ভারতে কমিউনিস্ট গৃহ যুদ্ধের মুখচ্ছবি: AISA কোন বিপ্লব করছে না

0
744

জে এন ইউতে কমিউনিস্ট প্রভাবিত সামাজিক ও রাজনৈতিক বিপ্লব,ভারতের শুধুই ক্ষতি করবে। একটা প্রাচীন সভ্যতার সমাপ্তি হবে।

AISA: ভারতীয় শিক্ষার সূর্যালোকে কমিউনিস্ট ‘গ্রহণ”

অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন, জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় ছাত্র ইউনিয়ন। এটা আসলে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মার্ক্সবাদী লেনিনবাদীর ছাত্র সংগঠন। আর ওই CPIML ভারতের সবচেয়ে বেশী মৌলবাদী উগ্র কমিউনিস্ট সংগঠন। ভারতের কমিউনিস্টরা এখনো মার্ক্স, লেনিন, স্তালিন, চে গুয়েভরা, মাওদের নামে কপালে হাত ঠেকিয়ে পেন্নাম করে। তারা আজো চীন বা  রাশিয়ার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কোন সমালোচনা করে না। সোভিয়েত ইউনিয়নের আজব কড়া একপেশে শাসনেও তাদের আপত্তি নেই।
ভোটে ধুয়ে সাফ হয়ে গিয়ে কমিউনিস্ট পার্টিগুলি চাইছে শেষবারের মতো ভারতীয় রাজনীতির ময়দানে একটু জমি ফিরে পেতে। তারা এ ব্যাপারে তাদের ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে দিয়েছে। আর এইসব অল্পবয়সীরা নতুন উৎসাহ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির সাফল্যের নিন্দা করতে। এরা শুধুই দাবার বড়ের মত ব্যবহৃত হচ্ছে।
AISA বলছে যে তারা বিশ্বাস করে মার্ক্সবাদ একটি মানবিক বিবর্তনের বিজ্ঞান এবং মানুষের মোক্ষপ্রাপ্তির উপায়। AISA নিজেকে বৈপ্লবিক ও গণতান্ত্রিক সংগঠন বলে প্রচার করছে। আসলে AISA হলো বহুদিন আগেই বিবর্জিত, বহু পুরোনো ব্যর্থ কমিউনিস্ট ধ্যান ধারণার টিমটিমিয়ে টিকে থাকা একটা সংস্থা। তারা ঠিক সেই রক্তপাত ও মারপিটের রাস্তা নিয়েছে, যেগুলো তারা বিদেশী কমিউনিস্ট দেশগুলো থেকে শিখেছে।
মার্ক্সবাদ কোন বিজ্ঞান নয়, এটা স্রেফ একটা রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা পদ্ধতি। হ্যাঁ, মানছি যে কিছু দেশে তারা বিপ্লব এনেছে। কিন্তু সেই বিপ্লব আনতে গিয়ে,দেশের পরে দেশ, জাতির পরে জাতিকে শেষ করে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। কোথাও কোন মোক্ষলাভ হয় নি, বরং একেকটা চমৎকার দেশের নিজস্ব রীতিনীতি, সভ্যতা সংস্কৃতিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ওরা যে বলে, গণতন্ত্র? আসলে ওরা ওই শব্দটাকে ব্যবহার করে মানুষকে বোকা বানাতে। মার্কসবাদীরা পৃথিবীর একটাও দেশে কখনো কোনদিন গণতন্ত্র আনেনি। ওটা ওদের কম্ম নয়। ওরা গণতান্ত্রিক ধাপ্পা দিয়ে টোটালিটারিয়ান ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে একের পর এক দেশে।

