বঙ্গদেশ ডেস্ক – পাকিস্তান হাই কোর্ট একটি অশ্রুতপূর্ব সিদ্ধান্তে, ১৩ বছর বয়সী খ্রিস্টান কিশোরীকে ধর্ষণ ও জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার জন্যে, তার অপহরণকারী ৪৪ বছর বয়সী অপহরণকারী আলী আজহারের পক্ষেই রায় দিয়েছে। অদ্ভুতভাবে পাকিস্তান কোর্ট এক্ষেত্রে অপরাধীর পক্ষ অবলম্বন করেছে।
সমগ্র মামলা থেকে ধর্ষণের এঙ্গেলটি বাতিল করে পাকিস্তান হাই কোর্ট এই মামলাটি খারিজ করে দেয় এবং অপরাধীকে মুক্তি দিয়েছে। আরজুকে একটি মহিলা আশ্রয়কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে এবং পাকিস্তানি আদালত জানিয়েছে যে বাচ্ছাটি ১৮ বছর বয়সী না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকতে পারবে। পাকিস্তানি মানবাধিকার কর্মী রাহাত অস্টিন টুইটারে আদালতের এই অভাবনীয় রায়টি ভাগ করে নেন।
Arzoo a 13-year-old Christian girl abducted, raped, married off to a 44-year old Muslim man. Today in Sindh High court, case dismissed, she is sent to women shelter where court says she can live till she is 18-year-old. All culprits are released as Judge said its not a rape case pic.twitter.com/HiVd52UcCE
— Rahat Austin (@johnaustin47) November 23, 2020
৩০ শে অক্টোবর ওপ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে পাকিস্তান আদালত ১৩ বছর বয়সী খ্রিস্টান মেয়েটিকে তার ৪৪ বছর বয়সী অপহরণকারী আলী আজহারের হেফাজতেই পাঠানোর অবেদন মঞ্জুর করে। নাবালিকাকে ১৩ ই অক্টোবর করাচির রেলওয়ে কলোনির বাসা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। তারপরে তাকে বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করতে হয় এবং তার অপহরণকারীকে বিয়েও করতে হয়েছিল।
সাংবাদিক বিলাল ফারুকী অপহৃত মেয়েটির জন্ম শংসাপত্র আপলোড করেছিলেন যেটি সিন্ধ সরকার দিয়েছিল, যার মধ্যে জন্মের তারিখটি ৩১ জুলাই, ২০০৭ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নাবালিকা হওয়ার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, আদালত অপহরণকারীর পক্ষে এই নির্দেশনামা রেখেছিল। রায়ের কারণ অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটির সই করা একটি হলফনামা, বলা বাহুল্য যা কিনা তাকে চাপে পড়ে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল।
অধিকন্তু সিন্ধ হাইকোর্ট SHO (Station House Officer) -কে নির্দেশ দিয়েছিল এই ঘটনায় যেন কোনও ধরনের গ্রেপ্তার না করা হয় এবং পরিবর্তে, জোরপূর্বক বিবাহিত দম্পতিকেই যেন হয়রানি রোধে সুরক্ষা প্রদান করা হয়!
এর আগে আলী আজহার একটি ভূয়া বিয়ের শংসাপত্র পেশ করেছিল, তাতে বলা হয়েছিল যে মেয়েটি ১৮ বছর বয়সী এবং নাবালিকা নয়।
মেয়ের মা, রিতা এর আগে তার মেয়েকে আলী আজহারের খপ্পর থেকে উদ্ধার করার জন্য একটি আবেগময় আবেদন করেছিলেন, যে আআজহার কিনা নাবালিকার অপহরণের পর থেকেই আরজুর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছিল যাতে তারা নিজেদের বাচ্ছাকে উদ্ধারের চেষ্টা না করে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, কয়েকজন খ্রিস্টান ও সামাজিক কর্মীরা সিন্ধ বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইন কার্যকর করার দাবিতে ২৪ অক্টোবর করাচি প্রেসক্লাবের বাইরে বিক্ষোভ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সিন্ধ প্রদেশ আইন পরিষদ ২০১৪ সালে সিন্ধ বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণ আইন লাগু করেছিল, যার ফলে বাল্যবিবাহকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং এই আইনে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের জন্য ৩ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল।