হিন্দু ধর্মে নিষ্ঠার কারণেই কি আনন্দবাজারের চক্ষুঃশূল পদ্মশ্রী কমলি সোরেন?

– দীপান্বিতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সংগ্রামের অপর নাম সমাজ সংস্কারক কমলি

এবছর পদ্মশ্রী পুরষ্কারের প্রাপকদের তালিকায় উজ্জ্বল বাংলা ও বাঙালি। কলকাতার কিংবদন্তি সাহিত্যিক নায়ারণ দেবনাথের পাশাপাশি উঠে বিভিন্ন জেলার অল্পশ্রুত কিন্তু স্ব-স্ব ক্ষেত্রে ছাপ রেখে যাওয়া মানুষের জয়জয়কার । সমাজসেবার জন্য মালদহের গাজোলে প্রত্যন্ত গ্রামের ‘গুরুমা’ কমলি সোরেনও তেমনই একজন মানুষ। পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য মনোনীত কমলির লড়াই মূলত আদিবাসী সমাজের ধর্মান্তকরনের বিরুদ্ধে‌‌। তবে তাঁর পদ্মশ্রী পাওয়ার সঙ্গে দক্ষিণপন্থী রাজনীতিরও যোগসাজশ পাচ্ছেন কেউ কেউ।

মালদহের গাজোলের কোটালহাটি গ্রামে মাত্র সাত কাঠা জমির ওপরে ‘গুরুমার’আশ্রম। বছর পঞ্চাশের আদিবাসী মহিলার বাবা মায়ের দেওয়া নাম কমলি সোরেন। তাঁর সূত্র ধরেই রাতারাতি যেন বিখ্যাত হয়ে উঠেছে প্রত্যন্ত কোটালহাটি গ্রাম। এখানেই প্রায় ২৫ বছর ধরে সমাজ সেবার কাজ করছেন কমলি। কার্যত ভিক্ষাবৃত্তি করে গড়ে তুলেছেন কল্যাণ আশ্রম। আদিবাসী সমাজে ডাইনি প্রথার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই বিদ্রোহী ভূমিকা পালন করেছেন কমলি। কিলোমিটার পর কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতার প্রচার চালিয়েছেন। কোটালহাটি ও আশেপাশের গ্রামে গুরুমার শিষ্য সংখ্যাও শতাধিক।

কমলি মনে করছেন, দুঃস্থ ,দরিদ্র, অসহায় আদিবাসীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভুল বুঝিয়ে ধর্মান্তরকরণ করা হয়েছে দীর্ঘকাল। এর বিরুদ্ধেই সাহস করে প্রচার চালান তিনি। তাঁর হাত ধরেই ভুল বুঝিয়ে ধর্মান্তরিতরা ফিরেছেন হিন্দু ধর্মে। অন্তত ২০ জনকে এভাবে হিন্দু ধর্মে ফিরিয়েছেন তিনি। আদিবাসীদের তো বটেই বহু ধর্মান্তরিত মুসলিমকেও হিন্দু ধর্মে ফেরানোর প্রয়াসে রত গুরুমা। এভাবেই কেটে গিয়েছে ২৫ বছরেরও বেশি সময়৷ তবে শুধু ধর্মান্তকরণই নয়, এই সময়ের মধ্যে তিনি আদিবাসীদের জড়িবুটির চিকিৎসাও করেছেন৷ এখনও করেন৷

এভাবেই চলছে তাঁর সমাজসেবা৷ তাঁর ভাষায়,

“যতদিন বাঁচব, ততদিন এভাবেই অন্য ধর্মে চলে যাওয়া আদিবাসীদের ধর্মান্তরণ করে সনাতনী ধর্মে ফিরিয়ে আনব৷ এভাবেই তাদের চিকিৎসা করব৷ শুধু মালদা নয়, ২৫ বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আমি এই কাজ করে যাচ্ছি৷ পদ্মশ্রী প্রাপকের তালিকায় আমার নাম ১০৯ নম্বরে রয়েছে৷ এই সম্মান পেয়ে আমি খুশি৷”
আর এখানেই তথাকথিত শিক্ষিত বুদ্ধীজীবীরা তুলেছেন নানান প্রশ্ন। নিজের পৃথক আশ্রম থাকলেও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ-এর জনজাতি সংগঠন বনবাসী কল্যাণ আশ্রমের সদস্য কমলি। তাহলে কি সংঘঘনিষ্ঠতারই পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে, প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। তবে গুরুমার ভক্তরা বলছেন উনি বনবাসী কল্যাণ আশ্রমের কর্মকাণ্ড সঙ্গে যুক্ত হলেও ওনার আশ্রম পৃথক। তার আশ্রম নিছকই পূজার্চনা ও ধর্ম চর্চা কেন্দ্র।

ধর্মান্তরিতদের হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনাই গুরুমার অপরাধ?

