সোনা পাচারকাণ্ডের পর এবার মাদক চক্র, চরম অস্বস্তিতে কেরালার বাম সরকার

0
738

বঙ্গদেশ ডেস্ক: সারা দেশে মাদক মাফিয়াদের অনুসন্ধান জন্য এনসিবি তৎপর হয়ে উঠেছে বিশেষত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সাথে ড্রাগচক্রের যোগসাজশ পাওয়ার পর তৎপরতা দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে। আর এই তদন্তের সময় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর জেরার মুখে বেঙ্গালুরুর মাদক চক্রের পান্ডা অনুপ মহম্মদ তার সঙ্গে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক কোডিয়েরি বালাকৃষ্ণনের ছোট ছেলে বিনীশ কোডিয়েরির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং তার দ্বারা উপকৃত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। এই তথ্য ফাঁস হতেই বিপাকে পড়েছে রাজ্যের বাম সরকার।

তিরুবনন্তপুরমের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে, ১৯ আগস্ট গ্রেপ্তারের দু’দিন আগেও অনূপ বীনেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেদিন, ড্রাগ র‌্যাকেট মাস্টারমাইন্ড সিপিএম নেতার ছেলেকে দুপুর 12.50 থেকে 1.30 টার মধ্যে পাঁচবার ফোন করেছিল। কলগুলি থেকে জানা যায় তাদের মধ্যে আট সেকেন্ড থেকে শুরু করে প্রায় এক মিনিট পর্যন্ত কথাবার্তা চলে। অনুপসহ আরোও দুজন রিজেশ রবীন্দ্রন এবং টেলিভিশন সিরিয়াল অভিনেতা ডি অনিখাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনুপ জেরার মুখে জানিয়েছে তার কাছে বাড়ি ফেরার জন্য টাকা না থাকায় সে বিনেশকে ফোন করেছিল সিপিএম নেতার সুপুত্র তাকে 10,500 টাকা দিয়ে সহায়তা করেছিল।

বিনেশ কোডিয়ারী স্বীকার করেছেন যে তিনি 2013 সাল থেকে অনুপ মোহাম্মদকে চিনতেন তবে তার মাদক ব্যবসা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তিনি আক্ষেপ করে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “গ্রেপ্তারের পরে আমি সত্যিই হতবাক হয়েছি। আমি খুব ভাল করে চিনি এবং একটি হোটেল তৈরির জন্য মোটা অংকের অর্থ‌ও তাকে দিয়েছি। আমি কখনোই মাদকের সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়টি জানতাম না”। তিনি একথাও বলেছেন যে রাজনৈতিক কারণে তাঁর নাম টেনে আনা হয়েছে।

অনুপের বিবৃতির শোনার পর মুসলিম লিগ-এর যুব সংগঠন ইয়ুথ লিগ-এর সাধারণ সম্পাদক পি কে ফিরোজ দাবি করেছেন, বিনীশ কোডিয়ারি আসলে অনুপের সঙ্গে মাদক পাচারের ব্যবসার সাথে যুক্ত। লকডাউনের মধ্যে কোট্টায়মে মাদক চক্র আয়োজিত একাধিক রেড পার্টিতে তাকে প্রায়ই দেখা গেছে।

ফিরোজ আরোও অভিযোগ করে বলেছেন, ‘অনুপ জেরার মুখে জানিয়েছে, জুনিয়র কোডিয়েরি তাঁর
বন্ধু এবং ব্যবসার পার্টনার। গত 19 জুন কোট্টায়মের রেড পার্টিতে তিনিও ছিলেন। ওইদিন পার্টিতে বেশ কিছু মালয়ালম সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীও উপস্থিত ছিলো’

শুধু তাই-ই নয়, মাদক চক্রের সঙ্গে সোনা পাচার চক্রের‌ও ভালোই যোগসাজশ আছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ফিরোজ। মাদক মামলার মূল মাথা অনূপ মোহাম্মদ ও সোনার চোরাচালানের মামলার আসামি কে টি রমিসের সাথে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

এমনও খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, মোহাম্মদ কোচিতে এমন অনেক চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের নাম নিয়েছে যাদের তিনি নিয়মিত কিছু কিছু এক্সটাসি পিল সরবরাহ করতো যার মধ্যে “অ্যাসিড এবং মলি” ছিল অন্যতম। এনসিবি জানিয়েছে, 2015 সাল থেকে মোহাম্মদ মাদক ব্যবসার সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।

এ দিকে, বীনেশ কোডিয়ারির সঙ্গে মাফিয়া যোগাযোগের বিষয়টি জানাজানি হতেই শাসকদল সিপিএম-কে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীপক্ষের দুই দল কংগ্রেস ও বিজেপি।

বিজেপি বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেছে যে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন যখন সেপ্টেম্বর 2018 সালে চিকিৎসার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তখন একজন ব্যক্তি কিছু ফাইল স্বাক্ষর করেছিলেন। বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ ওয়ারিয়র বলেছেন এটি কোনোভাবেই ডিজিটাল স্বাক্ষর নয় এবং মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হয় তার অনুপস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলিতে কে স্বাক্ষর করেছেন তা প্রকাশ করার জন্য। বিজয়ন অবশ্য সর্বশেষ অভিযোগের বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি।