মায়ানমারকে উচ্চমানের সাবমেরিন সহায়তা ভারতের, চীন বাঙ্গলাদেশী নৌসেনার সমীকরণে আঘাত?

0
1013

বঙ্গদেশ ডেস্ক: নৌসেনার তরফ থেকে জানা গিয়েছে ১৯৮৮ সাল থেকে ভারতীয় নৌবাহিনীর সাথে সার্ভিসে রয়েছে কিলো-শ্রেণীর সাবমেরিন আইএনএস ‘সিন্ধুভীর’। এটিকে তারা তুলে দিচ্ছেন মায়ানমারের হাতে, পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে।

এই সাবমেরিনটি বিশাখাপত্তনমে হিন্দুস্তান শিপইয়ার্ড লিমিটেড দ্বারা সংস্কার ও উন্নত করা হয়েছে। এই মানোন্নয়ন সাবমেরিনের পরিষেবা দেবার ক্ষমতাকে ১০ থেকে ১৫ বছর বৃদ্ধি করেছে। যার অর্থ এটি ২০৩০ সাল পর্যন্ত মায়ানমার নৌবাহিনীর ব্যবহারে থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাবমেরিন উপহার দেবার সিদ্ধান্তটি মায়ানমারে চীনের প্রভাব দ্রুত হ্রাস করবে। একইসাথে বাঙ্গালাদেশ ও মায়ানমারের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখবে। সাথে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান নৌ উপস্থিতির মোকাবিলাতেও ইতিবাচক ভূমিকে নেবে।

২০১৭ সালে, চীন একটি ২০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে বাংলাদেশের কাছে দুটি মিং-শ্রেণির সাবমেরিন বিক্রি করেছিল। এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে তার নৌসম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ, অস্ত্র বিষয়ে এবং ভবিষ্যত আপগ্রেডেশনের জন্য চীনের উপর নির্ভরশীল করে তুলেছে। যদিও এই সাবমেরিনটির ভবিষ্যত নিয়ে সমর বিশেষজ্ঞরা বারংবার প্রশ্ন তুলেছে।

সেই থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী চীনের কাছে থেকে একাধিক নীচু মানের নৌ জাহাজের ডেলিভারি নিয়েছে এবং আরও কয়েকটির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

চীনের উপরে বাঙ্গলাদেশীদের প্রতিরক্ষা প্রয়োজনে নির্ভরশীলতা বাড়ার এই বিষয়টি একটি সহজ ঘটনা থেকেই বোঝা বোঝা যায়। একটি চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাকে কক্সবাজারে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবমেরিন বেস তৈরির জন্য চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছে। চীনের উপর এই নির্ভরতা এমন পর্যায়ে গেছে যে, চীনা কর্মীরাই বাংলাদেশে নির্মিত যুদ্ধজাহাজের জন্য “নির্মাণের তদারকি এবং নকশা সরবরাহ করবে”।

সহজ কথায় বলতে গেলে, সরঞ্জাম ও অস্ত্রের জন্য চীনের উপর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নির্ভরতা ভারতের পূর্ব উপকূলে চীনা সংস্থাগুলিকে ঘাঁটি গেড়ে বসার সুযোগ করে দিয়েছে। ভারতীয় নৌ-ঘাঁটিগুলি এবং ভারতের পারমাণবিক সাবমেরিন নৌবহরের (আইএনএস বর্ষা নামে পরিচিত) সহ একটি নবনির্বাচিত বেস থেকেও খুব বেশি দূরে নয়, বিশাখাপত্তনমের কাছেই। এরকম সুবিধাজনক জলসীমায় চীনাদের উপস্থিতির সুযোগ তৈরি করেছে। এমতাবস্থায় মায়াণমারকে এই উচ্চ মানের সাবমেরিন দিয়ে ভারত নতুন সমীকরণের তৈরি করল উপমহাদেশীয় নৌশক্তির ক্ষেত্রে।