হিন্দু মহিলাদের শাঁখা-পলা খুলিয়ে টেট পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের ঘটনায় বিক্ষোভ রাজ্যজুড়ে

0
598

বঙ্গদেশ ডেস্ক: গতকাল ছিল টেট পরীক্ষা। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে রবিবার বর্ধমানের রাজ কলেজে এক মহিলা পরীক্ষার্থীকে লোহার বালা খুলে রাখতে বলা হয়। তিনি রাজি না-হওয়ায় তাকে টেট কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে পরীক্ষা না-দিয়ে টেট কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান তিনি।

এমনকি বেথুন কলেজেও প্রাথমিক টেট কেন্দ্রের দরজা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় দুই পরীক্ষার্থীকে। ‘অপরাধ’, পরীক্ষাকক্ষে ঢোকার আগে কিছুতেই হাতের শাঁখা-পলা, চুড়ি খুলতে পারছিলেন না তাঁরা। ওই সব এয়োতি-চিহ্ন, অলঙ্কার তাদের না খুললে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। মায়েরা অনেক চেষ্টাচরিত্র করেও খুলতে না-পারায় ফিরিয়ে দেওয়া হয় দুই পরীক্ষার্থীকে।

কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রের নকল করার সঙ্গে গয়না বা শাঁখা পরে ঢোকার উপরে নিষেধাজ্ঞা কেন, সেই প্রশ্নের উত্তর অধরা। দুল, নথ, শাঁখা-পলা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকা যাবে না— এমন নির্দেশ ঘিরে গোলমাল তৈরি হয় বিভিন্ন জায়গায়। হিন্দু স্কুলে এক পরীক্ষার্থী প্রশ্ন তোলেন, তিনি একা এসেছেন। কোথায় রাখবেন সোনা বাঁধানো শাঁখা-নোয়া? আলিপুরদুয়ারের একটি কেন্দ্রে এক মহিলার স্বামী গয়না খোলানোর প্রতিবাদ করেন। পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শাঁখা-পলা খোলার নির্দেশ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।

দিনহাটার গোপালনগর এম এস এস হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রেও শাঁখা পলাও খুলে ফেলতে বলা হয় বিবাহিতা পরীক্ষার্থীদের। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানান প্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে। এই বিষয়ে বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল বলেছেন,”এটা তো অবশ্যই সাংঘাতিক ঘটনা। বিবাহের চিহ্ন শাঁখা-পলা, মঙ্গলসূত্র, নোয়া খোলা যায় না। এগুলোকে তো গয়না বলে না। গয়না আর শাঁখা পলার মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা যার নেই সে তো অযোগ্য, অশিক্ষিত ও অদক্ষ। একজন হিন্দু বিবাহিতা মহিলা শাঁখা পলা নোয়া খুলতে পারেন না এটা আমাদের সংস্কৃতি। যে ওই পদে আছে সেও কী ভাবে চাকরি পেয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন।”