ধর্মান্তরিতদের হিন্দুদের হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা সঙ্গে পদ্মশ্রী প্রাপ্তি কমলি সোরেন অপরাধ? দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিকের সম্মানে ভূষিত হতে চলেছেন মালদহের গুরুমা।

গুরুমার প্রধান কাজ যারা চাপে পড়ে বা বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে তাদের পুনরায় হিন্দু ধর্মের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা। অনেক আদিবাসী খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছে, এমনকি অনেক হিন্দু মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছে। তাদের পুনরায় স্বধর্ম, হিন্দুধর্ম ফিরিয়ে আনাটাই গুরুমার প্রধান কাজ।

তাঁর জীবনের প্রথমার্ধে তিনি বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন ও মানুষের চাল-চলন ধর্মীয় আচার আচরণ লক্ষ্য করতেন। তিনি কারোর বাড়িতে তুলসী গাছ না থাকলে নিজে গিয়ে বসিয়ে দিতেন। তবে তিনি কঠিন সময়েও তাদের পাশে থেকেছেন। তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

২০২০ সালে তৃণমূল সরকারের কিছু সঙ্গপাঙ্গ একটি বিতর্কে তৈরি করে কমলি দেবীকে নিয়ে। তিনি ঐ সময় হিন্দু থেকে কিছু খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত আদিবাসী মেয়েদের পুনরায় হিন্দুধর্মে ফিরিযে আনার জন্য গণবিবাহের আয়োজন করেছিলেন। আর সেইজন্য ওনাকে বিতর্ক সৃষ্টি করেন বর্তমান শাসক দল।

সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয়, এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেও শুধু চুপ করে থাকেনি তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী ওনার এই কাজকে বিজেপি নোংরা রাজনীতি বলে কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি,মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য ছিল ‘‘তিনি মানুষের আবেগ নিয়ে খেলছে। মালদহের আদিবাসী মেয়েদের জোর করে বিয়ে দিয়ে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। আমরা হয়তো গরীব হতে পারি কিন্তু আমাদের নিজের আত্মসম্মানবোধ রয়েছে। তাই এবার থেকে রাজ্য সরকার নিজেই গণবিবাহের আয়োজন করবে।’’

কলকাতাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবীবর্গের মুখপত্র আনন্দবাজারের নোংরামি

তিনি যখন পদ্মশ্রী পুরষ্কার ভূষিত হয়েছেন, ঠিক তখন তথাকথিত বুদ্ধীজীবী মিডিয়া আবার মাঠে নেমে পড়েছে নোংরামি করার জন্য। কলার তোলা তথাকথিত বাঙালি ভদ্র লোকেদের মুখপত্র আনন্দবাজারের পদ্মশ্রী গুরুমা কমলি সোরেনকে নিয়ে লিখিত প্রতিবেদন বিশেষ লক্ষ্যণীয়‌।
প্রতিবেদনে লেখা রয়েছে—

” মালদহের মানুষ তাঁকে চেনেন ‘গুরুমা’ হিসেবে। সরেন পরিবারের সেই মেয়েই এ বার ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত। সমাজসেবার জন্য তাঁকে সম্মানিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিকের স্বীকৃতি গ্রহণ করবেন কমলি সরেন। সে খবর চাউর হতেই রাতারাতি গোটা মালদহ জুড়ে মুখে মুখে ফিরছে তাঁর নাম। জেলায় এমন কৃতিত্ব আর কারও নেই যে! তবে ঠিক কী কারণে তিনি পদ্মশ্রী পাচ্ছেন তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না। তাঁর পদ্মশ্রী পাওয়ার সঙ্গে কেউ কেউ আবার ‘সাম্প্রদায়িক’ যোগও দেখছেন।

…..গাজলের ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কোদালহাটি এলাকায় রাজেনবাবার আশ্রমই কমলির ধাম। ছোটবেলায় অসুখবিসুখ লেগেই থাকত। সে সবের ঝক্কি সামলাতে না পেরে তাঁকে আশ্রমে দিয়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা। সেখানেই বড় হওয়া কমলির। পড়াশোনা বেশি দূর না এগোলেও, আশ্রমিক পরিবেশে ছোট বয়সেই ধর্মের প্রতি আগ্রহ বাড়ে তাঁর। ধর্মচিন্তা, ধর্মকথাই ধ্যানজ্ঞান হয়ে উঠতে থাকে। আশ্রমেই দীক্ষা হয়। আর তখন থেকে হিন্দু ধর্মের ‘মহত্ব’ মানুষের মধ্যে সঞ্চার করাই তাঁর লক্ষ্য হয়ে ওঠে। বয়স পঞ্চাশ পেরিয়ে গিয়েছে এখন। ধর্ম প্রচারই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। সে কাজ করতে গিয়ে বিতর্কেও জড়িয়েছেন।

…..খ্রিস্টধর্ম গ্রহণকারী আদিবাসী মানুষদের হিন্দুধর্মে ‘ফিরিয়ে আনা’ই প্রধান কাজ তাঁর। ধর্মান্তরিত মুসলিমদেরও ‘মূল ধর্মে’ ফিরিয়ে আনার কাজ করেন কমলি। স্থানীয়দের দাবি, প্রথম জীবনে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে শুধু মানুষকে লক্ষ করতেন তিনি। তাঁদের ঘর-বাড়ি, জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখতেন। কারও বাড়িতে তুলসি গাছ না থাকলে, নিজে গাছ নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিতেন। তুলসীদেবীর উপাখ্যান শোনাতেন সকলকে। ধর্মত্যাগী বা ভিন‌্‌ধর্মে দীক্ষিত হতে যাওয়া মানুষকে বুঝিয়েসুঝিয়ে হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনতেন। বিপদে আপদে তাঁদের সহায়ও হতেন। অসুস্থদের আশ্রমে নিয়ে এসে সেবাও করতেন।

…..কমলি নিজেও বলছেন সে কথা। কী কাজ করেন প্রশ্ন শুনে পদ্মশ্রী প্রাপক বললেন, “যে আদিবাসীরা অন্য ধর্মে চলে যায়, খ্রিস্টান হয়ে যায়, মুসলমান হয়ে যায়, তাদের আমি হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।” কথাচ্ছলে উদাহরণও দিলেন। দৌলতপুরের এক আদিবাসী মেয়ের বিয়ে হয়েছিল মুসলিম পরিবারে। “তাঁকে ফিরিয়ে আনলাম। আবার হিন্দুর সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল”, কমলি শোনালেন তাঁর কর্ম-সাফল্যের কাহিনীও।

প্রতিবেদনের ধরণটি কিন্তু বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। তথাকথিত নিম্ন বর্ণের একজন নারীর কৃতিত্বে উৎফুল্ল হওয়ার কোন ইঙ্গিত কি খুঁজে পেলেন তথাকথিত প্রগতিশীল পত্রিকার এই প্রতিবেদনে? দলিতের উপর ব্রাহ্মণ্যবাদী ‘বহিরাগত পার্টি’ র অত্যাচার নিয়ে গলার শিরা ফুলিয়ে চেঁচানো বুদ্ধিজীবী মহল এ বেলায় কিন্তু চোখে কালো কাপড় বেঁধে বসে থাকবে। তারা কমলি সোরেনকে দু হাত তুলে ধন্য ধন্য করতে পারবেন না। কারণ, ইনি তাদের চোখে ‘ভুল’ দলিত। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর জনজাতি সংগঠন ‘বনবাসী কল্যাণ আশ্রম’ এর সক্রিয় কর্মী কমলি সোরেন। হিন্দু ধর্মের একজন গর্বিত ধারক ও বাহক তিনি।

যতবার সমাজে বিভেদ, অত্যাচার, ধর্মান্তকরণ এর মত ব্যাধিতে জর্জরিত হবে, ততবার সঞ্জীবনী সুধা হাতে এগিয়ে আসবেন কমলি সোরেনের মতো মানুষরা। তারা লড়বেন তথাকথিত নিম্নবর্ণকে ফাঁদে ফেলে কার্যসিদ্ধি করা ধর্মান্তকরণ চক্রের বিরুদ্ধে। তারা লড়বেন সেই খলজিদের বিরুদ্ধেও–যারা ভরা সভায় হুঙ্কার দেয়,

‘আদিবাসীরা হিন্দু নয়। মতুয়ারা হিন্দু নয়। আলাদা ধর্ম। আমরা একে অন্যের হাত শক্ত করে ধরবো।”

“জাতিভেদকে যদি হিন্দুসমাজের অনিষ্টকর বলিয়া জানি তবে তাহাকেই আমি অহিন্দু বলিয়া জানিব এবং হিন্দুসমাজের মাঝখানে থাকিয়াই তাহার সঙ্গে লড়াই করিব। ছেলেমেয়ের অসবৰ্ণবিবাহ দিতে আমি কুষ্ঠিত হইব না এবং তাহাকেই আমি নিজে হইতে অহিন্দুবিবাহ বলিব না- কারণ বস্তুত আমার মতানুসারে তাঁহাই হিন্দুবিবাহনীতির শ্রেষ্ঠ আদর্শ।”

এ শুধু নোবেলজয়ী গুরুদেবের কথা নয়। পদ্মশ্রীপ্রাপক গুরুমারও কথা। এ ভারতকে বোঝা সহজ নয়।

