শ্যামনগরে হয়ে গেলো “লক্ষ্য সোনার বাঙ্গলা” শীর্ষক আলোচনা সভা, সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার 

0
648

বঙ্গদেশ ডেস্ক:গত ২৮ শে জানুয়ারী তারিখে, উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের মূলাজোড়ে ভারতচন্দ্র গ্রন্থাগারে “লক্ষ্য সোনার বাঙ্গলা” শীর্ষক একটি সভার আয়োজন করা হয়। “লক্ষ্য সোনার বাঙ্গলা” সভায় বক্তা ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য ও “ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রিসার্চ ফাউণ্ডেশন”- এর ডিরেক্টর ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলী মহাশয় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গ উদ্বাস্তু সেলের আহ্বায়ক ও “পশ্চিমবঙ্গের জন্য”- এর সভাপতি ডঃ মোহিত রায় মহাশয় এবং স্বনামধন্য হিন্দু সংগঠন “ধর্মচক্র”- এর প্রবক্তা শ্রী সঞ্জয় শাস্ত্রী মহাশয়। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছিলেন শ্রী কৌশিক চৌধুরী এবং শ্রীমতি ঝিলম ব্যানার্জী।

পশ্চিমবঙ্গের জনক ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে সভাটির শুভ সূচনা করেন ডঃ অনির্বান গাঙ্গুলী। এরপর আচার্য্য সঞ্জয় শাস্ত্রীর তত্ত্বাবধানে ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলী এবং ডঃ মোহিত রায় ভারতমাতা, পন্ডিত দীনদয়াল দীনদয়াল উপাধ্যায় এবং পশ্চিমবঙ্গের জনক ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর প্রতিকৃতিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে মাল্যদান করেন। এরপর অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের মূলমন্ত্র বন্দেমাতরম গানের মাধ্যমে সভাটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। 

সভায় উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্টজনেরা পশ্চিমবঙ্গকে সোনার বাংলা হিসেব গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষা, বাণিজ্য, সংস্কৃতি, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, নিরাপত্তা, দুর্নীতি ও অপশাসন ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন। এছাড়াও রাজ্য সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীতার নামে যে কেন্দ্র বিমুখীতা ও কেন্দ্রের প্রতি এক অলীক বিষোদগার করার যে ধারা চলে আসছে, তারও সমালোচনা করেন বক্তারা। এছাড়াও রাজ্য সরকারের ভোটের মুখে যে আচমকা জনদরদী ভাবমূর্তি তার ওপরেও আলোকপাত করেন বক্তারা৷ 

পরবর্তীতে সভাটির আরও বহুলাংশে শ্রীবৃদ্ধি ঘটে যখন সভাটিতে দর্শক হিসেবে উপস্থিত হন এই বছরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে শিক্ষায় পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপ্ত ডঃ জগদীশ হালদার মহাশয়। এছাড়াও দর্শক হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সম্পাদিকা শ্রীমতি ফাল্গুনী পাত্র এবং ভারতীয় জনতা পার্টি ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্রী রবীন ভট্টাচার্য মহাশয়।

আরব থেকে উদ্ভূত ইসলামিক আগ্রাসন ৭১২ সাল থেকে কিভাবে ভারতবর্ষ ও হিন্দু জাতির সংস্কৃতি ও সভ্যতার ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংস করে এসেছে তার ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন আচার্য্য সঞ্জয় শাস্ত্রী। এছাড়াও বাঙ্গলার সংস্কৃতিতে এই মরু সংস্কৃতি কীভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে আসছে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিকভাবে এবং সেগুলোকে পুনরুদ্ধার করার জন্য ভারতীয় ও বাঙ্গালী সংস্কৃতির ধারক ও বাহকদেরকে কীভাবে সংগ্রাম করে যেতে হবে তার ওপরেও বিস্তারিত আলোকপাত করেন তিনি। 

পশ্চিমবঙ্গের বিগত বছরগুলোর অস্থিতিশীল-অরাজকতার পরিস্থিতি, বেকারত্ব, অর্থনৈতিক পতন, উন্নয়নের নামে প্রহসন, রাজ্যের শিল্প বিমুখ ইকো-সিস্টেম, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, কাটামানি, রাজ্যে জঙ্গীবাদ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর গভীরভাবে আলোকপাত করেন ভারতীয় জনতা পার্টি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য কমিটির সদস্য ও  “ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রিসার্চ ফাউণ্ডেশন” এর ডিরেক্টর ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলী। পশ্চিমবঙ্গবাসীকে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গকে সোনার বাঙ্গলা রূপে গড়ে তোলার জন্য কী কী রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করতে হবে তার ওপরেও বিশদ আলোচনা করেন ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলী। দীর্ঘ বছর ধরে রাজ্যের বেকারত্বের কথা তুলে ধরে তিনি শিল্প বিমুখীতার জন্য দায়ী রাজ্যের দুর্নীতি পরায়ণ ইকো সিস্টেমকে বিস্তারিতভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বিগত বছরগুলোতে নিয়োগ পরীক্ষার নামে প্রহসনের চিত্রগুলো মনে করিয়ে দিয়ে রাজ্যের কাটমানির যে সংস্কৃতি তৈরী হয়েছে তার বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। শিক্ষার নামে যে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে তার বিরুদ্ধে সচেতন ভাবে আমাদের ঐক্যবদ্ধরূপে প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত এমনটাই মত প্রকাশ করেন তিনি।  এছাড়াও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিগত বছরগুলোর যে দৃশ্য, একের পর এক জঙ্গী আস্তানার হদিশ পাওয়ার ঘটনাগুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে আগামী দিনগুলোতে পশ্চিমবঙ্গকে কাশ্মীর বানাতে না চাইলে পশ্চিমবঙ্গবাসীর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার যে এখনই আসল সময়, সেই বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন ডঃ গাঙ্গুলী। এই প্রহসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রূখে দাঁড়িয়ে আমরা স্বপ্নের সোনার বাঙ্গলা গড়ে তুলতে পারবো এমনটাই আশা প্রকাশ করেন ডঃ অনির্বাণ গাঙ্গুলী।