প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বে ইসলামিক মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে ফ্রান্স, শিখতে পারে বিশ্ব

0
789

বঙ্গদেশ ডেস্ক:-একসময় তথাকথিত ‘লিবারাল’দের নয়নমণি ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ, তিনি নিজেও রাজনৈতিক পরিচয়ের দিক থেকে ‘সেন্ট্রিস্ট লিবারাল’। তবে রাজনৈতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করে নিজের দেশকে মৌলবাদীদের কাছে তিনি বিকিয়ে দেননি। বরং লড়াই করেছেন, চেষ্টা করেছেন ফ্রান্সের জনগণকে, সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে। তিনি কিছুদিন আগে বলেছিলেন, ইসলামের রাজনীতিকরণকে মেনে নেওয়া হবে না এবং ফ্রান্সের সামাজিক ব্যবস্থার পাশাপাশি শারিয়া আইন মোতাবেক ইসলামিক সমাজ তাঁরা তৈরি হতে দেবেন না।

নিজের কথিত আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বাধীন সরকার গত বৃহস্পতিবার একটি নতুন বিল নিয়ে এসেছে বলে টি.এফ.আই গ্লোবাল তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। এই নতুন বিলের একটি উল্লেখযোগ্য আইন হল, তিন বছরের ঊর্ধ্বে সব শিশুকেই স্কুলে যেতে হবে। ফ্রেঞ্চ বিলটি ইসলামবাদী মৌলবাদের শিকার হওয়া গোটা বিশ্বের কাছে শিক্ষার বিষয় হতে পারে।

বারবার জঙ্গী হামলার শিকার হয়েছে ফ্রান্স। এরমধ্যে কিছুদিন আগেই ফরাসি ইতিহাস শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে এক ইসলামবাদী চেচেন অভিবাসী জঙ্গী, শিরচ্ছেদ করে খুন করে। এরপরই ফ্রান্সের সরকার এই মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।

বিলটিতে ম্যাক্রোঁ সরকারের অগ্রাধিকার এবং উদ্দেশ্য খুব স্পষ্টভাবে জ্ঞাপন করা হয়েছে যাতে এটি বাস্তবে কার্যকর করতে কোনো অসুবিধা না হয়। “একটি কুখ্যাত কিন্তু শক্তিশালী সাম্প্রদায়ের অনুপ্রবেশ ধীরে ধীরে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের সমাজের ভিত্তিকে গ্যাংরিনের মতো করে দুর্বল করছে। এই অনুপ্রবেশ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে ইসলামবাদী ভাবনার প্রেরণায়” এইরকম বক্তব্য এই নথিতে রাখা হয়েছে।

ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপের নেতাদের মধ্যে অগ্রগামী ছিলেন। কিন্তু এর ফলে তাঁকে ইসলামিক বিশ্বের সমালোচনারও শিকার হতে হয়। তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রেসেপ তাইয়েপ এর্দোগান ম্যাক্রোঁর অবস্থানকে “উস্কানিমূলক” বলে অভিহিত করে ম্যাক্রোঁকে “মানসিকভাবে অসুস্থ” বলেন। ফলে তুরস্কের সঙ্গে আগে থেকেই উত্তেজনাপূর্ণ ফ্রান্সের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছিল।

ঘটনা পরম্পরায় ফরাসি পণ্য বর্জন করার জন্য পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের ইসলামিক দেশগুলিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়কে মনে করিয়ে দিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্যাম ব্রাউনব্যাক বলেছিলেন, “আপনারা বলপ্রয়োগ করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।” তবে এই প্রবল আক্রমণের মুখেও ম্যাক্রোঁ তাঁর অবস্থানে অনড় ছিলেন। তবে ফরাসি মন্ত্রিসভা এখন এমন একটি বিলকে অনুমোদন দিয়েছে, যা আগামীতে ফ্রান্সে মৌলবাদের উত্থানকে আটকাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।