বাঙ্গালী জাতিসত্তা রক্ষার শপথ নেওয়া হল ‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য’ র বার্ষিক সম্মেলনে

0
695

বঙ্গদেশ ডেস্ক:- গত ২০শে ডিসেম্বর, রবিবার ‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য’-এর বাৎসরিক সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হল কালীক্ষেত্র দক্ষিণেশ্বরের সন্নিকটে। সংগঠনের অন্যতম সদস্য শ্রী প্রবীর ভট্টাচার্যের বাড়িতে অনুষ্ঠিত এই সভায় পৌরহিত্য করেন প্রখ্যাত পরিবেশবিদ তথা বাঙ্গালী গণআন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ডঃ মোহিত রায়। বাঙ্গলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপর বহিরাগত হানাদারদের প্রায় সহস্র বছরের আঘাত ও দখলদারির প্রচেষ্টার নানা ঘটনা উঠে এল অধ্যাপক মোহিত রায়ের বক্তব্যে। বঙ্গভূমির আরবমতপুষ্ট খন্ডিত অংশের বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিলিয়মান অবস্থা অংশগ্রহণকারীরা নতুন করে উপলব্ধি করলেন। পশ্চিমবঙ্গেও বামৈস্লামিকদের চক্রান্তে বাঙ্গালী সংস্কৃতির হতশ্রী দশা সম্পর্কে আলোকপাত করলেন অধ্যাপক রায়।

অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্বে শ্রী কল্যাণ সরকার ‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য’ সংগঠনের উদ্দেশ্য ও কর্মপন্থা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। ‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য’ শুধু সোস্যাল মিডিয়ার সংগঠন নয়। সোস্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি সংগঠনটি বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে সভা-সমিতি, আলোচনাচক্র, মিছিল ইত্যাদিও করে থাকে। দাড়িভিট ভাষা আন্দোলন ও বাঙ্গালী জাতিসত্তা নিয়ে লেখা দুটি বইও প্রকাশ করেছে ‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য’।
শুধু কলকাতাকেন্দ্রীক নয়, এর কর্মবিস্তৃতি ছড়িয়ে আছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে। এমনকি বছরে অনুষ্ঠিত বারোটি মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন দেশের গণ্ডী ছাড়িয়ে পশ্চিমা বিশ্বের বাঙ্গালীরাও। অবশ্য বর্তমান বছরে বিশ্বব্যাপী অতিমারী পরিস্থিতির জন্য সভা সমিতি মিছিল করা সম্ভব হয়নি।

‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য’ বাঙ্গালীর সংগঠন। বাঙ্গালীর সুপ্রাচীন সনাতন ঐতিহ্য প্রসার, সংরক্ষণ, বহিঃশত্রুদের হাত থেকে বাঙ্গালীর ঐতিহ্য রক্ষা, বহিরাগত মতবাদের কারণে ঘটে যাওয়া বাঙ্গালী সমাজ সংস্কৃতির মলিনতা দূরীভূত করতে সদা সচেষ্ট।

পরবর্তী পর্বে শ্রী দেবব্রত বাঙ্গলা ভাষা ও সংস্কৃতিতে আরব অনুপ্রবেশের ফলে ঘটে চলা সামাজিক বিকৃতি ও ধ্বংসপরায়ণতা সম্পর্কে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। ‘একুশের মিথ ও জয় বাংলার মিথ্যা’ সম্পর্কে বক্তব্য রাখার সময় বাঙ্গালী সংস্কৃতিকে বাঁচাতে ‘বাঙ্গলাভাষী মাত্রেই বাঙ্গালী’ -এই মতবাদের অসারতা ব্যাখ্যা করে আরবসাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনকে প্রতিহত করার বিষয়ে আলোকপাত করেন।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে উত্তরবঙ্গ, রাঢ়বঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ সহ পশ্চিমবঙ্গের সব প্রান্ত থেকে প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের যে সব প্রতিনিধি আসতে পারেননি, তাঁরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভাবে যুক্ত থেকেছিলেন। দ্বিপ্রহরিক মধ্যাহ্নভোজন সর্বক্ষেত্রের বাঙ্গালীদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ককেই যেন মনে করিয়ে দিয়েছিল।

সবশেষে উপনিষদের বাণী উচ্চারণ ও স্ব-ঐতিহ্য রক্ষা, বিনাশকারী বিপক্ষকে প্রতিহত করার শপথ গ্রহণ করা হয়।