ভারতে জাল বিছিয়েছে ইসলামিক স্টেট! দেশের ৩ রাজ্যে অভিযান NIA’র

0
905

বঙ্গদেশ ডেস্ক: ভারতে অতিদ্রুত শিকড় বিস্তার করছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট। জম্মু-কাশ্মীর ও পশ্চিমবঙ্গ নিষিদ্ধ এই জেহাদি দলটির ‘ট্রানজিট রুট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে গোয়েন্দা মহলের কাছে। এই রকম পরিস্থিতিতে সোমবার দেশের ৩টি রাজ্যে অন্তত পাঁচটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, দিল্লি, কেরল ও কর্ণাটকের অন্তত পাঁচটি জায়গায় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযান শুরু করেছে এনআইএ। ইসলামিক স্টেট সংক্রান্ত একাধিক মামলায় তল্লাশি অভিযান চলছে জাফরাবাদ, কোচি ও বেঙ্গালুরুতে। সব মিলিয়ে মোট পাঁচটি জায়গায় হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এই অভিযানে এখনও পর্যন্ত পাঁচ সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ইয়াকুব নামের এক আইএস জঙ্গীও রয়েছে।

সূত্রের খবর, কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গী সংগঠনগুলির জায়গা দখল করতে চাইছে আইএস। বাংলাদেশ হয়ে পশ্চিমবঙ্গে জামাত-উল-মুজাহিদিনের হাত ধরে ঢুকে পড়েছে এই জঙ্গী সংগঠনটি। বিশ্লেষকদের পরিস্কার কথা, ইসলামিক স্টেট কেবলমাত্র একটি দল নয়। এটি একটি মতাদর্শে পরিণত হয়েছে।যার মূল উদ্দেশ্য গোটা বিশ্বে শরিয়ত আইন লাগু করে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করা। আর এর জন্য‌ই ভারতীয় মহাদেশে প্রস্তুতি শুরু করেছে সংগঠনটি।

অন্যদিকে, সাউথ ব্লকের উদ্বেগ বাড়িয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতে জেহাদের বিষ ছড়াতে কোমর বেঁধে তৈরি কুখ্যাত আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট -খোরাসন। ভারতীয় উপমহাদেশে এবার এই সংগঠনটির দায়িত্ব নিয়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী শাহিব-আল-মুহাজির। এমনটাই সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস (António Guterres)। গুতেরেস বলেছেন, ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভয়ানক নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে শাহিব মুহাজিরের। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সক্রিয় ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল তার। বর্তমানে আইএস-কে’র নেতা হয়ে ভারত, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার উপর নজর রাখছে।

ওই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে হাজার দুয়েক আইএস-কে জঙ্গি রয়েছে। সেখানে তাদের রীতিমতো প্রশিক্ষণ চলছে। যে কোনও সময় তারা ভারত-সহ বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশগুলিতে হামলা চালাতে পারে। জঙ্গী সংগঠনটির শক্তি নিয়ে মহাসচিবের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় জমি খুইয়ে এখন অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আইএস। তবে এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী এই সংগঠনটি। তাদের হালকা ভাবে নেওয়া একদমই উচিত হবে না। গত মে মাসে কাবুলের হাসপাতালে হামলার ঘটনা, আগস্টে জালালাবাদের কারাগারে হামলা, কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা ও নানগরহার প্রদেশে আফগান সাংবাদিককে খুনের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট -খোরাসন। ফলে সংগঠনটি যে আরও নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতে সক্ষম তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।