বঙ্গদেশ ডেস্ক:- কেন্দ্রীয় সরকার বিক্ষোভকারী কৃষক নেতাদেরকে তিনটি কৃষি আইনের বিষয়ে তাদের সুনির্দিষ্ট দাবী নিয়ে আসার প্রস্তাব দেওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ইস্যুটি সমাধান করার মতো মেজাজে একদমই নেই। আন্দোলনাকারীদের একজন নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা কোনও নির্দিষ্ট ইস্যু দেওয়ার মতো মেজাজে নেই এবং আবারও বলছেন যে তারা চান যে আইনগুলো বাতিল হোক। ক্রান্তিকারী কিষাণ ইউনিয়নের সভাপতি দর্শন পাল দাবী করেছেন যে কৃষি আইন বাতিলের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা।
We demand that the Central government should call a special Parliament Session to repeal the farm laws: Darshan Pal, President of Krantikari Kisan Union pic.twitter.com/IPlOXKKeNH
— ANI (@ANI) December 2, 2020
নয়াদিল্লীর বিজ্ঞান ভবনে ৩৫ টি কৃষক সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের পর সরকার তাদেরকে কৃষি সংস্কার আইন সম্পর্কিত নির্দিষ্ট বিষয় এবং দাবীগুলো চিহ্নিত করে ২ ডিসেম্বর তা সরকারকে অবগত করার প্রস্তাব দেয়। সরকার বলেছিল যে ৩ ডিসেম্বর পরবর্তী বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করা হবে।
দর্শন পাল জানান, এই দাবীতে তাদের সাথে আরও একটি কৃষক সংগঠন ভারতীয় কৃষক ইউনিয়ন রয়েছে। এই ” কৃষক নেতা ” মোদি সরকার এবং কর্পোরেট হাউজগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য 5 ডিসেম্বর সারা দেশে কুশপুত্তলিকা দাহ করার আহ্বান জানিয়েছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গিয়েছে , দর্শন পাল, যিনি একজন চিকিৎসক ছিলেন এবং কয়েক বছর আগে কৃষিকাজে নিয়ে এসেছেন এবং প্রতিবাদে অংশ নেওয়া বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করছেন। তিনি নিখিল ভারত কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির (AIKSCC) ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যও। তবে মর্মস্পর্শী ঘটনাটি হলো তিনি একজন ” মাওবাদী নেতা “।
দর্শন পাল ছিলেন পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (PDFI) এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। PDFI হলো মাওবাদী আন্দোলনের অন্যতম উপাদান, ভারতের বুকে বামপন্থী সন্ত্রাস। হায়দ্রাবাদের ডাঃ মারি চান্না রেড্ডি হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের তৈরি করা সমীক্ষা অনুসারে, PDFI মাওবাদীদের দ্বারা গঠিত কৌশলগত যুক্তফ্রন্টের (TUF) একটি অংশ যা এর অবস্থানকে সুসংহত ও প্রসারিত করার জন্য করে।
PDFI ছাড়াও TUF- এর অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য মাওবাদী সংগঠন হলো বিপ্লব গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (RDF), অরুন্ধতী রায়ের সাথে জড়িত মহিলাদের ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে কমিটি (CAVOW) এবং রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি (CRPP) কমিটি ইত্যাদি। দর্শনা পাল ছিলেন PDFI এর ৫১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির আহ্বায়ক। দর্শন পাল ছাড়াও PDFI এর অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে ভারভারা রাও, কল্যাণ রাও, মেধা পাটকর, নন্দিতা হাকসার, এস.এ.আর গিলানী, বি.ডি শর্মা প্রমুখ দেশ বিরোধী মুখ।
এটি দেখিয়ে দেয় যে তথাকথিত কৃষক আন্দোলনের পেছনে দেশবিরোধী শক্তির প্রত্যক্ষভাবে মদত রয়েছে। তাদের পরিকল্পনা হলো দেশকে অস্থিতিশীল করা। তারা কৃষি আইনগুলোর বিরোধীতা করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট কারণ চান না, কেবল তাদের বাতিল করতে চান, আর এতেই তাদের আসল উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কৃষি আইনগুলো বাতিলের জন্য একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা। কিন্তু যখন সংসদের শীতকালীন অধিবেশনটি পরের বছর স্থগিত করে বাজেট অধিবেশনের সাথে সংযুক্ত করা হবে বলে কথা রয়েছে, তখন দেখা গিয়েছে যে প্রতিবাদকারীরা কোন সমাধানে আগ্রহী নয়। যে উদ্বেগের কোন অস্তিত্ব নেই তাকে পুঁজি করে তারা আইনগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে এবং সেই কারণেই এটা ধারণা করা হচ্ছে যে তারা আইনগুলোর সাথে কোনও নির্দিষ্ট দাবী উল্লেখ করতে একেবারেই অক্ষম আর তাই আইনগুলো বাতিল করার জন্য তারা কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছে। তারা জানে যে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের বিষয়ে মোদী সরকারের প্রতিক্রিয়া তারা দেখেছে। আর তাই তারা জানে যে এই উস্কানীমূলক আন্দোলনে ফলপ্রসূ হবে না। কিন্তু তবুও তারা এখনও প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে চায়।এতেই অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে এই প্রতিবাদগুলো কৃষকদের পক্ষ হয়ে নয়, একমাত্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধেই।