বঙ্গদেশ ডেস্ক – ফ্রান্স, কানাডা, কাবুলের পর সন্ত্রাসবাদী হামলায় এবার কেঁপে উঠলো অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা। মধ্য ভিয়েনার ছ’টি জায়গায় হামলা করা হয়েছে। খবর পাওয়া গিয়েছে এ পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন ভিয়েনার বাসিন্দা, অপরজন হামলাকারী । সরকারি ভাবে সোমবার রাতের এই ঘটনাকে ‘ঘৃণ্য জঙ্গি হামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
Another video of the #Vienna shooting in Austria as the perpetrator is still on the run. Austrian Interior Ministry requests people to stay indoors and avoid the area as a major police operation is underway after terrorist attack on a Jewish Synagogue. pic.twitter.com/W4nZwZHKTs
— Aditya Raj Kaul (@AdityaRajKaul) November 2, 2020
সোমবার রাতে মধ্য ভিয়েনায় ‘জঙ্গি’ হামলায় কমপক্ষে দু’জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। আহতদের মধ্যে একজন পুলিশ অফিসারও রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে তীব্র গোলাগুলির লড়াইয়ে হামলাকারীদের একজনও মারা পড়েছে। অষ্ট্রিয়া পুলিশের পক্ষ থেকে এক ট্যুইট বার্তায় হামলাকারী-সহ ৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
https://twitter.com/arutz20/status/1323369755097653248?s=19
অষ্ট্রিয়ান পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে ভিয়েনার অন্তত ৬টি জায়গায় পৃথক ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এইভাবে সিরিয়াল হামলার ঘটনা ভিয়েনাতে এই প্রথম। হামলায় একাধিক জনের আহত হওয়ার কথা বলা হলেও নির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলা হয়নি। তবে, সন্দেহভাজন এক হামলাকারীকে নিকেশ করার খবর নিশ্চিত করেছে পুলিশ। বন্দুক হাতেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার পর অষ্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল নেহামার দাবি করেন, মধ্য সিনাগগের ‘জঙ্গি’রাই এদিন রাতে এই হামলা চালিয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে, কোনও একজন নয়, একাধিক জন এই হামলার ঘটনায় জড়িত রয়েছে। ছ’টি ভিন্ন জায়গা থেকে একযোগে হামলার বিষয়ে নিশ্চিত করেছে অষ্ট্রিয় পুলিশ। সংবাদ সংস্থা সূত্রেও এক হামলাকারী-সহ ২ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। পরে, হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর মধ্য ভিয়েনার একটা অংশ ঘিরে ফেলে, ব্যাপাক তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
এক বন্দুকবাজ চিত্কার করে রাস্তায় গুলি চালাচ্ছে, এমন ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তবে, সেটি ভিয়েনার হামলার কি না, সংবাদ সংস্থা তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। ঘটনার ভিডিও বা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় যাতে শেয়ার না হয়, ভিয়েনা পুলিশের তরফে এই মর্মে সাধারণ মানুষের কাছে বিনীত আর্জি জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর মোতাবেক, প্রায় ৫০ বার গুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল। যার জেরে বহু লোকের হতাহতের সম্ভাবনা ছিল। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘটনার রাত থেকেই অষ্ট্রিয়ায় শুরু হবার কথা ছিল লকডাউন। ঠিক তার কিছুক্ষণ আগেই এই হামলা চালানো হয়। এই হামলা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল বলেই মনে করছে প্রশাসন।
১৯৮১ সালে এক সিনাগগে দুই ফিলিস্তিনির আক্রমণে ২ নিরীহ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। জখম হয়েছিলেন আরও ১৮ জন। পরবর্তীতে, ১৯৮৫ সালে প্যালেস্তাইনের একটি চরমপন্থী দল ভিয়েনা বিমানবন্দরে হ্যান্ড গ্রেনেড ও রাইফেল নিয়ে হামলা চালিয়েছিল। খবর ছিল, তাতেও প্রাণ গিয়েছিল তিন নাগরিকের।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্যারিস, বার্লিন, লন্ডনের মতো একাধিক হামলা হয়েছে অষ্ট্রিয়ায়। ইয়রোপ থেকে ইউ.কে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে বিভিন্ন দেশ জঙ্গি হামলাতে। গত আগস্টে সন্দেহভাজন সিরিয়ান এক শরণার্থীকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। পুলিশের ধারণা, ইহুদি সম্প্রদায়ের এক নেতার উপর হামলার ছক কষেছিল সে। তবে ভিয়েনার এই হামলার সঙ্গে ফ্রান্সের হামলার যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।