এরপরেও যারা ভাবেন, দলিত নিয়ে পাতার পর পাতা থিসিস লেখা ইন্টেলেকচুয়ালরা আদপেই দলিত দের নিয়ে ভাবিত, তাদের চার ক্ষুরে পেন্নাম জানাই।

 

আনন্দবাজার কমলি সোরেনকে করে ঘৃণা, টেরেসাকে করে পূজা

ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু পুস্তকখানি লিখেছিলেন আনন্দবাজারের প্রতিষ্ঠাতা প্রফুল্ল কুমার সরকার। সে পুস্তক আনন্দবাজার আর প্রকাশ করে না।  আনন্দবাজারের সাংবাদিক এসি রুমে বসে আয়েস করতে করতে বোধয় ভুলে গেছেন কিংবা খোঁজ খবর নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি মাননীয়া পদ্মশ্রী কমলি সোরেন ভিক্ষাবৃত্তি করে গড়ে তুলেছেন কল্যাণ আশ্রম।

আদিবাসী সমাজে ডাইনি প্রথার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই বিদ্রোহী কমলি। কিলোমিটার পর কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতার প্রচার চালিয়েছেন। গাজোলের মানুষ বিশ্বাস করেন লড়াইয়ের আরেক নাম কমলি সোরেন। গরিব আদিবাসীদের খাবার জোগান দেওয়া আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ার কাণ্ডারী কমলি সোরেন আসলে তথাকথিত শহুরে শিক্ষিতদের আঁতে ঘা, তাই না?

মিডিয়া হাউসের বক্তব্য, তিনি মূলত যে সকল হিন্দু ইতি মধ্যে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে তাদের কে তিনি সচেতন করে পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরিযে আনতেন। আসলে তারা এই বিষয়টিকে নিয়ে ‘উপহাস’ করেছে। এই বাজারে মিডিয়াগুলো কিন্তু কোন‌ও প্রশ্ন তোলে না যখন একটি হিন্দু অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। যখন কেউ তার পূর্বের ধর্মে অথ্যাৎ হিন্দু ধর্মে ফিরে আসে তখনই তাকে নিয়ে নোংরা আক্রমণ শুরু হয়ে যায়।
মাদার টেরেসার গুণগানে মুগ্ধ আনন্দবাজার। এই টেরেসার মানবতা ছিল হাস্যকর, বলেছেন বিখ্যাত বুদ্ধিজীবী ডঃ অরূপ চ্যাটার্জী এবং ক্রিষ্টোফার হিচেনস। ধর্মান্ধ টেরেসা শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনকারীদের রক্ষা করেছিলেন। ভোপাল বিপর্যয়ের পর তাঁর কথাগুলি শুনলে মনে হয়, এর চেয়ে  অমানবিক আর কিছু হতে পারে কি? টেরেসার লক্ষ্যই ছিল যত বেশী সংখ্যক মানুষকে খ্রীষ্টান করা। তাহলে কি আনন্দবাজার সাদা চামড়া আর খ্রীষ্টানদের ধর্মান্ধতাকে সমর্থন করে আর দরিদ্র নিপীড়িত মানুষের স্বাজাত্যবোধকে উপহাস করে?

শেষ কথা

বস্তুতঃ হিন্দুরা যত দিন এই বিষয়ে সচেতন না হবে ততদিন এই দালালী মিডিয়া হিন্দুবিদ্বেষী এমন ঘৃণার বিষ ছড়াতে থাকবে। তাই আপনি শিক্ষিত হয়ে যখন সমাজের কল্যাণে বেকার আস্ফালন ছাড়া তেমন কোনও অবদান রাখতে পারছেন না, তখন এই নারী দিনরাত যুদ্ধ করে চলেছে। ভুলে যাবেন না ভারত থেকে হিন্দুরা চিরতরে বিলীন হয়ে গেলে ভারত আর ভারত থাকবে না। উদাহরণ- আফগানিস্তান,পাকিস্তান,বাংলাদেশ। শুধু মনে রাখবেন হিন্দুর শত্রু আর কেউ না, হিন্দু নিজেই।  আনন্দবাজার নিজেরাই লিখছে, ঐ সমস্ত মানুষ পূর্বে হিন্দু ছিল আবার ওরাই বলছে জোর করে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তিত করছে।
গাজোলের মানুষ বিশ্বাস করেন, লড়াইয়ের মুখ কমলি সোরেন। গরিব আদিবাসীদের খাবার জোগান দেওয়া আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ার কাণ্ডারী কমলি। গুরুমার পদ্মশ্রীসম্মান প্রাপ্তিতে খুশির হাওয়া আদিবাসী প্রধান গ্রামে।