হালাল না ঝটকা: বিজ্ঞান কি বলে?

0
6180

মানুষের খাদ্য সরবরাহের জন্য পশুনিধনকে আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করার প্রয়াস সমস্ত পৃথিবীতেই প্রচলিত। এর কারণ মূলত দ্বিবিধ। প্রথমতঃ পশুনিধন প্রক্রিয়াটিকে যতটা সম্ভব মানবিক (humane) দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে করা,  দ্বিতীয়তঃ, পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন এবং দূষণমুক্ত রাখা। যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হল, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র [1, 2], বৃটেন [3] এবং ভারতের [4] মত গণতান্ত্রিক দেশসমেত বহু দেশে এই আইন থাকা সত্ত্বেও ধর্মীয় রীতিসম্মত পশুহত্যা পদ্ধতিকে এই আইনের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়ে থাকে। ধর্মমতের কারণে পশুহত্যার পদ্ধতিকে মানবিকতার আওতা থেকে বাদ দেওয়া পশুকল্যাণের ভীষণভাবে পরিপন্থী। ষ্টেট অফ গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমী নামক সংস্থার মোতাবেক [5], বিশ্বব্যাপী ‘হালাল’  শংসায়িত  (certified)  সামগ্রীর বাৎসরিক বাজার মূল্য ২.১ লক্ষ কোটি ডলারেরও অধিক। স্পষ্টতঃই পাঠক বুঝতে পারছেন যে হালালের বিস্তৃতি এবং তাদের শক্তি, যার কারণে আইনকেও তাদের দিকে চক্ষু মুদিত করে চলতে হয়। অবশ্য আইনী দুনিয়াতেও এই বিতর্ক চলছে যে চক্ষু মুদ্রিত করে থাকাটা যথোপযুক্ত [6, 7] কিনা।

পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রচলিত ধর্মীয় রীতিসম্মত পশুহত্যার পদ্ধতি অন্যতম হল এই হালাল এবং কোশার (kosher)। দুটিই মূলতঃ একই পদ্ধতি কিন্তু ইহুদীরা বলে কোশার আর মুসলমানেরা বলে হালাল। শিখ এবং হিন্দু, এই দুই ভারতীয় ধর্মমতের অনুসারীরা পরম্পরাগত ভাবে যে পদ্ধতিটি পালন করে তাকে বলে ঝটকা। প্রায় ২০ কোটি মুসলমানের বাসভূমি ভারতে প্রচুর পরিমাণে পশুকে সারা বছর জুড়ে তো বটেই, বিশেষতঃ বকরী-ঈদের সময়, হালাল করে বধ করা হয়। বলা হয় যে কেবল সম্পূর্ণরূপে সুস্থ পশুকেই ধর্মমত মোতাবেক হত্যা করা বিধেয়।

কোশার বা হালালের সময়, একটি ধারালো ছুরিকে প্রাণীটির গলায় (ventral neck) একটি খোঁচাতেই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তারপর ছুরিটিকে না তুলে বারবার প্রবেশ করানো হয় যাতে শ্বাসনালী, খাদ্যনালী, মস্তকে রক্তসংবহনকারী স্কন্ধদেশের ধমনী (carotid arteries), স্কন্দদেশের শিরা (jugular vein) এবং ভেগাস স্নায়ু খণ্ডিত [8] হয়। এতে শরীর থেকে রক্ত নির্গত হতে থাকে এবং প্রাণীটি পরিণামে প্রাণ হারায়। এই পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলে ventral neck incision (VNI)। এতে মেরুদণ্ডের স্নায়ুতন্ত্র প্রাণীটির মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত অক্ষত থাকে।

অপরপক্ষে ঝটকা পদ্ধতিতে হত্যার সময়, ঘাড়ের পিছনের দিকে (dorsal neck) কর্তন করা হয় যাতে মস্তকের খুলিকে মেরুদণ্ডের সুষুম্নাকাণ্ড (spinal cord) থেকে নিমেষে পৃথক করা হয়। কেবল ঘাড়ের কর্তন (cervical dislocation)-ই নয়, বরং এক আঘাতে মস্তকের শরীর থেকে বিখণ্ডিতকরণ এর উদ্দেশ্য। তাই এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয় অপেক্ষাকৃত ভারী এবং ধারালো অস্ত্র।

আমরা বর্তমান বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের আলোকে এই দুই পদ্ধতিকে তুলনা করে দেখব, কোন পদ্ধতি বেশি মানবিক এবং পশু কল্যাণের নিরিখে বেশি নীতিসম্মত।

ক) সাধারণভাবে আমাদের শরীরের, আরও সঠিকভাবে বললে সোমাটিক কোষগুলি থেকে কোন অনুভূতি কিছু বিশেষ প্রোটিন (বৈজ্ঞানিক পরিভাষায়, cognate receptor proteins) লাভ করে যারা সেই অনুভূতিকে স্নায়ুর মাধ্যমে প্রেরণ করে। স্নায়ু আসলে কিছু নিউরোণ কোষের সমষ্টি মাত্র। স্নায়ু অনুভূতিকে মেরুদণ্ডের সুষুম্নাকাণ্ডের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে। মস্তিষ্ক এই অনুভূতির প্রতিক্রিয়া হিসাবে আপন বার্তা সেই সুষুম্নাকাণ্ডের নিউরোণের মাধ্যমেই প্রেরণ করে মাংসপেশীগুলিতে (effector muscles)। মাংসপেশীগুলি মস্তিষ্ক প্রেরিত বার্তাকে ক্রিয়াতে রূপ দেয়। হালালের সময় বার্তাপ্রেরণের স্নায়ু নির্দেশিত সুষুম্নাকাণ্ডের মধ্যস্থ এই পথটিকে কোন ভাবেই ব্যাহত করা হয় না। পক্ষান্তরে ঝটকার সময় এই পথটিকে নিমেষের মধ্যে ছিন্ন করা হয়। ফলে ঝটকার সময় বলিপ্রদত্ত প্রাণীটির ব্যথার অনুভূতি সেই মুহূর্তেই হারিয়ে যায়। কিন্তু হালালের সময় এই ব্যথার অনুভূতি হালালপ্রদত্ত প্রাণীটির মস্তিষ্কে নিরবিচ্ছিন্ন প্রাণীটির মরণাবধি পৌঁছতে থাকে।

খ) ব্যথা পরিমাপের এক স্বীকৃত পদ্ধতি হল ইইজি বা ইলেক্ট্রো এনসেফ্যালোগ্রাম। এই যন্ত্রটি মস্তিষ্কের নিউরোণের বৈদ্যুতিক বার্তাকে পরিমাপ করে। গরু বা ভেড়ার মত শান্ত প্রাণীরা তাদের যন্ত্রণার অনুভূতিকে বাইরে সবসময় প্রকাশ করে না। কিন্তু ইইজি পদ্ধতিতে তাদের ব্যথা স্পষ্টতই প্রকাশ পায়। বৈজ্ঞানিকরা দেখিয়েছেন [9] যে ঝটকা পদ্ধতিতে প্রাণীবধ করলে শিরশ্ছেদের ৫ থেকে ১০ সেকেণ্ডের মধ্যেই মস্তিষ্কের (cerebral cortex) কার্য বন্ধ হয়।

ফরাসী পর্যবেক্ষকেরা অন্যদিকে দেখেছেন [10, 11], হালালের সময় অনুসৃত পদ্ধতিতে (VNI) বধ্য প্রাণীটি ৬০ সেকেণ্ড পর্যন্ত তো বটেই, অনেক সময় বহু মিনিটও ব্যথা অনুভব করে। কখনও কখনও কর্তন সফল না হলে প্রাণীটি অবর্ণনীয় যন্ত্রণা [12] অনুভব করে। এর কারণ  সুষুম্নাকাণ্ডের স্নায়ুপথ আর  মস্তিষ্কে রক্তসরবরাহকারী  কশেরুকার ধমনীগুলি (vertebral arteries) হালাল করার সময় অক্ষত [13] থাকে। অপরপক্ষে, ঝটকা পদ্ধতিতে বধের সময় স্নায়ু এবং রক্তপরিবাহী নালীগুলি নিমিষে বিচ্ছিন্ন [11] হয়। ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন যেতে পারে না এবং শিরশ্ছেদের প্রায় পরমূহূর্তেই প্রাণীটি সংজ্ঞা হারায়।

অষ্ট্রেলিয়ান এবং বৃটিশ গবেষকগোষ্ঠীগুলির গবেষণায় [15–19] প্রমাণিত যে হালালের সময় যে VNI পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া হয় তাতে প্রাণীটি ভীষণ বেদনায় (noxious stimulation) বিদীর্ণ [14] হয়।

গ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ পশু কল্যাণ নিবন্ধনকারী সংস্থা এক ঝটকায় গরু, শূকর এবং অন্যান্য গবাদি পশুকে বধ করতে নির্দেশ [1] দেয়। তারা এর সাথে আরও একটি সহায়ক পদ্ধতিকে  প্রাণীবধের উপযুক্ত মনে করে থাকে। এই দ্বিতীয় ব্যবস্থাতে stunning  (এক দ্রুত যান্ত্রিক বা বৈদ্যুতিক পদ্ধতি যাতে সংজ্ঞা আশু লুপ্ত হয়) নামক পদ্ধতিতে [20] সংজ্ঞালোপের ব্যবস্থা করা হয় এবং তারপর প্রাণীটিকে বধ করা হয়। গবেষণাগারে দেখা গেছে যে শিরশ্ছেদের মাধ্যমে ইউথ্যানাশিয়াতে (নীতিসম্মত প্রাণীবধ) ইঁদুর জাতীয় প্রাণীরা [21] দ্রুত ব্যথাহীন ভাবে সংজ্ঞালুপ্ত হয়ে প্রাণ হারায়। এ ডব্লু এ (Animal Welfare Act) এবং পি এইচ এস (Public Health Service) মনে করে সুষুম্নাকাণ্ডের কর্তন সহ শিরশ্ছেদ এবং সংজ্ঞালুপ্ত করে শিরশ্ছেদ কোন প্রাণীকে বধ করার প্রকৃষ্ট নৈতিক এবং বৈজ্ঞানিক উপায়। একমাত্র গ্যাস [22] দিয়ে সংজ্ঞালোপের পরেই কেবল VNI বা হালালে অনুসৃত পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে। গবেষণাগারের প্রাণীদের জন্য সমস্ত পৃথিবীর বিজ্ঞানীকুল এই নিয়মগুলি মেনে চলে।

ঘ) বিভিন্ন গবেষক গোষ্ঠীরা বারংবার প্রমাণ করেছেন যে কোশার বা হালাল পদ্ধতিতে প্রাণীবধের সময় প্রাণীগুলি ভীষণ বেদনা বা স্নায়ুমণ্ডলীর ধকল (stress) অনুভব করে। গরু-ষাঁড়, ছাগল ইত্যাদি প্রাণীর ক্ষেত্রে এর ফলে তিনটি ষ্ট্রেস হরমোন (stress hormones), যথা  কর্টিসোল (cortisol), নর-এড্রিনালিন (nor-adrenaline) এবং ডোপামাইন (dopamine) ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত [23–25] হয়। কারণটি খুবই সরল, এই তিনটি হরমোন সমেত আমাদের বেশির ভাগ হরমোনের নিঃসরণই মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অঞ্চলের  দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আমেরিকান বৈজ্ঞানিক টেম্পল গ্র্যাণ্ডিন দেখিয়েছেন [26–27] যে প্রাণীদের সংজ্ঞাশূন্য করে (stunning) হত্যা না করলে রক্তে কর্টিসোলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং তাতে মাংসপেশীর তাপমাত্রাও বাড়ে। সাধারণত স্নায়বিক ধকলের কারণে এড্রিনালিন হরমোনের পরিমিত ক্ষরণে মাংসপেশীর গ্লাইকোজেন ল্যাকটিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। ফলে মাংসের পিএইচ কমে (অর্থাৎ  মাংস অম্লভাবাপন্ন হয়)। তার ফলে মাংস যে কেবল গোলাপী এবং নরম থাকে তাই নয়, উপরন্তু মাংসে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায় না।

অপরপক্ষে প্রাণীটিকে যন্ত্রণাদায়ক পদ্ধতিতে হত্যা করলে স্নায়ুর ধকল বাড়ে। ফলে এড্রিনালিন হরমোনেরই অতিরিক্ত ক্ষরণে মাংসপেশীর গ্লাইকোজেন শীঘ্রই নিঃশেষিত হয়। ফলে মাংস যথন বিক্রীত হয় ততক্ষণে তাতে কোন আর ল্যাকটিক অ্যাসিড অবশিষ্ট থাকে না। ফলে মাংসের পিএইচ বাড়ে এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত হয়। মাংস হয় [28] শুষ্ক, গাঢ় এবং শক্ত। এড্রিনালিন ছাড়া বাকী সব ষ্ট্রেস হরমোনগুলি রাসায়নিক ভাবে দেখলে ষ্টেরোয়েড মাত্র। তাই তারা কোষের ঝিল্লিকে ভেদ করে ডিএনএর সঙ্গে জুড়ে কোষের স্থায়ী  পরিবর্তন [29–30] সাধন করে। মৃত প্রাণীর শরীর থেকে রক্ত সরিয়ে দিলেও প্রভাব বজায় থাকে। গবেষকরা ভেড়ার মাংসের ক্ষেত্রে [31] দেখেছেন যে ষ্ট্রেস হরমোনগুলিকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করালে মাংসের গড়ন এবং স্বাদ বিনষ্ট হয়। আমেরিকার ন্যাশানাল ইনষ্টিটিউট এফ মেণ্টাল হেল্থের গবেষণায় এনাস্থিসিয়া ছাড়াই [32] ইঁদুরের শিরশ্ছেদ (ঝটকা) করলেও রক্তে এই হরমোনগুলোর পরিমাণ সবসময় কমই থেকে যায়। এর কারণ বোধহয় এটাই যে ঝটকার সময় সাধারণ স্নায়বিক ধকলের অনুভূতি অত্যল্প হয়।

ভারতে প্রাণীহত্যার নিষিদ্ধকরণের আইন কেরালা, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি ছাড়া সব জায়গাতেই আছে। আইন অনুসারে বধের আগে প্রাণীকে সংজ্ঞাবিহীন করা (stunning) আমাদের দেশের কসাইখানাগুলির অবশ্য পালনীয়  (২০০১ সালের স্লটারহাউস আইনের (slaughterhouse Act) ৬নং ধারা)। কোন প্রাণীকে অন্য কোন প্রাণীর সামনে হত্যা করাও নিষিদ্ধ যাতে প্রাণীদের মধ্যে ষ্ট্রেসের আধিক্য না হয়। ২০১১ সালের Food Safety and Standard Regulations আইনের ৪.১ ধারার ৪(ক) উপধারা মোতাবেকও [33] বধের আগে প্রাণীকে সংজ্ঞাবিহীন করা অবশ্য পালনীয়।

বাস্তব অবশ্য অন্য কথাই বলে। পেটার (PETA  অর্থাৎ People for the Ethical Treatment of Animals)  প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে  ভারতের কসাইখানাগুলি প্রাণীদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার দায়ে অভিযুক্ত। কসাইখানার কর্মীরা ভোঁতা ছুরি দিয়ে প্রাণীদের হালাল করে রক্তপাতের মাধ্যমে  হত্যা করে। প্রাণীদের চামড়া জীবন্ত অবস্থাতেই [34] ছাড়ানো হয় এবং জীবন্ত অবস্থায় তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও বিচ্ছিন্ন করা হয়।

ওয়েষ্ট বেঙ্গল এলিম্যাল স্লটার এক্ট ১৯৫০ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী প্রাণীহত্যার ক্ষেত্রে যে নিয়মগত শিথিলতা দেয়, তাকে সুপ্রীম কোর্ট বেআইনী বলে ঘোষণা [4, 2] করেছে। ২০১৭ সালে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট রাজ্য সরকারগুলিকে বেআইনী কসাইখানা বন্ধ  করতে আদেশ দিয়েছে। কোর্ট আরও বলেছে পশুদের প্রতি ব্যবহারের উপর নজর রাখতে উপযুক্ত সংস্থা গড়তে হবে যারা মাংস এবং চামড়ার জন্য যেসব প্রাণীহত্যা করা হয়, তাদের উপর নৈতিক আচরণকে নজরে রাখবে। কোর্ট আরও বলেছে [35] যে ভারতীয় সংবিধান ভারতীয় নাগরিকদের প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করতে বলে। এর জন্য রাজ্যগুলিকে যত্নশীল হতে হবে।

দুনিয়াব্যাপী ধীরে ধীরে আইন যত্নশীল হচ্ছে যাতে হালাল-কোশার ইত্যাদি ধর্মমত মোতাবেক বধের নামে প্রাণীদের দুর্দশা বর্ধিত না হয়। প্রাণীকে সংজ্ঞাশূন্য না করে হালাল করা এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে, যেমন ডেনমার্ক, নেদারল্যাণ্ড, সুইডেন, সুইজারল্যাণ্ড এবং লাক্সেমবার্গে [36, 37] নিষিদ্ধ। ইহুদী এবং মুসলমান ধর্মমতের প্রবক্তাদের বক্তব্য ছিল যে সংজ্ঞাশূন্য করে প্রাণীহত্যা করলে প্রাণীদের মস্তিষ্ক আঘাত প্রাপ্ত হয়, অর্থাৎ সে আর সুস্থ থাকে না। ফলে সেই প্রাণী আর হালাল বা কোশারের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। এই বক্তব্যকে আজ বহু দেশ খারিজ করে দিচ্ছে। ২০১৫ থেকে হালালের পূর্বে সংজ্ঞাশূন্য করা বৃটেনে চালু হয়েছে যদিও পূর্ণ সাফল্য হয়তো এখনও আসে নি। কিছু আন্তর্জাতিক হালাল শংসাপত্র প্রদানকারী সংস্থা এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে মেনে নিয়েছে। কিন্তু অধিকাংশই তা মানে নি [38] যেমন সংযুক্ত আরব আমীরশাহী, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ইন্দোনেশিয়ার বেশির ভাগ হালাল মাংস আমদানিকারী সংস্থা। তাই দেখা যাচ্ছে আজও ধর্মমতই প্রাণীদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে, বৈজ্ঞানিক যুক্তি নয়। যেহেতু এই ধর্মমতে বিশ্বাসীরা লক্ষ কোটি ডলারের ব্যবসা প্রদান করে, তাই পশুদের কল্যাণ অনায়াসেই লঙ্ঘিত হচ্ছে। কিন্তু ধর্মমত বা অর্থনীতি নয়, পশুকল্যাণের ক্ষেত্রে মানবতাবাদ এবং বিজ্ঞানেরই শেষ কথা বলা উচিত।

 

Reference list:

  1. Table of State Humane Slaughter Laws. Rebecca F. Wisch. Michigan State University College of Law, 2006. Animal Legal & Historical Center.
  2. Euthanasia and slaughter of livestock. Temple Grandin. Journal American Veterinary Medical Association, 1994 Vol 204, pp 1354-1360.
  3. https://www.independent.co.uk/life-style/food-and-drink/what-is-halal-meat-the-big-questions-about-religious-slaughter-answered-9331519.html.
  4. “Beefed up law”The Telegraph.com. 18 January 2012. Retrieved 8 November2013.
  5. https://www.salaamgateway.com/en/story/SALAAM03102016111130/
  6. Pozzi, P.; Geraisy, W.; Barakeh, S.; Azaran, M. Principles of Jewish and Islamic Slaughter with Respect to OIE (World Organization for Animal Health) Recommendations. Isr. J. Vet. Med. 2015, 70, 3.
  7. Is a “Good Death” at the Time of Animal Slaughter an Essentially Contested Concept? ulAin QWhiting TL. Animals (Basel). Vol 7(12). pii: E99.
  8. https://www.shechitauk.org/wp-content/uploads/2016/02/A_Guide_to_Shechita_2009__01.pdf
  9. Loss of cortical function in mice after decapitation, cervical dislocation, potassium chloride injection, and CO2 inhalation. Cartner SCBarlow SCNess TJ. Comp Med. Vol 57(6):570-3.
  10. A scientific comment on the welfare of domesticated ruminants slaughtered without stunning. Johnson CBMellor DJHemsworth PHFisher AD. N Z Vet J. Vol 63(1):58-65.
  11. Consciousness, unconsciousness and death inthe context of slaughter. Part I. Neurobiological mechanisms underlying stunning and killing. Terlouw CBourguet CDeiss V. Meat Sci. Vol 118:133-46.
  12. Time to collapse following slaughter without stunning in cattle. Gregory NGFielding HRvon Wenzlawowicz Mvon Holleben K. Meat Sci. Vol 85(1):66-9.
  13. The arteries of brain base in species of Bovini tribe. Zdun MFrąckowiak HKiełtyka-Kurc AKowalczyk KNabzdyk MTimm A. Anat Rec (Hoboken). Vol 296(11):1677-82.
  14. A re-evaluation of the need to stun calves prior to slaughter by ventral-neck incision: an introductory review. Mellor DJGibson TJJohnson CB. N Z Vet J. Vol 57(2):74-6.
  15. Have we underestimated the impact of pre-slaughter stress on meat quality in ruminants? Ferguson DM and Warner RD. Meat Sci. 2008. Vol 80: 12-19.
  16. Time to collapse following slaughter without stunning in cattle. Gregory, N. G., Fielding, H. R., von Wenzlawowicz, M. and von Hollenben, K. Meat Sci. 2010. Vol 82: 66-69.
  17. Stunning and animal welfare from Islamic and scientific perspectives. Nakyinsige K, Che Man YB, Aghwan ZA, Zulkifli I, Goh YM, Abu Bakar F, Al Kahtani HA and Sazili AQ . Meat Sci. 2013. Vol 95: 352-361.
  18. Components of electroencephalographic responses to slaughter in halothane anaesthetised calves: effects of cutting neck tissues compared with major blood vessels.Gibson TJJohnson CBMurrell JCChambers JPStafford KJMellor DJ. N Z Vet J. Vol 57(2):84-9.
  19. Electroencephalographic responses of halothane – anaesthetised calves to slaughter by ventral-neck incision without prior stunning. Gibson TJJohnson CBMurrell JCHulls CMMitchinson SLStafford KJJohnstone ACMellor DJ. N Z Vet J. Vol 57(2):77-83.
  20. https://www.shechitauk.org/wp-content/uploads/2016/02/A_Guide_to_Shechita_2009__01.pdf
  21. Euthanasia by decapitation: evidence that this technique produces prompt, painless unconsciousness in laboratory rodents. Holson RR. Neurotoxicol Teratol. Vol 14(4):253-7.
  22. https://www.research.uci.edu/compliance/animalcare-use/research-policies-and-guidance/euthanasia.html
  23. Analysis of Stress Indicators for Evaluation of Animal Welfare and Meat Quality in Traditional and Jewish Slaughtering. Bozzo GBarrasso RMarchetti PRoma RSamoilis GTantillo GCeci E. Animals (Basel). Vol 8(4). pii: E43.
  24. Factors which affect blood variables of slaughtered cattle. Petty DBHattingh JGanhao MFBezuidenhout L. J S Afr Vet Assoc. Vol 65(2):41-5.
  25. Determination of plasmatic cortisol for evaluation of animal welfare during slaughter. Ceci EMarchetti PSamoilis GSportelli SRoma RBarrasso RTantillo GBozzo G. Ital J Food Saf. Vol 6(3):6912.
  26. Preslaughter stress and muscle energy largely determine pork quality at two commercial processing plants. Hambrecht EEissen JJNooijent RIDucro BJSmits CHden Hartog LAVerstegen MW. J Anim Sci. Vol 82(5):1401-9.
  27. The effect of stress on livestock and meat quality prior to and during slaughter. International Journal for the Study of Animal Problems, Grandin, T. 1980. Vol 1(5), 313-337.
  28. Effect of lactic acid concentration on growth on meat of Gram-negative psychrotrophs from a meatworks. Gill CONewton KG. Appl Environ Microbiol. Vol 43(2):284-8.
  29. Molecular mechanisms of glucocorticoid action B. B. P. Gupta and K. Lalchhandama. Current Science. 2002. Vol. 83, No. 9 pp. 1103-1111.
  30. Fifty years ago: the quest for steroid hormone receptors. Rousseau GG. Mol Cell Endocrinol. Vol 375(1-2):10-3.
  31. Impact of Adrenaline or Cortisol Injection on Meat Quality Development of Merino Hoggets. Dario G Pighin, Sebastian A Cunzolo Maria Zimerman Adriana A Pazos Ernesto Domingo Anibal J Pordomingo Gabriela Grigioni. Journal of Integrative Agriculture. Volume 12, Issue 11, November 2013, Pages 1931-1936.
  32. Unaltered hormonal response to stress in a mouse model of fragile X syndrome. Qin MSmith CB. Psychoneuroendocrinology. 2008. Vol 33(6):883-9.
  33. Guide to Animal Welfare Laws Target group – Law enforcement agencies. Animal Welfare Board of India Ministry of Environment Forests & Climate Change, Government of India.
  34. PETA Calls on all States to Stop Illegal Slaughter of Animals as Per Supreme Court Order, Nikunj Sharma and Shambhavi Tiwari, PETA India (31 March 2017).
  35. Supreme Court stays high court judgment on cow slaughter, The Times of India (Jan 24, 2017).
  36. https://www.reuters.com/article/us-dutch-religion-slaughter/dutch-vote-to-ban-religious-slaughter-of-animals-idUSTRE75R4E420110628
  37. http://theconversation.com/danish-halal-and-kosher-ban-leaves-religious-groups-with-nowhere-to-turn-23392
  38. The stunning and slaughter of cattle within the EU: A review of the current situation with regard to the halal market. Fuseini, A., Knowles, T. G., Lines, J., Hadley, P. J., & Wotton, S. B. Animal Welfare, 2016. Vol 25(3), 365-376.