ওরা আক্রান্ত নয়, আক্রমণকারী

কি মনে হয়,আমরা এইসব বৈপ্লবিক ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কিরকম ব্যবহার আশা করছি? ওরা চাইছে, যত তাড়াতাড়ি বিপ্লব আনতে, তাতে রক্তপাত ও ধোঁকাবাজির আশ্রয় নিতে হলেও আপত্তি নেই। এদের সাথে সঙ্গী হয়েছে কতগুলো বামপন্থী মিডিয়া। আর এই মিডিয়ার ধাপ্পা মারার পদ্ধতি কিরকম বলুন তো? এরা কোনও সময় বলেনা যে ওরা বামপন্থী , বা মাওবাদী ,বা স্ট্যালিনের মত হিংস্র মনোভাবের মানুষ। বামপন্থী মিডিয়া হামেশাই “সহজ সরল নিষ্পাপ ছাত্রছাত্রী” বলে প্রচার করে। পশ্চিমি দেশগুলোর মিডিয়াতেও তারা এইসব বামপন্থী মুখোশটাকে বজায় রাখে। এভাবে তারা সমাজের সহানুভূতি কুড়োয়। লোকে ভাবে–আহা!  ছাত্রদের কত কষ্ট!  আপনারা কখনো দেখবেন না বরখা দত্ত দিল্লির ছাত্রদের,রাশিয়ার একনায়ক স্তালিনপ্রীতি বা বন্দুকের নলে ক্ষমতা খুঁজে বেড়ানো মাওপ্রীতি নিয়ে একটাও কথা বলেন! আশ্চর্য নয় কি?
পৃথিবীর যেকোন জায়গায়, আজ্ঞে হ্যাঁ, পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় যদি কখনও শোনেন যে বামপন্থী ছাত্র আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে নির্ঘাত জানবেন ওরাই হিংসা ও দ্বেষ শুরু করেছে। একটা প্রাণ খুলে সত্যি কথা বলছি— শান্তি, সৌহার্দ্য, সভ্যতা জিনিসগুলো ওদের মানসিক গঠনে নেই। ওরা শান্তি বজায় রাখতেই পারেনা। তাই ওইসব ফালতু রোমান্টিক ভাবনায় ডুবে থেকে লাভ নেই যে কোনরকম বিপ্লব-টিপ্লব আসছে। মিডিয়ার উচিত নয় ওদের কোনরকম সহানুভূতি দেখানো। মিডিয়ায় এসব দেখিয়ে তারা সমাজে হিংসা ও ঘৃণার চাষ করছে।

কারো কি মনে হয় যে, AISA এবং এদের সাঙ্গপাঙ্গরা বাকস্বাধীনতা আনতে চলেছে এই দেশে?

ঘোড়ার ডিম!! পৃথিবীর সর্বত্র তারা যেখানেই ক্ষমতায় এসেছে, সেখানেই বিরোধীর গলা টিপে টিপে চুপ করিয়ে দিয়েছে। তাদের পার্টি লাইনের থেকে এক ইঞ্চি সরলে তারা মুখে হাত চাপা দিয়ে দেয়। তারা গণতন্ত্র চায়নি, চাইছে না, চাইবে না।
ওদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের ওরা একটা নাম দেয়—-ফ্যাসিস্ট। মজার ব্যাপার হলো, ওরা হিংস্র জন্তুর আচরণ করলে সেটাকে ওরা নাম দেয়— বিপ্লব। চীন দেশে বিপ্লবের ফলে চাইনিজ সভ্যতা বিপাকে পড়েছে। চীন সভ্যতার গরিমা অস্তাচলে।
হিন্দু যোগ সাধনা ও বেদান্ত এক সামগ্রিক আত্মার ও চেতনার উন্মেষ ঘটায়। সেই তুলনায় কমিউনিস্ট আদর্শ অত্যন্ত নিচু, অগভীর ও ভিত্তিহীন। ভারতের জেগে ওঠার সময় এসেছে। মার্ক্সবাদ ও মার্ক্সবাদীদের মুখোশ টেনে ছিঁড়ে ফেলে জোর গলায় বলুন—-মার্ক্সবাদ এক বিষ। এরা ভারতের পবিত্র শিক্ষাঙ্গনগুলিতে শুধুই বিষ ছড়িয়ে যাচ্ছে।
মূল প্রবন্ধটি ধর্ম ডিসপ্যাচ পত্রিকায় প্রকাশিত। লেখক ডেভিড ফ্রাউলি এক সর্বকালের অন্যতম সেরা ভারত বিশারদ ও পদ্মভূষণ। অনুবাদ করেছেন ডঃ শান্তনু বাগচী।
অনুবাদকের বক্তব্য – একসময় ওনার কাছে ভারতীয় জ্যোতিষ বিদ্যা শেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। ভারতের গর্ব গরিমা সভ্যতা বুঝতে আমাদের ডেভিডজীর মত বিদেশী জন্মের কিন্তু হৃদয়ে ভারতীয় গুরু সতর্ক করেছেন। অথচ আমরা, ভারতীয়রা? আমরা কি করছি?