রক্তাক্ত মায়ানমার, স্বাধীনতাকামী ৩৮ জন নিহত সেনার গুলিতে

0
659

বঙ্গদেশ ডেস্ক – বহু সংগ্রামের পরে মিলিটারি ‘জুণ্টা’র হাত থেকে মুক্তি পান মায়ানমারের জনগণ। সরকারে আসেন জনতার নয়নমণি আং সান সু কি। কিন্তু এই বছরের ১ ই ফেব্রুয়ারি সব পরিস্থিতি বদলে যায়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচিত সরকারকে বরখাস্ত করা হয়। পেশীশক্তির আস্ফালনে ক্ষমতায় আসে মায়ানমার সেনা।

মায়ানমারের সরকারি চ্যানেলে ‘সেনা অভ্যুত্থান’ -এর খবর পরিবেশিত হয়, তারপর বিচ্ছিন্ন করা হয় সাধারণের টেলিফোন সংযোগ। দেশীয় রাজনীতিতে উচ্চস্তরের নেতাদের ধরপাকড় ও আটক চলতে থাকে চরমভাবে। এর প্রতিবাদেই পথে নামেন দেশের সাধারণ মানুষ। একদিকে মায়ানমারের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে মরিয়া সেনা, অন্যদিকে মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ চলছে; কোথাও বা তাঁরা বসেছেন শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখাতে। তবে হঠাৎই সেনার বর্বরোচিত আক্রমণে মারা গেছেন ৩৮ জন নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত সারা বিশ্ব। তবে হেলদোল নেই সেনার, তারা যে কোন প্রকারে সু কি-র সমর্থকদের ধরতে বদ্ধপরিকর।

গোটা দেশ থেকে খবর আসছিল নির্যাতনের, ইতিমধ্যেই স্থানীয় সূত্র থেকে ১৭ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে যা সংবাদ প্রতিদিন তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। কিন্তু বুধবারের হামলা আগের সব বর্বরতাকে ছাপিয়ে গেছে। কেবলমাত্র রেঙ্গুনেই মারা গেছেন ৭ জন এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩০০ জন। মান্দালয়, মিঙ্গিয়াং প্রভৃতি শহর থেকেও হত্যা এবং হিংসার খবর আসছে। মায়ানমারে নিযুক্ত রাষ্ট্র সংঘের বিশেষ দূত বলেন, “একদিনে আটত্রিশ জনের মৃত্যু হল। এখনই মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। সেনা অভ্যুত্থান হবার পরে এখনও অবধি এটাই সবচেয়ে ভয়ানক ও রক্তক্ষয়ী দিন।”

গত ৪ টি সপ্তাহে গোটা দেশ জুড়ে গণতন্ত্রকামী মানুষেরা রাস্তায় নামছেন প্রতিবাদ করতে। দেশের সেনা ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে তাদের উপরে কাঁদানে গ্যাস ছু্ঁড়ছে, লাঠি চালাচ্ছে, গুলিও করছে; তবুও বিক্ষোভ থামছে না। আটকদের কোনো খবরও পাওয়া যাচ্ছে না। সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারিও কোনো কাজে আসেনি। দেশটির সঙ্গে পরিচিত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা এই অভ্যুত্থানের পিছনে চীনের কালো ছায়াও দেখছেন।