেই ইম্যানুয়েল ম্যাক্রনের বিরুদ্ধে বর্তমানে বিক্ষোভ করছে মুসলিম বিশ্ব যার সূত্র ধরে কলকাতাতেও তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে কলকাতার রাস্তায় বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যু নিয়েও মুসলিম সম্প্রদায় বিক্ষোভ মিছিল করেছিল। ২০০৭ সালের ২১ শে নভেম্বর কলকাতার রাজপথে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশৃঙ্খল তাণ্ডব ও তার জেরে সেনা নামানোর পরিপ্রেক্ষিতে পর দিনই যখন তসলিমাকে এক রকম জয়পুরে যেতে বাধ্য করা হয়, তখনই জানা গিয়েছিল, এই শহরের চালচিত্র বদলাতে শুরু করেছে। এরপর বাংলাদেশের রাজাকার অর্থাৎ যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবীতে যখন পুনরায় মুসলিম সম্প্রদায় কলকাতার রাস্তায় নামে তখন রাজ্যের মানুষ একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় যে পশ্চিমবঙ্গের ধর্মনিরপেক্ষতা ক্রমে একপাক্ষিতার পথে হাঁটছে। সিএএ-এর হিংসা ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমও ছিল তারই ধারাবাহিক অঙ্গ।