বাংলা ভাষায় রচিত তালপাতায় লেখা মহাভারতের পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ করছে গীতা প্রেস

0
5725

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- গীতা প্রেস গোরক্ষপুরে সর্বমোট ২৬০০ টি দুর্লভ পাণ্ডুলিপি ও গ্রন্থের সংরক্ষণ শুরু করেছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো বাংলা ভাষায় রচিত তালপাতায় লেখা মহাভারত। এছাড়াও রয়েছে হাতে তৈরি কাগজে লেখা নীলকণ্ঠী টিকা। সূত্র অনুযায়ী, মূলত উইয়ের আক্রমণ থেকে বাঁচানোর জম্য ২৬০০ -র অধিক পাণ্ডুলিপিকে রাসায়নিক সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অ্যাসিড ফ্রি আলমারিতে এই পাণ্ডুলিপিগুলোকে অ্যাসিড ফ্রি কাপড় ও কাগজে সংরক্ষিত করে রাখায় খরচ হচ্ছে সর্বমোট ১৫ লক্ষ টাকা। গোরক্ষপুরে অবস্থিত গীতা প্রেস অমূল্য প্রাচীন এই পাণ্ডুলিপিগুলোকে দীর্ঘায়ু করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বর্তমানে গীতা প্রেসের সংরক্ষণে গীতা, শ্রীরামচরিত মানস, মহাভারত, বেদ-বেদাঙ্গ সহ প্রচুর দুর্লভ প্রাচীন পুঁথি রয়েছে। অনেকগুলো পান্ডুলিপির রাসায়নিক সংরক্ষণের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং অবশিষ্ট পান্ডুলিপিগুলোও সংরক্ষণের জন্য কাজ চলছে।

গীতা প্রেস পুস্তকালয়ের ইনচার্জ হরিরাম ত্রিপাঠী বলেন, ” পাণ্ডুলিপিগুলো সংরক্ষণের জন্য ফিউমিগেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে রাসায়নিকের সংস্পর্শে পাণ্ডুলিপিগুলোকে নিয়ে আসা হয়। অতঃপর অ্যাসিড ফ্রি কাগজে সেগুলোকে জড়িয়ে রাখা হয় এবং পুনরায় অ্যাসিড ফ্রি লাল কাপড়ে বেঁধে রাখা হয়। এরপর পাণ্ডুলিপিগুলো অ্যাসিড ফ্রি আলমারিতে সংরক্ষণ করা হয়। ফলে পাণ্ডুলিপিগুলো যে কোনও রকম ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। ”

গীতা প্রেসের সংগ্রহে তালপাতায় লেখা মহাভারত, স্বর্ণাক্ষর ও ফুল-পাতার রসের মাধ্যমে চিত্রিত গীতার ন্যায় অসংখ্য মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে। তালপাতায় মহাভারতের পাণ্ডুলিপি বাংলা ভাষায় রচিত। গীতা প্রেসের আধিকারিক লালমণি তিওয়ারি জানিয়েছেন, লখনৌ থেকে গ্রামোদ্যোগ বিভাগ অ্যাসিড ফ্রি পেপার ও বোর্ড নিয়ে আসে। এছাড়াও প্রশিক্ষণের জন্য হরিরাম ত্রিপাঠীকে লখনৌতে পাঠানো হয়েছে। কোনও পাণ্ডুলিপিরই এখনও পর্যন্ত কার্বন ডেটিং করানো হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, তালপাতায় লেখা মহাভারতের পাণ্ডুলিপিটি কাগজ আবিষ্কারেরও পূর্বে রচিত। অন্যান্য পাণ্ডুলিপিগুলো প্রায় দুশো বছরের পুরনো এবং মহাভারতের নীলকণ্ঠ টীকাটি প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন।