‘সরকার ধর্মনিরপেক্ষ’, চলতি বছরের নভেম্বর থেকে আসামে বন্ধ হচ্ছে মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোল

0
457

আসাম: আসামের শিক্ষামন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করেছিলেন সরকার কোনোভাবেই ধর্মীয় শিক্ষার জন্য তহবিল সরবরাহ করবে না। তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন, “শিশুদের ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ, আরবী ভাষায় শিক্ষাদান কোনও ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের কাজ হতে পারে না।”

২০১৭ সালে মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোলের বোর্ডকে সেকেন্ডারি এডুকেশন বোর্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে বিজেপিশাসিত আসাম সরকার। এইবছর থেকে মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সরকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ৬ মাসের মধ্যে মাদ্রাসা ও টোলগুলিকে সাধারণ স্কুল হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা আসাম বিধানসভায় শিক্ষা বিভাগে ‘কাট মোশন’ চলাকালীন মাদ্রাসার প্রাদেশিককরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে বলেন, “সরকারী মাদ্রাসা নভেম্বর থেকে বন্ধ হচ্ছে, সুতরাং নতুন মাদ্রাসাগুলিকে প্রাদেশিক করার কোনো প্রশ্নই আসছে না। ” তিনি আরও জোর দিয়ে বলেছেন, “এখন থেকে আসাম সরকার কেবলমাত্র ধর্মনিরপেক্ষ ও আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করবে।”

তিনি একথাও বলেছেন,”রাজ্য জুড়ে অবস্থিত সমস্ত মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোল চলতি বছরের নভেম্বর থেকে বন্ধ থাকবে। সুতরাং, মাদ্রাসা প্রাদেশিক করা হবে না; এবং নতুন আরবি শিক্ষক আর নিয়োগ করা যাবে না। তবে বেসরকারীভাবে পরিচালিত ‘মাদ্রাসা’ অব্যাহত থাকবে।”

শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী সংস্কৃত টোলগুলি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হয়ে উঠবে।সংস্কৃত ভাষা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন,”সংস্কৃত সমস্ত আধুনিক ভাষার জনক। আসাম সরকার সমস্ত সংস্কৃত টোলগুলিকে ‘কুমার ভাস্কর ভার্মা সংস্কৃত ও প্রাচীন স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়’-র (নলবাড়ি) অধীনস্থ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা একটি নতুন ফর্মে কাজ শুরু করবে শীঘ্রই।এই বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে অতি সত্বর বিস্তারিত জানানো হবে। ”

শিক্ষামন্ত্রকের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘ রাজ্যে ১২০০ মাদ্রাসা ও ২০০টি সংস্কৃত বোর্ড রয়েছে বর্তমানে। ছাত্রছাত্রীরা ম্যাট্রিকুলেশন ও হায়ার সেকেন্ডারির সমকক্ষ সার্টিফিকেট পাওয়ার পর যথেষ্ট সমস্যা তৈরি হয়। সেই কারণে রাজ্য সরকার সব মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোলগুলিকে সাধারণ স্কুলে পরিণত করার একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

ছাত্রছাত্রীরা যাতে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় সেই উদ্দেশ্য মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি একথাও বলেছেন, “ধর্মের পাঠ নিতে গিয়ে কোনও শিক্ষার্থী প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হোক, এটা সরকার কখনোই চায় না।তাই সবদিক বিচার বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”