জলপাইগুড়ির মন্দিরে ৩৬৫ দিন পূজিত হন পরমবীর নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু

0
856

বঙ্গদেশ ডেস্ক : আজ পরাক্রমী বীর সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই রাজ্যে রয়েছে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর এক মন্দির।

জলপাইগুড়ি মাশকলাইবাড়ি এলাকায় অবস্থিত একটি হনুমান মন্দিরে বিভিন্ন দেবদেবীর সাথে বছরভর পূজিত হন দেশনায়ক সুভাষ চন্দ্র বসু। গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে এই রীতি। এবং বর্তমানেও তা অটুট রয়েছে এই মন্দিরে।

স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ১৯৬৬ সাল নাগাদ জলপাইগুড়ি মাশকলাইবাড়ি শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় এক সাধুবাবা এসেছিলেন। যিনি একটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। পাশেই তিনি ছাপড়া ঘড় করে সেখানে থাকতেন। তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় এই মন্দিরে বসে ধ্যান করতেন। তার হাত ধরে এখানে হনুমান মন্দির স্থাপিত হয় এবং তিনিই এই মন্দিরে অন্যান্য দেবদেবীর পাশে নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুর মর্মর মূর্তি বসিয়ে বছরভর পুজোঅর্চনা শুরু করেন। সেই নিয়ম আজও অব্যাহত রয়েছে।

মন্দিরের পুরোহিত অর্জুন দাস জানিয়েছেন, এই মন্দিরে সারাবছর দেবদেবীর সাথে নেতাজীর মূর্তি পুুজো করা হয়। প্রতিদিন মানুষ এসে এখানে পুজার্ঘ্য দেন। প্রতিবছর ২৩ শে জানুয়ারী নেতাজীর জন্মদিন উপলক্ষে প্রচুর জনসমাগম ঘটে এখানে।

কলকাতা ২৪× ৭ -র রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা তথা কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত বলেছেন, “মন্দিরে দেবদেবীর সাধনা করা হয়। আর কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা নিজেদের অবদানের জোরে দেবতার স্তরে পৌঁছে যান। দেশনায়ক সুভাষ চন্দ্র বসুকে আমরা সেই চোখেই দেখি, সেই জায়গাতেই স্থান দিয়ে থাকি।”

নেতাজী শুধুমাত্র দেশকে স্বাধীন করার তাগিদে লড়াই করেননি। তিনি আমাদের দেশে ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক ব্যাপ্তি প্রসারিত হবে,সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা পাবে এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হবে এমন স্বপ্ন দেখতেন। তাই এহেন মানুষকে আমরা দেবতার আসনে জায়গা দিয়ে থাকি। আমি এই এলাকার বাসিন্দা হবার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই এই রেওয়াজ দেখছি। এই দৃশ্য দেখে আজও রোমাঞ্চিত অনুভব করি।”

স্থানীয় বাসিন্দা শুক্লা রায় জানিয়েছেন, “হনুমান মন্দিরে এসে দেখতে পেলাম এখানে নেতাজীর পুজো হয়। দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। তাই আমিও পুজো দিলাম।”

জলপাইগুড়ি নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোস ফাউন্ডেশনের সম্পাদক গোবিন্দ রায় জানিয়েছেন, “নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ঈশ্বর বলে মনে করেন। কিন্তু এই রাজ্যে বিরল এই ধরনের মন্দির। এখানে ৩৬৫ দিন বিভিন্ন দেবদেবীর পুজোর পাশাপাশি ২৩ শে জানুয়ারি মহা সমারোহে নেতাজীর পূজো দেবার রীতি রয়েছে। মানুষের এই ভক্তিভাবে আমরা সম্মান জানাই।”