মহানবমীতে বাংলাদেশে আদিবাসী মন্দির ভাঙচুর করল মুসলিমরা, রক্ষাকারী যুবক ছুরিকাহত

0
866

বঙ্গদেশ ডেস্ক: বাংলাদেশের নড়াইল জেলার চণ্ডীবরপুরে মন্দির, প্রতিমা ও মন্দিরের পার্শ্ববর্তী এলাকার হিন্দুদের দোকানপাট ভাঙচুর করেছে স্থানীয় মুসলিম জনতা। হামলায় বাধা দেওয়ার সময় তিনজন যুবক গুরুতর আহত হয়েছে।

ঢাকা ট্রিবিউনের সূত্র অনুযায়ী, গত রবিবার নবমীর দিন রাত ১১ টায় পশ্চিমপাড়া আদিবাসী মন্দিরে হামলার ঘটনাটি ঘটে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত কোনরূপ মামলা নেয়নি স্থানীয় পুলিশ। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, মন্দিরে ধুনুচি নাচের সময়ে স্থানীয় কিছু মুসলিম যুবক মন্দিরে এসে হিন্দু নারীদেরকে উত্যক্ত করা শুরু করলে তাতে বাধা দেয় স্থানীয় হিন্দু যুবকরা।

তার ঠিক আধ ঘন্টা পরে রাত দশটায় সেই উত্যক্তকারী মুসলিম যুবকরা নয়টি বাইকে প্রায় ২৫ জনকে সাথে নিয়ে আসে। এই সময়ে হামলাকারীরা ছুরি, চাইনিজ কুড়ুল, লোহার রড, লাঠি ইত্যাদি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মন্দিরে হামলা করে।

স্থানীয় খ্রিস্টান যুবক আশিস হামলার সময়ে ছুরিকাহত হয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন র‍য়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক কালিদাস বিশ্বাস বলেন, “ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করার পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কিন্তু তারা আমাদেরকে ভাঙচুর করা সকল প্রতিমা সরিয়ে ফেলতে বলে। একই সাথে পুলিশ আমাদেরকে ঘটনাস্থলে কোনরূপ ভিডিও রেকর্ডিংও করতে বাধা দিয়েছে।

মন্দিরের পুরোহিত ঝর্ণা রাণী বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের পূজা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ করে একদল স্থানীয় মুসলিম যুবক মণ্ডপে এসে মেয়েদেরকে উত্যক্ত করা শুরু করে। তাদেরকে বাধা দেওয়ায় প্রথমে তারা মন্দির থেকে চলে যায় কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তারা দল-বল নিয়ে অস্ত্রসজ্জিত হয়ে এসে মন্দিরে হামলা করে। তাদের এই হামলায় নেতৃত্বে ছিল আমবাড়িয়া গ্রামের চুন্নু, ধুড়িয়া গ্রামের এনামুল এবং আনিস হাফিজুর।”

অন্যদিকে নড়াইল সদর পুলিশ স্টেশনের ওসি ইলিয়াস হোসেন মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, “মানুষ বানিয়ে বলছে এসব। ” কিন্তু ওসি আশিস নামের ওই যুবকের ছুরিকাহত ছুরিকাহত হবার কথা স্বীকার করেছে।

মন্দির কমিটির প্রেসিডেন্ট রমেশ বিশ্বাস বলেন, ” গত বছরে হামলার আশঙ্কায় আমরা পূজা আয়োজন করিনি। উদ্বেগের মাঝেও এই বছরে আয়োজন করা হয়েছে পূজা। কিন্তু হামলা এড়ানো যায়নি। এই দেশে হয়তো হিন্দুদের এটাই ভাগ্য! আমাদের কি শান্তিপূর্ণভাবে উপাসনা করারও অধিকার নেই?”