নির্মম ঘটনার স্বাক্ষী থাকলো জলপাইগুড়ি,পুড়িয়ে মারা হল নববধূকে

0
517

জলপাইগুড়ি: এক নির্মম অমানবিক ঘটনার স্বাক্ষী থাকলো জলপাইগুড়ি।পনের চাহিদা মেটাতে না পারায় নববধূকে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর পলাতক অভিযুক্তরা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম নম্রতা বালা(১৮)।

প্রথমে প্রেম। তারপরে রাজগঞ্জের কালীনগর এলাকার বাসিন্দা জয়দেব বালার সঙ্গে ঘর বাঁধতে বাড়ি ছেড়েছিল রাজগঞ্জ ব্লকেরই জহুরি তালমা এলাকার বাসিন্দা নম্রতা বিশ্বাস। পরে অবশ্য সামাজিক ভাবে বিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। আর সেই বিয়েতে ছেলের পরিবারের দাবি মতো সোনাদানা ও আসবাবপত্র সহ চার লক্ষ টাকার সামগ্রী দিয়েছিল কনের পরিবার।

কিন্তু ভালবাসা টেকেনি। বিয়ের কয়েকদিন পর থেকে প্রতিদিন নতুন নতুন পনের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে নম্রতার উপর অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। নম্রতার বাড়ির লোকজন জানান, বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য প্রতিদিন চাপ দেওয়া হত ওকে। আমরা টাকা না দিতে পারলেই চলত ওর উপর অত্যাচার। দিনের পর দিন খেতে দিত না। ওর বর জয়দেবকে ফের অন্য জায়গায় বিয়ে দেবে বলে তার উপর মানসিক চাপ তৈরি করত।

বৃহস্পতিবার দুপুর দু’টো নাগাদ মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন পান নম্রতার বাবা নরেন বিশ্বাস। জানানো হয় তাঁর মেয়ে গায়ে আগুন দিয়েছে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে নম্রতার বাড়ির লোকজন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যান। কিন্তু গিয়ে দেখতে পান সেখানে কেউ নেই। এরপর তারা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যান। সেখান থেকে মেয়েকে নিয়ে শিলিগুড়ির এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করান। সেখানেই মৃত্যু হয় নম্রতার। অন্ত্যেষ্টি শেষ করে শুক্রবার বিকেলে রাজগঞ্জ থানায় নম্রতার স্বামী সহ পরিবারের মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নরেনবাবু।

তিনি বলেন, ‘‘সাত মাস আগে আমি চার লক্ষ টাকার যৌতুক সামগ্রী দিয়ে মেয়েকে বিয়ে দেই। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই শুরু হয় আরও টাকা ও বিভিন্ন জিনিসের দাবিতে ওর উপরে নির্যাতন। গাড়ি সহ অন্যান্য নতুন নতুন দাবি নিয়ে আমার মেয়েকে ক্রমাগত চাপ দেয় ওরা। আমি না দিতে পারায় জামাই মদ খেয়ে এসে প্রায় প্রতিদিন মেয়েকে মারধর করত। সঙ্গে বাড়ির অন্যান্যরাও মারধর করত তাকে। আমার মেয়ে মারা যাওয়ার আগে আমাকে বলে গেছে তাঁকে হাত পা বেঁধে গায়ে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। সে চিৎকার করতে থাকলে বাড়ির সবাই মিলে বাইরে গিয়ে জানলা দিয়ে তাকে দেখতে থাকে। কিন্তু কেউ বাঁচাতে আসেনি।’’

অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছে পরিবারের লোকেরা।ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, পলাতকদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।