জেভিয়ার্সের অধ্যাপিকা বরখাস্ত থেকে শুরু করে সলমন রুশদি নিয়ে শীতঘুমে কমিউনিস্ট বুদ্ধিজীবী মহল

0
626

বঙ্গদেশ ডেস্ক:গত ১২ অগস্ট নিউ ইয়র্কের এক মঞ্চে রুশদিকে এই আক্রমণ ও সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা বরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ‘প্রতিবাদী’ কলকাতা। অথচ রবার্ট ম্যকনামারার কলকাতা সফর থেকে শুরু করে ইরাকে আমেরিকার আক্রমণ— বাঙ্গালার প্রতিবাদ স্থানীয় পরিসর ছেড়ে যুগে যুগেই ঢুকে পড়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে।রুশদির বিষয়ে কথা বলতে চাননি নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন। তিনি তাঁর নাটকের মঞ্চায়ন নিয়ে ব্যস্ত। তবে কি বিশিষ্ট কমিউনিস্ট বুদ্ধিজীবীরা একটু বেশিই চুপ?

সিপিএমের মুখপত্রেও ছয়ের পাতায় একেবারে নীচে জায়গা পেয়েছে রুশদির খবর। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই বিষয়ে বলেছেন, এই ধরনের খবর প্রথম পাতার নয়। সলমন রুশদি গত কয়েক বছরে খবরের শিরোনামে ছিলেন না আবার উনি বিতর্কেও ছিলেন না। ঘটনাচক্রে সেলিমের দল যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনই কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তাঁর বই ‘লজ্জা’ নিষিদ্ধ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। সেলিমের বক্তব্য, রুশদির মতোই এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছেন তসলিমাও।

বিকিনি পরে ইনস্টাগ্রামে ছবি দেওয়ার অপরাধে নাকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে সম্প্রতি এমনই অভিযোগ এনেছেন, কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন অধ্যাপিকা।
আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চিঠি ভাইরাল হয়েছে। ওই চিঠিটি লিখেছেন বি কে মুখোপাধ্যায় নামের এক ব্যক্তি। চিঠির বয়ানে তিনি বলেছেন, আমার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকার বিকিনি পরা ছবি দেখে। ছবিগুলি অত্যন্ত কুরুচিকর, অশ্লীল এবং প্রায় নগ্ন। ছবিগুলিতে ওই শিক্ষিকা যৌন উত্তেজনামূলক পোশাক পরে রয়েছেন। শিক্ষিকার অন্তর্বাস পরা ছবি ছেলে দেখছে, বাবা হিসেবে আমার কাছে ভীষণ লজ্জার এই দৃশ্য। একজন ১৮ বছরের ছেলে তার অধ্যাপিকার স্বল্পাবাসের ছবি দেখছে, তাও আবার প্রকাশ্যে পাবলিক প্ল্যাটফর্মে, এটি অত্যন্ত নিকৃষ্টমাণ ও লজ্জাজনক ঘটনা।

ওই অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হতে পারে। কারণ তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল প্রাইভেট মোডে আছে, কোনও ছবিই বাইরের কারও পক্ষে দেখা অসম্ভব নয়। যদিও সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন।

অপরদিকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিতর্কিত ঔপন্যাসিক সলমান রুশদিকে গত শুক্রবার নিউইয়র্কে একটি বক্তৃতা চলাকালীন আক্রমণ করা হয়েছে। মঞ্চে ভাষণ দিতে ওঠার সময় আচমকা ছুরি দিয়ে আক্রমণ করা হয় তাঁকে। দুষ্কৃতীর এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বুকারজয়ী লেখক সলমন রুশদি। এই ঘটনার পরপরই লেখককে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় এবং কয়েক ঘন্টার অস্ত্রোপচারের পরে রুশদিকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। তার বইয়ের এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি জানিয়েছেন এই ঘটনায় লেখক একটি চোখ হারাতে পারেন। নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশের সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিউ ইয়র্ক স্টেট পুলিশ জানিয়েছেন সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম, হাদি মাতার। তাঁর বয়স ২৪ বছর। পুলিশ আরও জানিয়েছে হাদি নিউ জার্সির ফেয়ারভিউয়ের বাসিন্দা।

চিত্রশিল্পী তথা সম্প্রীতিবাদী বুদ্ধিজীবী শুভাপ্রসন্ন মনে করেন, সবকিছুতেই প্রতিবাদ করা যায় না। সাহিত্যপ্রেমী সংবেদনশীল জনগণ প্রশ্ন তুলেছেন, তবে আপনারা তবে চুপ কেন? শুভাপ্রসন্ন উত্তরে বলেছেন, আমরা চুপ নই। কথায় কথায় রাস্তায় নামলে আমাদের ধার কমে যাবে।