ধর্মনিরপেক্ষ পাসপোর্ট ও পুনর্বাসন নীতির ঘোষণা

১লা জুলাই ২০২৩,   পি টি আই: আজ ভারতের বিদেশমন্ত্রী বিষমা পররাজ্য সাংবাদিক সম্মেলনে এক নতুন পাসপোর্ট নীতির কথা ঘোষণা করেছেন। তাঁর ভাষায়, এই নীতি ঐতিহাসিক এবং ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা বহনকারী। তিনি আরও জানান যে, বর্তমান সরকার যে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি নিয়েছে তা এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে আরও বলিষ্ঠ হবে।

 

বর্তমানে সমস্ত নাগরিকের জন্য যে অভিন্ন পদ্ধতি চালু আছে এই নীতিতে তাঁকে খারিজ করে সংখ্যালঘুত্বের পরিমাপ অনুযায়ী অগ্রাধিকার করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। মুসলমান নাগরিকদের জন্য সবুজ চ্যানেল খোলা থাকবে যাতে তারা একদিনের মধ্যে কোন রকম পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট ছাড়াই পাসপোর্ট পেতে পারেন। যদি কোন মুসলমান পুরুষ হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করেন তবে তিনি গাঢ় সবুজ চ্যানেলের আওতায় থাকবেন যাতে তিনি দাবি করামাত্র সঙ্গে সঙ্গে পাসপোর্ট পেতে পারেন এবং তাঁর পত্নীর যে কোন নাম-পরিবর্তন কোন নথি-ব্যতিরেকেই গৃহীত হবে।

 

এই পাসপোর্ট নীতির সাথে সাথেই নতুন উদ্বাস্তু পুনর্বাসন নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের মুসলমান শরণার্থীরা সবুজ চ্যানেলের আওতায় পড়বেন যাতে তাঁরা এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন এবং তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য মাথাপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হবে। যদি কোন মুসলমান শরণার্থী নিজ দেশে হিন্দু গণহত্যায় অংশ নেন তবে তিনি বলিউদের বিখ্যাত কবি, লেখক ও সুরকার জারেদ আখবারের কাছ থেকে বিশিষ্ট প্রশংসাপত্র গ্রহণ করার উপযোগী হবেন। হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না এবং তাঁদের এক বিদ্যুৎহীন শ্রমশিবিরে জীবনের বাকি দিনগুলি কাটাতে হবে।

 

শ্রীমতী পররাজ্য বলেন যে তাঁর ঘোষিত নীতি গুলি গান্ধীর ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত বলে এই নীতির সরকারী নাম মহাত্মা গান্ধী জাতীয় পাসপোর্ট ও পুনর্বাসন নীতি। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় পাকিস্তানের হিন্দু শরণার্থীদের দিল্লির জানুয়ারীর প্রবল শীতে এক মসজিদ থেকে বহিষ্কার করার কথা জানান জাতির জনক। গান্ধীর কথিত সেই নীতি বর্তমান শরণার্থী নীতির অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে জানান যে হিন্দু গণহত্যাকারী রোহিঙ্গারা যখন ভারতে এসেছিল, তখন তাদের জম্মুতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ঐ শরণার্থীদের পক্ষে দাখিল করা আবেদনটিও সহানুভুতির সঙ্গে বিবেচনা করে। সেই ট্র্যাডিশন অনুযায়ী বর্তমান সরকারের গৃহীত নীতি এই ধর্ম নিরপেক্ষতাকে আরও শক্ত করবে।

 

মুসলিম শরণার্থীদের পুনর্বাসনের স্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বিশিষ্ট সমাজ কর্মী ও সাংবাদিক গানা গায়ূব। তিনি সেই জেলাকে চিহ্নিত করবেন যেখানে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেক। শরণার্থীদের সেইসব জেলাগুলিতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাঠানো হবে। এতে ঐসব অঞ্চলে ধর্মনিরপেক্ষতা আরও বলিষ্ঠ হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জম্মু এবং পশ্চিমবঙ্গের সেইসব জেলাগুলিতে করা হয়েছিল যেখানে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা অর্ধেকের সামান্য কম। সেই সিদ্ধান্ত হবে বর্তমান নীতির প্রেরণাস্বরূপ।

 

এক তীব্র দক্ষিণপন্থী সংগঠন এই নীতিকে সংবিধানের মানুষে মানুষে সমাদর্শের পরিপন্থী বলে বর্ণনা করেছেন। দক্ষিণপন্থী সংগঠনটির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবি নিশান্ত ভীষণ জানিয়েছেন যে ইউ পি এ সরকারের প্রধান মন্ত্রী মনমোহন সিং অনুধাবন করেছিলেন আম্বেদকরের সংবিধানের মূল কথা। তাই তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে ভারতের জাতীয় সম্পদে আছে মুসলমানদের প্রাথমিক অধিকার। শ্রীমতী পররাজ্যের ঘোষিত নীতি তাই বাবা সাহেব আম্বেদকরের আদর্শের প্রতিরূপ। আম্বেদকরের প্রতি অবমাননার কারণে শ্রী নিশান্ত ভীষণ এই দক্ষিণপন্থী সংগঠনটিকে দলিত বিরোধী বলেছেন। তিনি আরও  জানান যে, বর্তমান সি ভি বি আইন অনুযায়ী এই দক্ষিণপন্থী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে এখনই জেলে দাখিল করা প্রয়োজন।

 
বিঃ দ্রঃ:সব চরিত্র কাল্পনিক। দয়া করে বাস্তবের সঙ্গে কোন সাদৃশ্য খুঁজবেন না।