বঙ্গদেশ ডেস্ক: বঙ্গ রাজনীতিতে সহিংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় শক্তিশালী পক্ষ রাজ্যের রাজনৈতিক বিরোধীদের জন্য এক প্রকার দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
সোমবার, রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত একটি ট্যুইটের মাধ্যমে জানিয়েছেন, যে বিজেপির মুখপাত্র কবির শঙ্কর বোস গৃহবন্দী রয়েছেন এবং টিএমসি কর্মীরা তাকে বাইরে পা রাখতে বাধা দিচ্ছেন না।
West Bengal BJP spokesman & barrister Kabir Shankar Bose has been under siege in his flat in Srerampore. The TMC, in collusion with police, are preventing him from leaving or anyone from entering. His car has been smashed up. Has law & order broken down completely in WB?
— Swapan Dasgupta (@swapan55) December 7, 2020
।
তিনি সেই ট্যুইটে অভিযোগ করেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র ও ব্যারিস্টার কবির শঙ্কর বোস শ্রীরামপুরে তাঁর ফ্ল্যাটে অবরোধের মুখে পড়েছেন। টিএমসি, পুলিশের সঙ্গে মিলিতভাবে তাকে বা অন্য কাউকে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। ” স্বপন দাশগুপ্তের আরও অভিযোগ, যে কবির বোসের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি সেই সাথে প্রশ্ন তোলেন, “পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে?”
কবির শঙ্কর বোস মিডিয়ায় তাঁর এই অগ্নিপরীক্ষার কথা বর্ণনা করে বলেন, প্রায় ১০০ টিএমসি কর্মী তার বাড়ির বাইরে অবস্থান নিয়েছে এবং তিনি অবরোধের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, “পুলিশ আমার বাড়ির ঠিক বাইরে। তারা আমার চলাচলে বাধা দিয়েছে। বাইরে কারও পা রাখার অনুমতি নেই। ওরা আমাকে ওষুধ ও খাবার কিনতে দিচ্ছে না। এই মুহূর্তে যে কোনও কিছু হতে পারে। আমি জানি না আদৌও কি হতে চলেছে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদেরকে ভয় পাচ্ছেন।”
বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ, টিএমসির গুন্ডারা কবির বোসের গাড়ি ভাঙচুর করেছে এবং তাঁর নিরাপত্তাকর্মীদের উপর হামলা করেছে।
ডিএনএন নিউজ সূত্রে জানা গিয়েছে যে বিজেপি নেতা কবির শঙ্কর বোস তার বাড়ি থেকে গাড়িতে করে বেরনোর চেষ্টা করলে বিজেপি নেতাকর্মী এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ডিএনএন এর ভিডিওতে দুটি গ্রুপকে উত্তপ্ত তর্ক করতে দেখা যায়, তারপরে ধাক্কাধাক্কি এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভিডিওতে বিজেপি নেতা কবির বোসের গাড়ি ভাঙচুর ও তার গাড়ির পিছনের কাঁচ ভাঙা অবস্থায় দেখা যায়৷
কবির বোস বলেছেন, “আমি যখন আমার বাড়ি থেকে বের হলাম তখন দেখি বেশ কয়েকজন টিএমসি কর্মী এবং স্থানীয় লোক আমার বাড়ি ব্যারিকেড করছে। সেখানে উপস্থিত টিএমসির কাউন্সিলর পাপ্পু সিংও আমার পথে বাধা দিয়েছিলেন। আমার সুরক্ষা কর্মীরা তাদের অনুরোধ করলেন যেন তারা আমাকে যেতে দেয় তবে তারা যেতে দেয়নি। টিএমসি গুন্ডারা যখন আমার লোকদের উপর আক্রমণ করেছিল, তখন তাদেরকে আত্মরক্ষা করতে হয়েছিল। আমার গাড়ি, নিরাপত্তা কর্মী এবং আমার বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছিল। এই ধরনের সহিংসতার মাধ্যমে বিজেপিকে দমানো যাবে না।”
স্থানীয় সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও অন্যান্য টিএমসি সমর্থকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর বাড়ির বাইরে কবির বোসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে। গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময়, তিনি দাবী করেন যে এই বিজেপি নেতা একজন “গুন্ডা”, যাকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এই অঞ্চলে গুন্ডামি চালাতে পাঠিয়েছেন। তিনি দাবী করেছেন, যে CISF এর কোন অধিকার নেই তার লোকদেরকে মারধর করার এবং তিনি শ্রীরামপুরে কাউকে অশান্তি তৈরি করতে দেবেন না। ”
West Bengal: Violence erupted between TMC & BJP party workers in Hooghly district, yesterday
"A BJP goon is living here under CISF protection. He's in regular touch with Jagdeep Dhankar. The CISF lathi-charged our workers who were gathered here," says TMC MP Kalyan Banerjee pic.twitter.com/RhgaU5LmwU
— ANI (@ANI) December 7, 2020
“আমি জগদীপ ধনকড়কে বলতে চাই যে শ্রীরামপুরে তিনি শান্তি বিঘ্নিত করতে পারবেন না। এটাই ছিল তাঁর পরিকল্পনা। সমস্ত অপরাধীর সাথে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে ” বলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন। কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি দাবী করেছিলেন যে কবির শঙ্কর বোস ও তার লোকেরা তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল। “বিজেপি গুন্ডা ও দাঙ্গাকারীদের একটি দল। এমনকি অমিত শাহও দাঙ্গাবাজ, গুন্ডাবাজ” বলেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবী করেন।