আরও এক লাভ জেহাদী? প্রতারক নুর ইসলামের টার্গেট শুধু হিন্দু ধনী যুবতী!

0
1533

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- লাভ জিহাদের সমস্যায় গোটা দেশ জর্জরিত। প্রায়শই সংবাদমাধ্যমের পাতায় ভেসে ওঠে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লাভ জিহাদের ঘটনা। এবার লাভ জিহাদের চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেল খোদ কলকাতার বুকে।
https://www.facebook.com/114626090214783/posts/165171568493568/

গত ১৩ই নভেম্বর কলকাতার পিয়ারলেস অ্যাভিনিউয়ের মালঞ্চ সিনেমা দুই নম্বর মোড়ে মধুমঞ্চে ফ্ল্যাটের বাসিন্দা একজন অধ্যাপকের ২৫ বছর বয়সী মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় ছদ্মবেশী নুর ইসলাম ওরফে ব্রহ্মণ বিপ্লব রায়ের। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, এই নুর ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের নাম ও ধর্ম পরিচয় গোপন রেখে হিন্দু ব্রাহ্মণ বিপ্লব রায় নাম ভাঙিয়ে হিন্দু যুবতীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে। প্রথমে সে হিন্দু যুবতীদের মধু প্রলোভনে ফাঁসায় তারপর তাকে বিয়ে করে। আর এই কাজের জন্য সে ফেসবুক প্রোফাইল বেছে বেছে ধনী হিন্দু পরিবারগুলোকে টার্গেট করে। এই নুর ইসলাম ওরফে বিপ্লব রায় সেইমতো ফেসবুকের মাধ্যমে এই অধ্যাপক ভদ্রলোকের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কথাবার্তা চলাকালীন নুর ভদ্রমহিলাকে জানায় বিয়ের জন্য তার একটি পাত্রী দরকার এবং নিজেকে হাইকোর্টের ল্য‌ইয়ার বলে পরিচয় দেয়। ভদ্রমহিলা নিজের বিবাহযোগ্য কন্যার সন্ধান দেন এবং নিজের মেয়ের সঙ্গে নুরের বিয়ে দেয়ার ভাবনা চিন্তা করেন।

ভদ্রমহিলা জানিয়েছেন, হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিচয় দিয়ে সে ওই পরিবারের বিশ্বাস অর্জন করে এবং পরিবারের লোকজন কোনোরকম যাচাই না করেই এই বিয়েতে সম্মতি দেয়। এমনকি নিজেকে ব্রাহ্মণ প্রমাণ করার জন্য নুর পৈতা ধারণ করে একাধিক ছবি ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে প্রাত্রীর মাকে পাঠায়। এরপর নুর পাত্রীর মাকে জানায় পূজার ছুটি ১৭ই নভেম্বর শেষ হয়ে গেলে তার কাজকর্মের জন্য সে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। তাই সে তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলতে চায়। খুব কম সময়ের মধ্যেই পরিবার বিয়ের আয়োজন করে এবং তাদের দুজনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু পাত্রীর দাদা প্রথম থেকেই এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। তার বক্তব্য ছিল, আগে পাত্র যাচাই করা হোক তারপর বিয়ে। কিন্তু জিহাদী মানসিকতায় ট্রেনিংপ্রাপ্ত নুর ইসলাম পাত্রীর মাকে মিষ্টি মিষ্টি কথায় মগজ ধোলাই করে আর তাতেই নূরের পাতা ফাঁদে পা দেয় পাত্রীর মা এবং যথারীতি ১৩ ই নভেম্বর কালীঘাট মন্দিরে তাদের বিয়ে সুসম্পন্ন হয় এবং উপহারস্বরূপ পাত্রীপক্ষ নুরকে গলার হার এবং আংটি উপহার দেন।

