করোনা জয়ীর রাখি বন্ধন

0
434

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ২৭ জুন ২০২০। কোভিড-১৯ পজেটিভ হয়ে শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন উত্তর পাড়ার বাসিন্দা দেবকুমার দাস। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে যান ৬ জুলাই ২০২০। কিন্তু দেবকুমার বাবু ভোলেননি শ্রমজীবী হাসপাতালের সেবা।

সোমবার রাখির দিনে শ্রমজীবী হাসপাতালে এসে সেবিকা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করলেন এই করোনা জয়ী। পাশাপাশি পেট পুরে খাওয়ালেন বিরিয়ানি, চিকেন, ফিশ ফিঙ্গার সহ নানা পদ। আর তার সঙ্গে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অত্যাবশ্যকীয় জিনিস স্যানিটাইজার, মাস্ক ও সাবান প্রদান করলেন হাসপাতালের কর্মীদের।

রোগী হয়ে এসেছিলেন। চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন। এরপর তো হাসপাতালে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। তাহলে কেন রাখিবন্ধন উৎসব পালন করলেন ৪৫ বছর বয়সের দেবকুমার বাবু? তাঁর উত্তর, ‘ স্বাস্থ্যকর্মীদের থেকে দিনরাত অক্লান্ত লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছেন। দেখেছেন কিভাবে চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই কিট পরে ঘন্টার পর ঘন্টা চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য কর্মীদের একটু সুরাহা দিতে নিজের ওয়ার্ডের কোনও রোগীকে জল দেওয়া কিংবা চিকিতসকদের ডাকা এমন কাজ করেছেন দেবকুমার।

তাই যেদিন তিনি হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে ছিলেন সেদিনই ঠিক করেছিলেন কিছু একটা করবেন স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য। ঘটনাচক্রে রাখি বন্ধন উৎসবে শ্রমজীবী হাসপাতালে সমস্ত কর্মীদের হাতে রাখির বেঁধে দিলেন তিনি। স্বাস্থ্যকর্মীরাও রাখি পরিয়ে অভিন্দন জানালেন দেবকুমার দাসকে।

সচরাচর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। শ্রমজীবী হাসপাতালে সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার জানাচ্ছেন, ‘আসলে রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকদের সম্পর্ক ব্যবসায়ীক নয়, আত্মিক হওয়া উচিত। এই হাসপাতালের মূলমন্ত্র হলো ‘আমরাই গড়বো স্বাস্থ্য’। এ বিকল্প চিন্তা ভাবনা নিয়েই শ্রমজীবী হাসপাতাল এগিয়ে চলেছে। কোভিড হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত হওয়ার পর এখনো পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাতশ রোগী চিকিত্সা চলছে এ হাসপাতালে। দেব কুমার দাসের মত করোনা জয়ীরা জানাচ্ছেন , ‘অযথা আতঙ্কিত না হয়ে দৃঢ় মনে করোনা সঙ্গে লড়াই করতে হবে। তবেই জব্দ হবে এই করোনা দানব।’