কিন্তু বিয়ের কয়েকদিনের মধ্যেই নুরের আচার আচরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এর ফলে মেয়েটির মা তার ছেলে ও ছেলের এক বন্ধুকে পাত্রের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার জন্য পাত্রের ঘরবাড়ি দেখতে পাঠান কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে দেখা যায় বিপ্লব রফিউল ইসলাম বেহালা ১৪ নম্বর এলাকার একটি ভাড়াবাড়ি দূর থেকে দেখিয়ে বলে যে তার পরিবারের লোকের সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ার কারণে সে এই বাড়িতে ভাড়া থাকে। নিজের বাড়িতে তার ভাইয়ের মেয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠান হচ্ছে এই অজুহাত দেখিয়ে বাড়ীর ভেতরে নিয়ে যেতে সে দ্বিধাবোধ করে। এরপর মেয়েটির ভাই ও তার বন্ধু দুজনে ফিরে এসে মেয়েটির মায়ের কাছ থেকে নুর ইসলামের সঠিক পরিচয় ঠিকানা জানানোর আশ্বাস দেয়।

এদিকে বিয়ের দিন তিনেক পর নুর তার বিবাহিত স্ত্রী ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। অন্যদিকে নুর তার জিহাদী কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ফেসবুকের মাধ্যমে মেয়েটির মামার মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বেশ কিছুদিন কথোপকথনের পর মেয়েটির মামার মেয়ে বুঝতে পারে যে এই নূরের সঙ্গে তার পিসির মেয়ে বিয়ে হয়েছে। যদিও নুর এই বিষয়টি সেই মুহূর্তে বুঝতে পারেনি কিন্তু পরে যখন নুর জানতে পারে মেয়েটি তার প্রাক্তন স্ত্রীর মামার মেয়ে তখন সে বিপদ বুঝে আস্তে আস্তে নিজেকে সরিয়ে নিতে থাকে।

কিন্তু নুরের প্রাক্তন স্ত্রীর মামার মেয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অত্যন্ত চাতুরতার সঙ্গে মেয়েটির ভাই ও ভাইয়ের বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর মেয়েটির ভাই ও ভাইয়ের বন্ধু প্রীতম অরাজনৈতিক হিন্দু সংগঠন হিন্দু সমাজ কল্যাণ সমিতি অন্যতম সক্রিয় কার্যকর্তা রাজু দেওয়ানের পরামর্শে জেহাদী নুর ইসলামকে ধরার ফন্দি আঁটে। সেইমতো মেয়েটির মামার মেয়ে হুগলিতে বসবাসকারী তার বান্ধবীকে নুর ইসলামের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ করিয়ে দেয়। এবারেও নুর হুগলিতে বসবাসকারী বিএ প্রথম বর্ষের পাঠরতা ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।

গত ২০শে নভেম্বর নুর ওই তরুণীকে হাওড়া টিকিয়াপাড়ায় দেখা করতে বলে। দেখা করার পরে নুর তার মনোবাসনা পূরণ করার জন্য মেয়েটিকে হোটেলে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য জোর করে হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে। এরপর পূর্বপরিকল্পনা মত হিন্দু সমাজ কল্যাণ সমিতির কার্যকর্তারা ও মেয়েটির পরিবার নুরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং চ্যাটার্জি হাট থানার পুলিশ অফিসারদের হাতে তুলে দেয়। ইতিমধ্যে নূরের মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে সংযুক্ত আধার কার্ডের ঠিকানা দেখে পুলিশ বুঝতে পারে যে নূরের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মেচেদার নিকটবর্তী কোন এক স্থানে। পুলিশের কাছে জেরার মুখে নুর জানিয়েছে ইতিপূর্বে সে পাঁচটি বিবাহ করেছে।তার ওকালতি পেশা কতটা সত্য ও তার আর অন্য কোন পেশা আছে কিনা তা এখনো পর্যন্ত জানা যায় নি।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে গিয়েছে। লাভ জিহাদের কবলে পড়ে কতশত নিরীহ হিন্দু মেয়ের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে সে নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে অনেকেই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লাভ জিহাদ রোখার জন্য হরিয়ানা, কর্ণাটক সহ উত্তরপ্রদেশ লাভ জিহাদ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের চিন্তাভাবনা করছে। লাভ জিহাদের শিকড় সমাজের অনেকটা গভীর পর্যন্ত বৃষ্টি তো সেই নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আবার এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে নুরের মত ঘৃণ্য ব্যক্তিদের কঠোরতম শাস্তির আওয়াজ তুলেছেন।